PROBANDHA — TAPAN KUMAR BAIRAGYA | NETAJI O TINE SHAHID | MUKTADHARA — 2025 JANUARY 22

প্রবন্ধ — তপন কুমার বৈরাগ্য | সুভাষচন্দ্র বসুর চোখে তিন শহীদ — মুক্তধারা | ২০২৫ জানুয়ারি ২২

সাহিত্যের পাতা

PROBANDHA  TAPAN KUMAR BAIRAGYA  NETAJI  O TINE SHAHID  MUKTADHARA  2025 JANUARY 22

প্রবন্ধ | মুক্তধারা

সুভাষচন্দ্র বসুর চোখে তিন শহীদ
তপন কার বৈরাগ্য

সালটা ১৯০৮, সুভাষচন্দ্র বসুর বয়েস তখন মাত্র এগারো
বছর ।   ২রা মে ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে, শুনলেন প্রফুল্ল চাকী
ইংরেজদের হাতে ধরা পড়ার সাথে সাথে নিজের মাথায়
নিজের পিস্তলের গুলি চালিয়ে শহীদ হয়েছেন। এইটুকু
ছেলে প্রফুল্ল চাকীর আত্মাহূতি তাঁর জীবনে গভীরভাবে
প্রভাব বিস্তার করলো। এর দুমাস পরে হলো ক্ষুদিরামের 
ফাঁসি। প্রথম ফাঁসির মঞ্চে উৎসর্গীকৃত প্রাণ। অগ্নিযুগের
বিপ্লবীদের মৃত্যু তিনি যেন মন থেকে কিছুতেই মেনে নিতে
পারছিলেন না।দেশের এইসব বীর সন্তানদের জন্য শ্রদ্ধায়
তাঁর মাথা নত হয়ে গিয়েছিল। কানাইলাল দত্ত রাজসাক্ষী 
নরেন গোঁসাইকে সত্যেন্দ্রনাথ বসুর সহযোগিতায় ৩১ আগস্ট
১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে হত্যা  করেন। তার ফলস্বরূপ ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দের
১০ই নভেম্বর তাঁর ফাঁসি হয়।
আলিপুর বোমা মামলায় রাজসাক্ষী নরেন গোঁসাইকেও গুলি করে হত্যা করেছিলেন সত্যেন্দ্র নাথ বসু।এইজন্য বিপ্লবী সত্যেন্দ্রনাথ বসুর ২২শে নভেম্বর ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে প্রেসিডেন্সি জেলে  ফাঁসি হয়। এই চারজন বিপ্লবী সুভাষ বসুর হৃদয় জুড়ে ছিলেন।
ব্রিটিশ সরকার ঘোষণা করলেন কোনো বিপ্লবীর ছবি ঘরে
টাঙানো যাবে না বা দোকানে বিক্রি করা যাবে না।যদি কেউ রাখেন
বা বিক্রি করেন তবে তাঁকে শাস্তি দেওয়া হবে। সুভাষ বসু অনেক
কষ্টে ছবিগুলো সংগ্রহ করলেন এবং নিজের পড়ার ঘরে
টাঙিয়ে রাখলেন।প্রতিদিন তিনি এদের প্রণাম করে পড়তে
বসতেন। একদিন তাঁর বাবার এক বন্ধু তাঁদের বাড়ি আসলেন।
যিনি বাঙালি পুলিশ অফিসার ছিলেন। সুভাষের বাবা তখন
বাড়ি ছিলেন না। তিনি সুভাষচন্দ্র বসুর পড়ার ঘরে প্রবেশ
করলেন। পড়ার ঘরে প্রবেশ করে তিনি বিপ্লবীদের ছবি
দেখে খুব রেগে গেলেন।সুভাষকে তিনি জিজ্ঞেস করলেন--বিপ্লবীদের ছবি তোমার ঘরে কেন?
সুভাষ গর্ব করে বললেন--এরাই আমার পথপ্রদর্শক।এরাই
আমার দেশমাতার সুসন্তান।এরাই আমার বুকে দেশের
স্বাধীনতার বীজ রোপণ করেছেন। প্রত্যেক ভারতবাসীদের
উচিত এদের ছবি ঘরে টাঙিয়ে রাখা।
পুলিশ অফাসার তাঁকে ধমক দিয়ে ছবিগুলো খুলে ফেলতে
বললেন।কিন্তু সুভাষচন্দ্র কিছুতেই এদের ছবি খুললেন না।
পুলিশ অফিসার চলে গেলেন।সেদিন স্কুল থেকে ফিরে এসে
এই বিপ্লবীদের ছবি তিনি আর তাঁর পড়ার ঘরে দেখলেন না। পরে তিনি পরে তিনি জানতে পারেন এই পুলিশ অফিসারের কথায় তাঁর
বাবা চাকরদের দিয়ে এই কাজ করেছিলেন। তিনি সেদিন
খুব ব্যথা পেয়েছিলেন।কিন্তু এই শহীদেরা তাঁর বুকে দিলেন
ভারতকে স্বাধীন করার অগ্নিমন্ত্র। 
 

Comments :0

Login to leave a comment