দীপশুভ্র সান্যাল, জলপাইগুড়ি
চা বাগানের শ্রমিক রুবিনা মুন্ডা। সিপিআই(এম)’র পঞ্চায়েত সদস্যও। করোলা ভ্যালি চা বাগানের এই শ্রমিক ও তাঁর পরিবারকে হুমকি দিল তৃণমূল। ঘরে ঢুকে দেওয়া হয়েছে টাকার বান্ডিল।
রবিবার রাতের এই ঘটনায় জলপাইগুড়ির কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন সিপিআই(এম) প্রার্থী দেবরাজ বর্মন। জানানো হয়েছে নির্বাচন কমিশনেও। রুবিনার বাড়ি থেকে পুলিশ পাঁচশো টাকার নোটের বান্ডিল উদ্ধার করেছে। সোমবার সকালেও রুবিনা ফিরতে পারেননি ঘরে।
রুবিনার বাবা-মাকে তৃণমূলের বাহিনী অকথ্য ভাষায় গালি- হুমকি দেয়। তবে প্রলোভন বা হুমিকতে টলানো যায়নি রুবিনা এবং তাঁর পরিবারকে। বর্মন জানান, সিপিআই(এম) ছেড়ে তৃণমূলের ঝান্ডা ধরতে হুমকি দেওয়া হয়েছে।
রবিবার তৃণমূলের রাজা মন্ডল, কৃষ্ণ দাস, প্রধান হেমব্রম সহ প্রায় জনা কুড়ি রুবিনা মুন্ডার বাড়িতে চড়াও হয়। তাঁর বাবা-মাকে অকথ্য ভাষায় হুমকি দেয়। তারপর রুবিনার বাবা মোহন মুন্ডার ঘরে ঢুকে পড়ে। বিছানায় পাঁচশো টাকার নোটের বান্ডিল ফেলে দেয়। ১ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তৃণমূলের ঝাণ্ডা ধরার নির্দেশ দেয়। কিন্তু পরিবার প্রতিবাদ করে।
পুরো ঘটনায় থানায় এফআইআর দায়ের করেন জলপাইগুড়ির সিপিআই(এম) প্রার্থী দেবরাজ বর্মন। থানায় তাঁর সঙ্গে যান সিপিআই(এম) নেতা পীযূষ মিশ্র, ময়ূখ বিশ্বাস, প্রদীপ কুমারও।
জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন করলা ভ্যালি চা বাগানের চা শ্রমিক রুবিনা মুন্ডা। তিনি ওই চা বাগান থেকে সিপিআই(এম)’র নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্য। এই অরবিন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতে ভোটের সময়ও রুবিনাকে তৃণমূলে যোগদান করাতে ভয় দেখানো হয়। কিন্তু তিনি চাপের মুখে নতি স্বীকার করেন নি। রবিবারের ঘটনার পর রুবিনা বাড়িতে নেই। অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন।
দেবরাজ বর্মন বলেন,‘‘ ধমক চমকে কাজ হয়নি। এখন ভোটের মুখে একজন বামপন্থী আদিবাসী মহিলা জন প্রতিনিধিকে টাকার প্রলোভন দিয়ে কিনে নেওয়ার চেষ্টা করছে তৃণমূল নেতারা। তাঁর বাড়িতে গিয়ে টাকার বান্ডিল দিয়ে এসেছে। পুলিশের পাশাপশি নির্বাচন কমিশনেও অভিযোগ জানানো হয়েছে। পুলিশ অভিযোগ নিয়েছে।
এসএফআই’র সাধারণ সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাস বলেন, ‘‘তৃণমূলের হুমকি ও প্রলোভনের কাছে আমাদের এই আদিবাসী মহিলা নেত্রী নিজের মেরুদণ্ড বিক্রি করে দেননি। উলটে প্রতিবাদ করেছেন। আমরা তাঁর লড়াইকে কুর্নিশ জানাই।’’
বিষয়টিকে সাজানো ঘটনা বলে উড়িয়ে দিতে চাইছে তৃণমূল। দলের নেতা তপন ব্যানার্জির বক্তব্য, তৃণমূলকে বদনাম করার চেষ্টা হচ্ছে। বিজেপি’র আবার বক্তব্য, প্রচারের জন্য সিপিআই(এম) এবং তৃণমূল মিলে এসব ছা৩চ্ছে।
সিপিআই(এম) নেতৃবৃন্দ বলেছেন, তৃণমূল এবং বিজেপি, দু’দলই ভয় দেখিয়ে টাকা দিয়ে অন্য দল ভাঙানোর চেষ্টা করে। সেই চেষ্টা বিফলে গিয়েছে। এখন বিষয়টিকে হালকা করতে চাইছে দু’দলই।
Comments :0