তপন বিশ্বাস- ইসলামপুর
জেলা জুড়ে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না থাকায় আমন ধানের বীজতলা শুকিয়ে যাচ্ছে। উত্তর দিনাজপুরে শঙ্কা বাড়ছে কৃষকদের। যে কৃষকরা ধান রোপন করেছেন তাঁদের জমিও ফেটে যাচ্ছে। ফলে আমন ধানের চারা জমিতে রোয়া নিয়ে সমস্যায় পড়ছেন চাষিরা।
ফলনে পরিস্থিতির প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে জেলা কৃষি দপ্তর। উত্তর দিনাজপুর কৃষি প্রধান জেলা। এখানে প্রচুর ধান উৎপাদন হয়। কৃষকদের অর্থনীতি মূলত ধানের উৎপাদনের উপর নির্ভরশীল।
কৃষকদের ৫০ শতাংশ বীজতলা রোপন করে উঠতে পারেননি বৃষ্টির অভাবে। ৩ জুন বর্ষা জেলায় আসে। জুনের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত পর্যাপ্ত বৃষ্টি হলেও তারপর থেকে আর বৃষ্টির দেখা নেই।
জেলা কৃষিদপ্তর জানিয়েছে, জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহেও অধিকাংশ বীজতলা তৈরি হয়নি। জেলার সহ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসনিক) সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘বর্ষা জেলায় ঢুকলেও সেভাবে এখনও বৃষ্টি হয়নি। জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহের পর তেমন বৃষ্টি হয়নি। আমন ধান চাষের জন্য কৃষকরা বর্ষার ওপর নির্ভর করেন। বীজতলা অর্ধেক কৃষক সেচের মাধ্যমে করেছেন। কিন্তু আমন ধানের জমি তৈরি করতে পারেননি।’’
জেলার হিসেবে অনুযায়ী আগস্টের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে আমন ধান রোপন সম্পূর্ণ হয়ে থাকে। জেলায় প্রায় ২ লক্ষ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়। এবার আমনের চারা রোপনে দেরি হলে গাছের চেহারা খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। গাছ ভালো না হলে ফলনে প্রভাব পড়বে। দেরি হলে ধানে রোগ পোকার আক্রমণ বেড়ে যায়। ব্লকে আমাদের দপ্তরের মাধ্যমে কৃষকদের যথাযথ পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
ইসলামপুরের বলঞ্চার কৃষক মহম্মদ নুরুদ্দিন বলেন, ‘‘বর্ষার বৃষ্টির ভরসায় কৃষকরা আমন ধান চাষ করেন। জুন মাসে বেশিরভাগ বীজতলা নষ্ট হয়ে যায। বৃষ্টির অভাবে এখনও নতুন করে আমরা বীজতলা করতে পারিনি। এর পর ধান চাষ করতে পারব কিনা তা নিয়ে সেই চিন্তায় রয়েছি।’’ তিনি জানাচ্ছেন, ‘‘সারা বছরের খাদ্য ঘরে তুলে উদ্বৃত্ত ফসল আমরা বিক্রি করি। এখনও বীজতলা তৈরি করতে না পারায় ফলনে বড় প্রভাব পড়বে।’’
একই এলাকার কৃষক ইদ্রিস আলী বলেন, ‘‘জুন মাসে বৃষ্টির মধ্যে ধান চাষ করেছিলাম, রোপন করেছিলাম। কিন্তু বৃষ্টির অভাবে জমি ফেটে চৌচির হয়ে আছে। আদৌ কি ধানগাছ বাঁচবে?’’
Comments :0