Mob lynching

এবার আসামে গোরু চুরি অপবাদে পিটিয়ে হত্যা যুবককে

জাতীয়

বিশ্বজিৎ দাস: গুয়াহাটি 
 

আসামের মরিগাঁও জেলায় তথাকথিত গোরক্ষকদের পিটুনিতে মৃত্যু হয়েছে একজনের। জখম হয়েছেন আরও দুইজন। আবার গোয়ালপাড়ায় চোর সন্দেহে পিটিয়ে মারা হয়েছে এক আদিবাসী যুবককে।
মঙ্গলবার ভোরে মধ্য আসামের মরিগাঁও জেলার আহটগুড়ি গ্রামে গোরু চুরির আপবাদ দিয়ে তিন যুবকের উপর চড়াও হয় গ্রামবাসীরা। বিজেপি শাসিত রাজ্যে হামেশাই এই ধরনের ঘটে থাকে। এদিন আসামেও ঘটলো। ঘটনায় সাদ্দাম হোসেন (২৮) নামের একজনের ঘটনাস্থলে মৃত্যু ঘটে। এছাড়া বিলাল আলি (২৪) ও মিজারুল হক (২৬) নামের দুই যুবক গুরুতর জখম হয়েছেন। তাঁদেরকে গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনায় এক পুলিশ কর্মীও জখম হয়েছেন। উন্মত্ত জনতা দাবি করেছে, এদিন ভোরে স্থানীয় কালিয়া দাসের বাড়ি থেকে গোরু চুরি করে নিয়ে যাওয়ার পথে ওই তিনজনকে ধরে ফেলে তারা। দলে সাতজন ছিলেন। একটি ছোট লরিতে করে চারটি গোরু নিয়ে নাকি তাঁরা পালাচ্ছিলেন। আরও তিনজন নাকি লরির পিছনে মোটরবাইকে করে যাচ্ছিলেন। বাইকে থাকা তিনজনকে আটকে বেধম মার শুরু করে উন্মত্ত জনতা। খবর পেয়ে ছুটে আসে পুলিশ। জনতার মারে জখম তিনজনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছোঁড়া হয়। এক পুলিশকর্মীর মাথা ফেটে যায়। তখন আবার পুলিশ জনতার দিকে ধেয়ে আসে। গ্রামবাসীরা দুটি বাইকে আগুন ধরিয়ে দেয়। উত্তেজনা থামাতে পুলিশ শূন্যে গুলি চালায়। ততক্ষণে সাদ্দাম হোসেনের মৃত্যু ঘটে। মরিগাঁওয়ের পুলিশ সুপার হেমন্ত কুমার দাস জানান, ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ।


আবার নিম্ন আসামের গোয়ালপাড়া জেলার সোনামারি এলাকার কল্যাণপুর গ্রামে সেনসান মারক (২৮) নামের এক উপজাতি যুবককে চোর সন্দেহে সোমবার রাতে পিটিয়ে খুন করে একদল উন্মত্ত যুবক। গ্রামবাসীরা জানান, বঙ্গাইগাঁও-গুয়াহাটি জাতীয় সড়কের পাশে ঘটনাটি ঘটেছে। এই এলাকায় রাভা, মারাক ও বাঙালিদের বসবাস। সেনসান মারাক নিরীহ প্রকৃতির ছেলে। মিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করে সংসার চালান। তাঁর স্ত্রী ও মা রয়েছেন। রাতে খৈনি কিনতে দোকানে যান মারাক। হঠাৎ ‘চোর চোর’ চিৎকার শুনে গ্রামবাসীরা বেরিয়ে এসে দেখেন মারাকের নিথর দেহ রাস্তায় পড়ে আছে। তবে কাউকে এখানে পাওয়া যায়নি। দোকানিও পালিয়ে গিয়েছেন। যেখানে মারাককে খুন করা হয়েছে সেখান থেকে আধ কিলোমিটার দূরে আগিয়া থানা। খবর দেওয়ার ঘণ্টা খানেক পরে পুলিশ আসে। মারকের দেহ ময়নাতদন্ত করে মঙ্গলবার পরিবারের হাতে সমঝে দেওয়া হয়েছে  । গোয়ালপাড়া জেলার পুলিশ সুপার ভি ভি রাকেশ রেড্ডি জানান, নিহত মারেকের স্ত্রী একটি খুনের অভিযোগ করেছেন। মারাকের স্ত্রী জানান, তাঁর স্বামী দিনমজুর। পরিবারের একমাত্র রোজগারে তিনি। কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথে তাঁকে চোর অপবাদ দিয়ে খুন করেছে একদল যুবক। এর পেছনে কোনও রহস্য থাকতে পারে। 
এদিন গুয়াহাটিতে মত্ত অবস্থায় দুই অটো চালকের মারামারিতে একজনের মৃত্যু ঘটে। তারাসিন আলি ও টিঙ্কু নাথ নামের দুই অটোচালক মত্ত অবস্থায় মারপিট শুরু করেন। হঠাৎ ভারী কিছুর আঘাতে ঘটনাস্থলে টিঙ্কু নাথের মৃত্যু ঘটে।

Comments :0

Login to leave a comment