SCHOOL PRICIPAL SUICIDES

জাতের খোটা, হেনস্তার জেরে গুজরাটে আত্মঘাতী প্রধান শিক্ষক

জাতীয়

‘‘আমার জন্ম নিচু জাতের পরিবারে, কিন্তু আমি শিক্ষক। এটিই আমার পরিচয়। আমার শিক্ষকতার কাজ কেড়ে নেবেন না। আপনারা আমাদের খাটো করেন, আমাদের জাতের পরিচয়কে আমাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র করেন।’’

বিষ খাওয়ার আগে এই মর্মেই ভিডিও বার্তা দিয়েছিলেন কান্তি চৌহান। শুক্রবার বিষ খেয়েছিলেন রাজকোটের কাছে গুজরাটে আমরেলির বাগসারা মহকুমার জনজারিয়া গ্রামের স্কুলের প্রধান শিক্ষক। 

রবিবার সন্ধ্যায় জুনাগড় হাসপাতালে মারা গিয়েছেন তিনি। তীব্র ক্ষোভে আশেপাশে বহু এলাকার দলিত মানুষ জড়ো হয়েছেন থানায়। শিক্ষকের দেহ নিতে অস্বীকার করেছেন।  

চন্দ্রযানের ভারতে একের পর এক স্কুলে ছড়াচ্ছে বিদ্বেষ আর বিভাজনের বিষ। কেবল ছাত্রছাত্রীরা নয়, শিকার হচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারাও। চৌহানের পরিবার পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছে পঞ্চায়েত প্রধান মুকেশ বোরিসাগর এবং তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এই তিন শিক্ষক- রঞ্জন লাথিয়া, হংস টঙ্ক এবং ভাবনা নিয়মিত জাত তুলে শিক্ষককে খাটো করতেন। সামাজিক হেনস্তার পাশাপাশি ছাত্র এবং অভিভাবকদের কান্তি চৌহানকে হেনস্তা করার জন্য উসকানি দিতেন বলে অভিযোগ শিক্ষকের পরিবারের। 

পরিবার জানিয়েছে সরপঞ্চ বাহান্ন বছরের এই শিক্ষককের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব থেকে সরানোর ব্যবস্থা করে ফেলেছিলেন। প্রধান শিক্ষকের কাজের ভার ছাড়তে হয়েছিল। আতঙ্কে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করেছিলেন চৌহান, জানিয়েছিলেন যে সরপঞ্চ বোরিসাগর মেরে ফেলতে পারে। সরকারি প্রকল্পের টাকা তাঁর হাতে তুলে দিন প্রধান শিক্ষক, এমনই চাইতেন পঞ্চায়েত প্রধান। 

গ্রামবাসীদের একাংশ জানিয়েছেন যে ছাত্রদের জন্য সময়ের আগে স্কুলে চলে আসতেন কান্তি চৌহান। ছাত্রদেরও আগে আসতে বলতেন। এক ছাত্র দেরি করায় বকাঝকা করেন। এই ঘটনাকে ব্যবহার করে গ্রামে চৌহানের বিরুদ্ধে উসকানি দেওয়া হয়। অভিভাবকদের বিক্ষোভের শিকার হন স্কুল শিক্ষক। 

বাগসারা থানায় দলিত বিভিন্ন অংশ সমবেত হয়ে তীব্র বিক্ষোভ দেখিয়েছে। আমরেলির ডেপুটি পুলিশ সুপার জেপি ভান্ডারি বলেছেন, ‘‘অভিযুক্তরা পলাতক। তবে তাদের ধরতে ৯০ জন পুলিশকর্মীকে নিয়ে ১০টি দল করা হয়েছে।’’

Comments :0

Login to leave a comment