MD SALIM RANIGANJ

শ্রমজীবীর সব অংশে সেতু গড়ে কমিউনিস্টরা, স্মরণসভায় সেলিম

রাজ্য জেলা

শুক্রবার রানিগঞ্জে প্রবীণ কমিউনিস্ট নেতা কমরেড বিবেক চৌধুরীর স্মরণসভায় বলছেন মহম্মদ সেলিম।

মলয়কান্তি মণ্ডল, রানিগঞ্জ 
 

গোটা দেশে আর এসএস’র নেতৃত্বে বিজেপি নেতা শিবরাজ চৌহান নিয়োগ দুর্নীতিতে মধ্যপ্রদেশে 'ব্যাপম' কেলেঙ্কারি করেছিল। পশ্চিমবঙ্গে মমতা সরকার এখন দুর্নীতিকে 'ব্যাপক' করে তুলেছে। খনি, জল,জমি, জঙ্গল, পাহাড় লুট করার লক্ষ্য নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে 'ফ্রানচাইজির রাজনীতি' প্রয়োগ হচ্ছে। ৭৫-২৫ পার্সেণ্টে ভাগ হচ্ছে।  লুটতন্ত্র কায়েম করতেই ‘ফ্রানচাইজি সিস্টেম’ কায়েম হয়েছে। সারা দেশ জুড়ে মোদির লুট, দিদির লুট সমানতালেই চলছে। 
শুক্রবার রানিগঞ্জে প্রবীণ কমিউনিস্ট নেতা কমরেড বিবেক চৌধুরীর স্মরণসভায় একথা বলেন সিপিআই(এম) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
রানিগঞ্জের গীর্জাপাড়া বার্নস রিফ্রাক্ট্রি অ্যাণ্ড সিরামিক ইউনিয়ন অফিস প্রাঙ্গণে সিপিআই(এম) পশ্চিম বর্ধমান জেলা কমিটি স্মরণসভার আয়োজন করে। কমরেড  বিবেক চৌধুরীর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে স্মরণ অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। শোকপ্রস্তাব পাঠ করেন পার্টির রাজ্য কমিটির সদস্য পার্থ মুখার্জি। দেশের কয়লা শ্রমিক সংগঠনের প্রথম সারির নেতা বিবেক চৌধুরী গত ৩১ অক্টোবর রানিগঞ্জে  প্রয়াত হন। তিনি ১৯৮৩ সালে রানিগঞ্জে এসে শ্রমিক সংগঠনের কাজ শুরু করেন। তাঁর জীবনযাপন ও আচার আচরণে তিনি কয়লাঞ্চলের মানুষের আপনজন হয়ে উঠেছিলেন। স্মরণসভায় ছিল উপচে পড়া ভিড়।
সেলিম বলেন, ‘‘কমিউনিস্টরা অনেককে নিয়ে সমাজভাবনার কাজ করেন। সমাজকে বদলের জন্য আজীবন লড়াই করেন। দক্ষিণপন্থার উত্থানের পর রীতি-নীতি, আচার-আচরণ, ভাষা, সংস্কৃতিকে বিভক্ত করা হচ্ছে। পরিকল্পিতভাবে ন্যায়বোধ, মূল্যবোধ নষ্ট করা হচ্ছে। জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে কে বাঙালি কে বিহারী? কে হিন্দু, কে মুসলমান? আরএসএস’র অঙ্গুলিহেলনে দেশের সংবিধান, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো, সংস্কৃতি আজ বিপন্ন। বিচ্ছিন্নতার প্রবাহিত স্রোতের বিরুদ্ধে কমিউনিস্টদের কাজ হল সমস্ত অংশের মানুষের মধ্যে সেতু তৈরি করা। সেজন্য আমরা বলি, দুনিয়ার মজদুর এক হও। সেকাজে কমরেড বিবেক চৌধুরী একজন যোগ্য সৈনিক ছিলেন।’’ 
তিনি বলেন, ‘‘মোদি বলেছিল, বছরে দু'কোটি বেকারের চাকরি দেবে। এখন কলকারখানা, রেল, খনি কর্পোরেটদের হাতে বিক্রি করে দিচ্ছে। নোটবন্দির যত টাকা ছিল তার চেয়ে বেশি টাকা এখন বাজারে রয়েছে। সাধারণ মানুষ সারা জীবন কাটিয়ে দেয় একটা ঘর বানানোর জন্য। এখন বিজেপি -তৃণমূল টাকা রাখার জন্য ঘর বানাচ্ছে।’’ 
সেলিম বলেন, ‘‘বিজেপি ভোট এলেই মিথ্যাচার করে। এখন প্রচার করছে দেশ নাকি স্বর্গরাজ্য হয়েছে। তাই গীতাপাঠের আসর বসাচ্ছে। সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই জরুরি ছিল বলেই স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন, গীতাপাঠের চেয়ে ফুটবল খেলা ভালো। তিনি বলেন, ধর্ম রাজনীতির সাথে যুক্ত হলে তা ধর্ম থাকে না। সেলিম বলেন, আমাদের দেশের মানুষের সামাজিক সুরক্ষা বিপন্ন। দেশের শাসকদল সামাজিক সুরক্ষার বদলে প্রচার করে জাতীয় সুরক্ষার। কিন্তু মণিপুরে ঘটনায় ওরা বলছে না জাতীয় সুরক্ষা বিপন্ন। ঘৃণার চাষ করছে। দেশজুড়ে প্রতিবাদও হচ্ছে। 
এদিন স্মৃতিচারণা করে বক্তব্য রাখেন পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আভাস রায় চৌধুরী, রাজ্য কমিটির সদস্য অচিন্ত্য মল্লিক, পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ চ্যাটার্জি, জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বংশগোপাল চৌধুরী। সভা পরিচালনা করেন পার্থ মুখার্জি। উপস্থিত ছিলেন পার্টির রাজ্য কমিটির সদস্য দেবাশিস চক্রবর্তী ও জাহানারা খান।  স্মরণসভায় গণশক্তি তহবিলের জন্য পাঁচ হাজার টাকার চেক মহম্মদ সেলিমের হাতে তুলে দেন কিংশুক মুখার্জি।

Comments :0

Login to leave a comment