MUKTADHARA : ANAYAKATHA : BAMKEYES : PALLAV MUKHOPADHAYA : 29 SEPTEMBER 2024, SUNDAY

মুক্তধারা : অন্যকথা : শরদিন্দু ও ব্যোমকেশ : পল্লব মুখোপাধ্যায় : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, রবিবার

সাহিত্যের পাতা

MUKTADHARA  ANAYAKATHA  BAMKEYES  PALLAV MUKHOPADHAYA  29 SEPTEMBER 2024 SUNDAY

মুক্তধারা : অন্যকথা

শরদিন্দু ও ব্যোমকেশ
পল্লব মুখোপাধ্যায়
পর্ব - ১

 

গোয়েন্দা কাহিনীর ধরণ দুটির একটি রূপ নেয় | এক,‘whodunit‘ সেখানে হত্যাকারী কে
তা গোয়েন্দাও জানেন না, পাঠকও জানেন না | দুই, howcatchthem, যেখানে গল্পের
শুরুতেই অপরাধ আর অপরাধীর পরিচয় পাঠক জানেন, মজা হচ্ছে গোয়েন্দা কী ভাবে তাকে
ধরবেন তার ব্যাখ্যা। ব্যোমকেশ দুভাবেই দেখা দিয়েছে, গোয়েন্দা সাহিত্যের রীতি
অনুযায়ী প্রথমটিই বেশি । দ্বিতীয়টির প্রমাণ ‘মাকড়সার রস‘, সেখানে ব্যোমকেশকে
অকুস্থলেও যেতে হল না, অজিতের মাধ্যমেই কাজ চালিয়ে নিল। ‘সীমন্তহীরা‘ও এই
ধাঁচের গল্প। ব্যোমকেশকে শরদিন্দু ক্লাসিক ‘হত্যাকারী-কে‘-তেই আটকে রেখেছেন।
এবিষয়ে শরদিন্দু বলছেন, ‘...আগাথা ক্রিসটি ও কোনান ডয়েলের আমি দারুণ ভক্ত
ছিলাম। ১৯২৯ সালে ... মনে হলো এত ডিটেকটিভ বই পড়েছি, টেকনিকটা আয়ত্ত হয়েছে।
এবার নিজে গোয়েন্দা কাহিনী লিখলে কেমন হয়।‘
এই আগ্রহ নিয়ে শুরু করে শরদিন্দু ব্যোমকেশকে খুব যত্ন করে গড়লেন। ব্যোমকেশের
কাহিনীকার অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ও বাদ গেল না। বললেন ‘... চেয়েছিলাম ব্যোমকেশ
নিজে যেমন অসাধারণ, নামটির মধ্যেও তেমনি যেন অসাধারণত্ব থাকে। ...[ব্যোমকেশের
গোয়েন্দাগিরি] স্রেফ ইনটিউশন। ব্যোমকেশ অঙ্কে খুব দড়। তার বাবাও ছিলেন বড়ো
ম্যাথামেটিসিয়ান। মা বৈষ্ণব বংশের মেয়ে। এই দুয়ের সংমিশ্রণে ব্যোমকেশের বুদ্ধি খুব
দৃঢ় হয়েছে। এই বুদ্ধি দিয়েই সে জটিল রহস্যের জট ছাড়ায়।‘ আর অজিত সম্পর্কে

বলছেন, ‘অজিত সিনথিটিক চরিত্র। আমার বাল্যবন্ধু অজিত সেনের নামে নাম।‘
ব্যোমকেশের চেহারা নিয়ে কথা হচ্ছিল, বললেন, ‘ব্যোমকেশের নাক হল ধারালো, বেশ
লম্বা, নাতিস্থূল চেহারা। ... বলতে পারেন সেলফ প্রজেকশান। নিজেরই আত্মকৃতি।‘
একটু বিস্তৃত অর্থে দেখলে ব্যোমকেশের যা চিন্তাভাবনা, বিশ্বাস, মূল্যবোধ, এ সবের
মধ্যে শরদিন্দু নিজেকেই ছড়িয়ে দিয়েছেন। ব্যোমকেশকে নিয়ে যা গল্প লিখেছেন তার
প্রতিটিতে লেখকের অতি সতর্ক যত্নের ছাপ স্পষ্ট।

ক্রমশ


 

 

 

 

 

 

 

 

Comments :0

Login to leave a comment