অরিজিৎ মণ্ডল
লিখিত বক্তব্য নিলেও রাজ্যপালের সঙ্গে আলোচনার সুযোগ হয়নি। রাজ্য সরকারই বা দাবি মেনে নেওয়ার ক্ষেত্রে সময়সীমা কেন দিচ্ছে না, ব্যাখ্যা নেই। মানবিকতার অভাব স্পষ্ট। এই অবস্থায় নাগরিকদের সমর্থন এবং সংহতিতেই ভরসা রাখছেন আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা।
সোমবার রাজভবনে ডেপুটেশন দিতে যান জুনিয়র ডাক্তাররা। সিবিআই তদন্ত ঘিরে ক্ষোভই রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে জানাতে গিয়েছিলেন ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্টের ১১ প্রতিনিধি। ৫ জন রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন। ডেপুটেশন দিলেও কোনও আলোচনা রাজ্যপালের সঙ্গে হয়নি।
আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তার দেবাশিস হালদার বলেছেন, ‘‘আমরা অপেক্ষা করি। বলা হয় যে রাজ্যপাল বিশ্রাম নিচ্ছেন। তারপর সম্ভবত আরেকটি প্রতিনিধিদল তাঁর সঙ্গে দেখা করে। তারপর আমরা দেখা করে ডেপুটেশন দেই। তবে আলোচনা হয়নি। কথা বলতে পারলে হয়ত কিছুটা ভালো হতো।’’
সিবিআই’র প্রথম চার্জশিটে অভিযুক্ত কেবল একজন কেন। কেন আর জি করে চিকিৎসক-ছাত্রীর হত্যায় প্রমাণ লোপাটে দায়ীদের নামও নেই আদালতে। অথচ প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ সিবিআই সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছে। তদন্ত ঘিরে এই ক্ষোভ রাজ্যপালকে জানাতে যান জুনিয়র ডাক্তাররা। চেয়েছেন তাঁদের এই বক্তব্য সিবিআই’র কাছে পৌঁছাবে।
এক প্রশ্নে দেবাশিস বলেন, ‘‘অনশনে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন আমাদের সতীর্থরা। আরও অনেকে অনশনে বসতে তৈরি। সাধারণ মানুষ পাশে রয়েছেন গোড়া থেকে। তাঁরা গোড়া থেকে আসছেন, আমাদের সঙ্গে অনশনে অংশ নিচ্ছেন। সংহতি জানাচ্ছেন। আমরা সাধারন মানুষের কাছেই যাব।’’
সোমবার নবান্নে সিনিয়র ডাক্তারদের একাধিক সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। সিনিয়র চিকিৎসকরা বেরিয়ে এসে যদিও হতাশাই জানান। কারণ জুনিয়র ডাক্তারদের ১০ দফা দাবি মেনে নেওয়ার প্রশ্নে কোনও সময়সীমা নির্দিষ্ট করতে নারাজ রাজ্য প্রশাসন।
জুনিয়র ডাক্তাররা রাজভবনে রাজ্যের বক্তব্যেও ক্ষোভ জানিয়েছেন। তাঁরা বলেন, দশ দফা দাবির সাতটি মেনে নেওয়া হয়েছে বলে যে প্রচার চলছে তা একেবারেই বেঠিক। আমরা ‘গ্রাউন্ড রিপোর্ট’ দিতে পারি। তাঁরা বলেন যে এখনই সব দাবি প্রয়োগ করা সম্ভব নয় আমরা বুঝি। কিন্তু ছাত্রসংসদ নির্বাচন বা নিয়োগবিধি সংক্রান্ত পরিবর্তন চালু করার সময়সীমা কেন দেওয়া যাবে না তার ব্যাখ্যা নেই।
দেবাশিস হালদার বলেন, ‘‘২১৬ ঘন্টার বেশি অনশন চলছে। মানবিকতার অভাব রয়েছে। তা না হলে সময়সীমা ঘোষণা করা যেত।’’ একটি প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘এখানে কেউ চকলেট, স্যান্ডুইচ খেয়ে অনশন করছে না!’’
Comments :0