কুম্ভমেলায় যাতায়াতের পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু চলছেই। একাধিক পথ দুর্ঘটনায় বহু জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। কুম্ভে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয়েছে রাজ্যের আরও ছয় জনের। শুক্রবার রাতে ঝাড়খন্ডের ধানবাদ জেলার রাজগঞ্জ থানা এলাকায় ডাম্পারের সাথে সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় গাড়ির চালক সহ ৪ জনের। নিহত ও আহতেরা পশ্চিম মেদিনীপুর ও হুগলীর কামারপুকুরের বাসিন্দা। একটি গাড়িকে ওভারটেক করে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একাটি ডাম্পারে ধাক্কা মারে স্করপিও গাড়ি। ঘটনাস্থলে চার জনের মৃত্যু হয়েছে। ৫জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় ধানবাদের একাটি হাসপাতালে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ২ জনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে চালক সহ দু'জন পুরুষ, দু'জন মহিলা, দু'জন নাবালক রয়েছে। মৃত গাড়ির চালকের নাম রজব আলি। তাঁর বাড়ি হুগলীর গোঘাটের ভাদুর এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতেরা হলেন পিয়ালি সাহা(২৯) প্রনব সাহা, শ্যামলী সাহা, অমূল্য সাহা(সাড়ে তিন) আগমণী সাহা বয়স আড়াই বছর। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
মৃত গৃহবধূ পিয়ালি সাহার বাড়ি কামারপুকুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার সাতবেরিয়া গ্রামে। পরিবার সূত্রে জানা গেছে শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ দুটি স্করপিও গাড়িতে করে প্রায় ১৮ জন বেরিয়েছিলেন মহাকুম্ভের উদ্যেশ্যে প্রয়াগরাজে। কুম্ভ যাওয়ার পথে ঝাড়খন্ডের ধানবাদ জেলার রাজগঞ্জ থানা এলাকায় ডাম্পারের সাথে সংঘর্ষ হয়। আহত দেবনীলার সাহার ছেলে দেবনীল বলেন, বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলাম। ভোর চারটে নাগাদ ধানবাদ পুলিশ ফোন করে দুর্ঘটনার খবর জানায়। খবর পাওয়ার পর আত্মীয় স্বজনরা ধানবাদ চলে গিয়েছেন।
কুম্ভমেলা যাওয়ার হিড়িকে সেখানে বিপুল পরিমাণ দর্শনার্থী স্নান করতে যাচ্ছেন। প্রয়াগরাজে কুম্ভমেলায় যাওয়ার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে প্রাণ হারালেন রাজ্যের আরও ছয় দর্শনার্থী। কুম্ভ মেলা শুরু হওয়ার পর থেকে সেখানে যাওয়া-আসার পথে পরপর দুর্ঘটনায় একাধিক দর্শনার্থী প্রাণ হারিয়েছেন। গত মাসের শেষে পদপিষ্ট হয়ে সরকারি হিসাবে ৬০ জনেরও বেশি দর্শনার্থীর মৃত্যু হয়েছে ত্রিবেণী সঙ্গমে। বেসরকারি মতে, সেই সংখ্যা যদিও এর কয়েকগুণ বেশি। গত শনিবার রাতে নয়াদিল্লি স্টেশনের ১৪-১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মের সিঁড়িতে হুড়োহুড়ির জেরে পদপিষ্টের ঘটনায় সরকারিভাবে ১৮ জনের মৃত্যুর কথা স্বীকার করা হয়। শুক্রবার সকালে বিহারের ভোজপুর জেলায় একটি গাড়িকে ধাক্কা মারে ট্যাঙ্কার। চার মহিলা সহ ছয় জনের মৃত্যু হয়। রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা ওই ট্যাঙ্কারে বলেরো গাড়ির চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা মারে। গাড়িতে থাকা একই পরিবারের সকলেরই মৃত্যু হয়। তাঁরা গ্রামীণ পাটনার বাসিন্দা ছিলেন।
এদিন দুটি গাড়ির সংঘর্ষের শব্দ শুনে স্থানীয় মানুষ ঘটনাস্থলে এসে আহত দর্শনার্থীদের উদ্ধার করে। খবর যায় থানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। ঘটনাস্থলেই স্করপিওতে থাকা চার জন মৃত্যু হয়। পুলিশ নিহত ও আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য শহিদ নির্মল মাহাতো মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে আরও দু'জনের মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় হুগলীর কামারপুকুর গ্রামে শোকের আবহ তৈরি হয়েছে।
Comments :0