BARANAGAR MUNICIPALITY CORRUPTION

বরানগরের পৌর নিয়োগে দুর্নীতির খতিয়ান দিয়ে সরব প্রতিবাদী

জেলা

BARANAGAR MUNICIPALITY CORRUPTION প্রতিবাদী পৃথা ঘোষ।

বরানগরে পুর নিয়োগে ছত্রে ছত্রে রয়েছে দুর্নীতি, এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ এক প্রতিবাদীর। 

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত করতে গিয়ে অয়ন শীলের হদিস পান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী আধিকারিকেরা। আর এর পরেই উঠে আসে রাজ্যে একাধিক পৌরসভায় নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির সব অভিযোগ। বাদ পড়েনি শহর কলকাতা লাগোয়া বরানগর পৌরসভা। 

এই পৌরসভার নিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য উঠে আসে অয়ন শীলকে জেরা করে। এরপরেই আদালতে নির্দেশে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা রাজ্যের একাধিক পৌরসভায় অভিযান চালায়। এবার একেবারে তথ্য হাতে নিয়ে প্রতিবাদী পৃথা ঘোষ বরানগর পৌরসভার দুর্নীতি নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন। 

তাঁর অভিযোগ, বরানগরে ১৭৫টি পদের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলেও নিয়োগ হয়েছে ২৮০ জনের। টাকা নিয়ে চাকরি বিক্রি হয়েছে। একাধিক পৌর প্রতিনিধির আত্মীয় পৌরসভায় কাজ করছেন যাঁদের নিয়োগ যোগ্যতার ভিত্তিতে হয়নি। এমনকি নিয়োগ সংক্রান্ত বোর্ডে থাকা কাউন্সিলরের আত্মীয় পর্যন্ত নিয়োগ পেয়েছেন। 

স্বজন পোষণের খতিয়ান দিয়ে তিনি জানাচ্ছেন, কামারহাটি পৌরসভার চেয়ারম্যানের ভাইপো, উত্তর দমদম পৌরসভার চেয়ারম্যানের মেয়ে, তৃণমূলের ট্রেড ইউনিয়নের এক রাজ্যস্তরের নেতার ছেলেকে দেওয়া হয়েছে চাকরি। আরও একাধিক কাউন্সিলরের নাম এবং তাঁদের পরিবারের যে যে সদস্য চাকরি পেয়েছেন, পৃথা ঘোষ নাম জানিয়েছেন তাঁদেরও। 

পৃথা ঘোষের অভিযোগ, একই ব্যক্তি একই সময় দু’টি আলাদা পদের জন্য পরীক্ষা দিয়েছেন। দু’টি পদের জন্যই তাঁর কাছে ইন্টারভিউ দেওয়ার জন্য চিঠি আসে। কারো ট্যাবুলেশনে এক নম্বর, আবার ওএমআর শিটে কম নম্বর দেখা যাচ্ছে। 

একাধিক অভিযোগ জানিয়ে পৃথা বলছেন, চার মাস চাকরি করে একবারই ৫ হাজার টাকা অগ্রিম পেয়েছেন কেউ কেউ। তাঁদের বেতন হয়নি। নিয়োগ হয়েছে মজদুর পদে, কিন্তু কাজ করানো হচ্ছে অফিসে। মোট নিযুক্তির মধ্যে বরানগরের বাসিন্দা মাত্র ৬৫ জন। বাকি সব মালদা, মুর্শিদাবাদ, পূর্ব মেদিনিপুর, হুগলী ও হাওড়ার বাসিন্দা। এমন হওয়ার কথা নয়। 

এই প্রতিবাদী জানাচ্ছেন যে তাঁর পুত্রেরও চাকরি হয়েছিল পৌরসভায়। কিন্তু এই সমস্ত দুর্নীতি দেখে তিনি ছেলেকে চাকরি করতে দেননি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে একাধিক তথ্য তিনি তুলে ধরেন সংবাদমাধ্যমের সামনে। তাঁর দাবি, এক দল প্রতারিত পরীক্ষার্থী তাঁর বাবা এবং এলাকার কংগ্রেস নেতা তরুণ ঘোষের দ্বারস্থ হন। বাবার অবর্তমানে সেই সমস্ত পরীক্ষার্থীদের ন্যায়বিচারের জন্য তিনি লড়ছেন। 

পৃথার অভিযোগে যেমন বরানগর পৌরসভার প্রধান অপর্ণা মৌলিকের নাম উঠে এসেছে, তেমনি পৌরসভার একাধিক কাউন্সিলরেরও নাম উঠে এসেছে। তাঁর অভিযোগ, পৌরপ্রধানের বদান্যতায় ঠিক লাইসেন্স না থাকা সত্ত্বেও গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছেন পৌর প্রধানের গাড়ি চালক। 

কিন্তু এত অভিযোগের পরও কার্যত মুখে কুলুপ এঁটেছেন বরানগর পৌরসভার পদাধিকারীরা। যদিও বরানগরের বিধায়ক তাপস রায়ের বক্তব্য, তদন্তে সব সামনে আসবে। আদালতে বিচার হবে। 

সিপিআই(এম) নেতৃবৃন্দের বক্তব্য, তৃণমূল মানেই দুর্নীতি। বরানগরে সর্বত্র দুর্নীতি হয়েছে। 

Comments :0

Login to leave a comment