কেরালার রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খানের তীব্র সমালোচনা করে সিপিআই(এম)’র সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেছেন, রাজ্যপাল ভিত্তিহীন কথাবার্তা বলছেন, এমন কথা যা রাজ্যপালের পদের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ না।
রাজ্যপাল খান রোজই এলডিএফ সরকারের বিরুদ্ধে অসংযত মন্তব্য করে চলেছেন। বৃহস্পতিবার তিনি ‘সোনা পাচার’ প্রসঙ্গ তুলে বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর অফিস এতে জড়িত। এবারে তিনি এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করবেন। খান বলেন, বইয়ে লেখা হচ্ছে। রাজ্য সরকার, মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর, মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ লোকেরা যদি জড়িত থাকেন তাহলে আমাকে মাথা গলাতেই হবে।
উল্লেখ্য, কূটনৈতিক চ্যানেলে সোনা পাচারের ঘটনায় ইতিমধ্যেই তদন্ত হয়েছে। শাস্তিও হয়েছে।
এ প্রসঙ্গেই ইয়েচুরি বলেন, একটি মামলা চলছে। এই সময়ে রাজ্যপালের মন্তব্য সম্পূর্ণ আপত্তিকর, ভ্রান্ত।
সিপিআই(এম) কেরালা রাজ্য সম্পাদক গোবিন্দন বলেছেন, কেরালার রাজ্যপালের এই মন্তব্যকে হলুদ সাংবাদিকতার সঙ্গে তুলনা করা যায়। রাজ্যপাল নিম্নস্তরের মন্তব্য করছেন, এলডিএফ সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক তৎপরতায় ব্যস্ত রয়েছেন। তাঁর লক্ষ্য হলো কেরালায় ধর্মনিরপেক্ষতাকে ধ্বংস করা। কেরালার শিক্ষাব্যবস্থাকে বিপজ্জনক দিকে ঠেলে দেওয়া। উপাচার্য ও সহ উপাচার্যদের সরিয়ে তিনি আরএসএস-এর লোকদের নিয়োগ করতে চান।
সিপিআই’র রাজ্য সম্পাদক কানাম রাজেন্দ্রন বলেছেন, রাজভবন ‘রাজি’ ( মালয়ালমে ইস্তফা) ভবনে পরিণত হয়েছে। রাজ্যপাল রোজই কারোর না কারোর পদত্যাগ চাইছেন। তিনি তাঁর কর্তৃত্ব ফলিয়ে কী করতে পারেন দেখা যাক। কেরালা সরকার সংবিধান ও আইন অনুসারে তার মুখোমুখি হবে। দেখা যাক কতদূর তিনি যেতে পারেন।
এদিকে, রাজ্যপালকে জবাব দিতে কেরালার ৯ উপাচার্যকে আরও সময় দিল কেরালা হাইকোর্ট। রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান রাজ্যের ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে বরাখাস্ত করে তাঁদেরকে কারন দর্শানোর নোটিস দিয়েছিলেন। এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করেন উপাচার্যরা। রাজ্য সরকারের তরফে এই বিষয়ে আবেদন করা হয়। বৃহস্পতিবার এই মামলায় শুনানির শেষে উপচার্য কারন দর্শানোর নোটিসের জবাব দেওয়ার সময় আরও চারদিন বাড়িয়ে সোমবার পর্যন্ত করার রায় দেন বিচারপতি দিভান রামচন্দ্রন। একই সঙ্গে এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন মঙ্গলবার ধার্য করেন তিনি।
এর আগে রাজ্যপালের নোটিসের স্থগিতাদেশ জারি করেছিলেন বিচারপতি। তার মেয়াদ এদিনই শেষ হয়ে গিয়েছিল। গত ২৩ অক্টোবর রাজ্য সরকারের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে পদত্যাগের নির্দেশ পাঠান রাজ্যপাল। ওই নির্দেশে পরের দিন সকাল ১১টার মধ্যে উপচার্যদের পদত্যাগ করার কথাও বলা হয়। এছাড়ও কেন তাঁদের উপচার্যপদে কাজ চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে অনুমতি দেওয়া হবে না সে বিষয়ে কারণ জানতে চেয়ে নোটিসও জারি করেন রাজ্যপাল। রাজ্যপালের এই নির্দেশ সম্পূর্ণ আইন বিরোধী তা বাতিল করার আবেদন জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন উপাচার্যরা।
Kerala Governor's
ফের অসংযত মন্তব্য কেরালার রাজ্যপালের
×
Comments :0