French playerMBappe

এমবাপে যেন বিদ্যুৎ

খেলা

থামানো যাচ্ছে না তাঁকে। প্রতিযোগিতা যত এগোচ্ছে ক্রমশ অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছেন। বিশ্ব মঞ্চে ‘কেরামতি’ অব্যাহত কিলিয়ান এমবাপের। ফুটবল বিশ্বের নতুন মহাতারকার দু’বিশ্বকাপ মিলিয়ে গোলসংখ্যা দাঁড়াল নয়। যা জিনেদিন জিদান, মিশেল প্লাতিনিদের মতো কিংবদন্তি ফুটবলারদের নেই। কিলিয়ান এমবাপের সামনে শুধু ফ্রান্সের জা ফঁতে (১৩)। 
রবিবার নিজে দু’টি অনবদ্য গোল করলেন। একটি করালেন। এমবাপের দুর্ধর্ষ ফুটবল শৈলীতে ভর করে কোয়ার্টার ফাইনালে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। পোল্যান্ডকে ৩-১ গোলে হারিয়ে। গোল দু’টি বোধহয় তাঁর পক্ষেই করা সম্ভব। প্রথম গোল করেন ম্যাচের ৭৪ মিনিটে। উসম্যান ডেম্বেলের থেকে পাসটি পান। এমবাপের সামনে দু’জন লম্বা চেহারার ডিফেন্ডার দাঁড়িয়ে। ডানপায়ের ইনস্টেপ দিয়ে জোরালো শটে টপ কর্ণারে বলটি রাখেন। কোচ দিদিয়ের দেঁশ অবধি মুগ্ধ। গোলটির পর এমবাপের মাথায় হাত বুলিয়ে দেন ফরাসি কোচ। দ্বিতীয় গোলটি যেন প্রথম গোলটির কার্বন কপি। তাতে হালকা স্কিল ছিল শুধু। লিলিয়ান থুরামের ছেলে মার্কাস থুরামের কাছ থেকে আসা বলটি ধরার সময়। ডান পায়ে বলটা থামিয়ে, হালকা কাটিয়ে নিলেন শট। ফের পরাস্ত হয়ে যান সেজনি। তাঁর পক্ষে কিছুই করার ছিল না। ফ্রান্সের তারকার দক্ষতার সামনে অসহায় তিনি। গোল দু’টি করার আগে অবধি শত চেষ্টা করছিলেন। কিছুতেই পারছিলেন না, আটকে যাচ্ছিলেন। কিন্তু শেষ অবধি ‘কামাল’ করলেন মাত্র দু’টি শটে। 
 চলতি বিশ্বকাপে এমবাপে করে ফেললেন পাঁচটি গোল। গোল্ডেন বুটের দৌড়ে বাকিদের ব্যবধান বাড়িয়ে নিলেন দু’গোলের। পিছনে স্পেনের আলভারো মোরাতা (৩), নেদারল্যান্ডসের কোডি গাকপো (৩)। ম্যাচ শেষে রবার্ট লেওনডোস্কি, মিলিকরা নিজে থেকে এগিয়ে এসে শুভেচ্ছা জানিয়ে যান এমবাপেকে। এবার নতুন ভূমিকাতেই দেখা যাচ্ছে তাঁকে। সতীর্থদের গোল করাতেও চাইছেন তিনি। 
ফ্রান্সের প্রথম গোলের পাসটা দু’ফুটবলারের মাঝখান দিয়ে দিয়েছিলেন অলিভার জিরুকে। বুঝতে পারেননি পোল্যান্ডের ফুটবলাররা। এমবাপের দু’টি গোল এবং তাঁর বাড়ানো গোলের ঠিকানা লেখা পাসের দিকে তাকালেই বোঝা যাবে এখানেই একজন গড়পরতা ও জিনিয়াসের পার্থক্য। এমবাপের পাসটি ধরে গোল করতে ভুল করেননি অভিজ্ঞ জিরু। তিনি গোলটি করে পেরিয়ে গেলেন থিয়েরি অঁরিকে (৫১)। জিরু (৫২) হয়ে গেলেন ফ্রান্সের সর্বাধিক গোলদাতা জিরু। দেশের জার্সি গায়ে নয়া ইতিহাসের তৈরির খুশিতে জিরু আবেগে ভাসলেন। এতকিছুর পরও কিন্তু ফ্রান্স ক্লিনশিট ধরে রাখতে পারেনি ম্যাচে।
প্রথমার্ধে ফ্রান্স এগিয়ে যাওয়ার আগে অবধি সেরকম কিছুই করতে উঠতে পারেনি। তাঁর আগে ২৯ মিনিটে ফাঁকা গোলে বল ঠেলতে পারেননি জিরু।  দ্বিতীয়ার্ধে এমবাপে ফারাক গড়লেন। ওইটুকুই! পোল্যান্ডের কাছেই ছিল ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ। আর্জেন্টিনার ম্যাচের মতো এই ম্যাচে নিজেদের অর্ধে আটকে রাখেনি। সাহস দেখিয়েছে লেওনডস্কিরা। বল তাড়া করেছে। প্রতি আক্রমণে উঠেছে। নিচ থেকে খেলা তৈরি করেছে। ফ্রান্সের আক্রমণভাগের ফুটবলারদের জন্য রক্ষণে জমি কমিয়ে অবধি রেখেছিল। প্রথমার্ধে ৩৮ মিনিটে ম্যাচের সহজ সুযোগ নষ্ট করে পোল্যান্ড। তাঁদের এক ফুটবলারের শট গোললাইন সেভ করেছিল ভারানে। ম্যাচের শেষ মুহূর্তে পড়ে পাওয়া চার আনার মতোই পেনাল্টি পায় পোল্যান্ড। লেওনডোস্কির শট হুগো লরিস বাঁচিয়ে দেন। ফ্রান্স অধিনায়ক আগেই নড়ে যান। রেফারি দ্বিতীয়বার শট নেওয়ার নির্দেশ দেন। ফিরতি শটে লেওনডস্কি লরিসকে উল্টো দিকে ফেলে গোল করেন।
 

Comments :0

Login to leave a comment