JUDICIARY SALIM

বিচারব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করেন মমতাও: বললেন সেলিম

রাজ্য

বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন না মমতা ব্যানার্জিও। দিল্লির নরেন্দ্র মোদী সরকারের আচরণের সঙ্গে রাজ্যের তৃণমূল সরকারের মনোভাবের ফারাক নেই। মঙ্গলবার এ কথা বলেছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেছেন, বামপন্থীরা বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতার পক্ষে বরাবর। 

এদিন মেঘালয়ে যাওয়ার আগে সংবাদমাধ্যমে বিচারব্যবস্থা সম্পর্কে মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী এবং তৃণমূলনেত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি বলেন, বিচারব্যবস্থা স্বনির্ভর হওয়া উচিত। কেন্দ্রের সরকার বিচারব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করছে। কলেজিয়ামের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের যেমন সুপারিশ থাকতে পারে তেমন রাজ্যগুলিরও প্রতিনিধি থাকা উচিত। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যেই স্পষ্ট, বিচারপতি নিয়োগ এবং পদোন্নতিতে তৃণমূলও চায় হস্তক্ষেপ। যে কারণে রাজ্যে প্রতিনিধিও রাখার দাবি তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। 

মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সেলিম বলেন, ‘‘এ রাজ্যে বার কাউন্সিলের প্রধান করা হয়েছে এমন একজনকে কলেজজীবন থেকে যাঁর বিরুদ্ধে গুণ্ডামির অভিযোগ রয়েছে। আর বিচারপতিদের এজলাসে ঢুকে বাধা দেওয়া হচ্ছে। বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলির এজলাসে ঢুকে পড়েনি এরা? বিচারপতি রাজশেখর মান্থার বাসভবনে পোস্টার দেয়নি?’’ 

সেলিম তৃণমূল সরকারের ভূমিকা মনে করিয়ে বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গাঙ্গুলিকে রাজ্যের মানবাধিকার কমিশনের পদ থেকে সরানো হয়েছিল। তাঁর নামে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল। মানবাধিকার কমিশনের মাথায় বসানো হলো পুলিশকর্তাকে, যা করাই যায় না।’’ 

সেলিম বলেন, ‘‘কেন্দ্র যেভাবে বিচারব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করছে, রাজ্যও তা করছে।’’ সিপিআই(এম)’র অবস্থান ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘‘আমরা চাই জাতীয় বিচারবিভাগীয় নিয়োগ কমিশন। মমতা বলুন তিনি এমন ব্যবস্থা চান কিনা।’’ সেলিমের ব্যাখ্যা, ‘‘সংবিধান ক্ষমতার পৃথকীকরণ করেছে আইনসভা, বিচারব্যবস্থা এবং সরকারের মধ্যে। সরকার বিচারপতিদের নিয়োগ করলে স্বাধীনতা থাকে না। আবার বিচারপতিরাই বিচারপতি নিয়োগ করছেন, কলেজিয়াম ব্যবস্থার মাধ্যমে, তাতেও ত্রুটি থাকে।’’ 

গত ৯ ডিসেম্বর রাজ্যসভায় জাতীয় বিচারবিভাগীয় কমিশন সংক্রান্ত ব্যক্তিগত বিল পেশ করেন সিপিআই(এম) সাংসদ এবং আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য। ২০১৪’তে সংসদে কমিশন গঠনের বিল পাশ হলেও সুপ্রিম কোর্ট তা খারিজ করে দেয় হস্তক্ষেপের আশঙ্কা জানিয়ে। সেই সংবিধান সংশোধনী বিলে কমিশনের গঠন সংক্রান্ত প্রস্তাবে প্রশ্ন তোলে সিপিআই(এম)। প্রস্তাবিত কমিশনের ৬ সদস্যের দু’জন সরকার মনোনীত ‘বিশিষ্ট’ রাখার কথা ছিল। 

কেন্দ্রে বিজেপি শাসনের চরিত্রের সঙ্গে বিচারব্যবস্থায় হস্তক্ষেপের সম্পর্ক ব্যাখ্যা করেন সেলিম। তিনি বলেন, ‘‘ফ্যাসিবাদের উত্থান মানে হচ্ছে যেভাবে সংসদ বা বিধানসভার ওপর আধিপত্য কায়েম করবে, গণমাধ্যমের ওপর আধিপত্য কায়েম করতে চাইবে, সরকারি কাজে আধিপত্য কায়েম করবে। এরপর সেনা এবং বিচারব্যবস্থার ওপরও আধিপত্য কায়েম করতে চাইবে ফ্যাসিবাদ। কলেজিয়াম বিচারপতি নিয়োগের সুপারিশ পাঠালেও কেন্দ্র তা ফেলে রাখছে পছন্দসই না হওয়ায়।’’

Comments :0

Login to leave a comment