Health Project Workers

কাজ নেই মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসের পরও, নেই সহায়তা, লড়াইয়ে মায়া বিশ্বাসরা

রাজ্য

গত শুক্রবার মহিলা সমাবেশের ছবি। ছিলেন মায়া বিশ্বাসরা।

অবসর ঘোষণা হয়েছে আচমকাই। মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসেও কাজ হয়নি। কিন্তু অবসরকালীন কোনও আর্থিক ভাতা নেই। সম্প্রতি যদিও পৌর প্রকল্পের স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্য ভাতা হয়েছে। কিন্তু তা থেকে বাদ গিয়েছেন পুরনোরা। 

বারাসতের মায়া বিশ্বাস জানিয়েছেন এমনই সঙ্কটের বৃত্তান্ত। ৮ সেপ্টেম্বর কলকাতায় রানি রাসমণি রোডে সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির সমাবেশে এসেছিলেন মায়া বিশ্বাস। কাজ করতেন বারাসত পৌরসভায় প্রকল্প কর্মীর। জানতে পারেন ৬০ বছরের পর অবসর নিতে হবে। কিন্তু অবসরের পর ভাতার কোনও সিদ্ধান্ত নেই।

ধর্মতলার সমাবেশ স্লোগান তুলেছে প্রতিরোধের। পঞ্চায়েতে লড়াকু মহিলা কর্মীদের জানিয়েছে সম্বর্ধনা। শ্রদ্ধা সংহতি জানিয়েছে তৃণমূল এবং বিজেপি’র বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শহীদদের পরিবারকে। তাঁরাও আমন্ত্রিত ছিলেন সমাবেশে। সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির রাজ্য সম্পাদক কনীনিকা ঘোষ সমাবেশেই পরিষ্কার জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন না মহিলাদের বড় অংশ। আবার মিড ডে মিল’র মতো বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা দেয় না রাজ্য এবং কেন্দ্রের সরকার। ভাতা পান না কর্মীরা। তাঁরা অনেকেই মহিলা। 

 

এই সঙ্কটের প্রমাণ মিলছে মায়া বিশ্বাসের অভিযোগে। তিনি জানাচ্ছেন, ‘‘অতীতে আমাদের কাজের ক্ষেত্রে অবসরের বয়সের সীমা ছিল না। ডেঙ্গু ম্যালেরিয়া, শিশুদের টিকা দেওয়ার মতো ঘরে ঘরে পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার কাজ করেছি বছরের পর বছর। নতুন সরকার আসার পর সিদ্ধান্ত হয়েছে ৬০ বছর হয়ে গেলে অবসর নিতে হবে।’’

এর মধ্যেই নতুন কর্মীরা যোগ দিয়েছেন প্রকল্পের কাজে। সরকারও ঘোষণা করেছে এই কর্মীদের অবসরের সময় ৩ লক্ষ করে টাকা দেওয়া হবে। মায়া বিশ্বাস বলছেন, ‘‘তা’হলে আমাদের অবসরকালীন অর্থ দেওয়া হবে না কেন?’’ 

কনীনিকা ঘোষ সোমবার এই প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘‘কাউকে হঠাৎ করে অবসর নিতে হলে তা নিশ্চয় সঙ্কটের। তারপর অবসরকালীন কোনও অর্থ না দেওয়া হলে এই দাবি নিশ্চয় জরুরি।’’ 

এর মধ্যে নবান্নে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখাও করেছিলেন তাঁরা। তখনও অবসর হয়নি। ভাতা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছিলেন। কারণ ভাতার অঙ্ক ছিল ৩ হাজার ১০০ টাকা সাকুল্যে। এই মহিলারা জানাচ্ছেন যে মুখ্যমন্ত্রী কাজের মেয়াদ ৫ বছর বাড়ানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন। সে ক্ষেত্রে ২০২৪ পর্যন্ত কাজ করার কথা ছিল তাঁদের। দেখা করেছিলেন রাজ্যের নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরাদ হাকিমের সঙ্গেও। তারপর?

মায়া বিশ্বাসের আক্ষেপ, ‘‘দেড় বছর কেবল ঘুরেছি। এর মধ্যে আমাদের নামোর তালিকা বের করে দিল পৌরসভা। জানলাম আমরা আর কাজে নেই। মন্ত্রীও জানিয়ে দিলেন যে আমাদের জন্য কিছু করা গেল না।’’

এর পরই তাঁরা শুনেছেন যে তাঁদের বদলে কাজে নেওয়া হয়েছে এমন কর্মীরা অবসরকালীন অর্থ পাবেন। এখানেই প্রশ্ন মায়া বিশ্বাসদের। তাঁরা বলছেন, ‘‘নিয়ম তো সবার জন্য এক হওয়ার কথা। তা’হলে আমাদের অবসরের সময় এককালীন অর্থ দেওয়া হবে না কেন।’’   

কনীনিকা ঘোষ বলছেন, ‘‘অতীতেও আমরা কলকাতার স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে যৌথ আন্দোলন করেছি। এক্ষেত্রেও আন্দোলন হবে। এই ধরনের প্রকল্পগুলিতে মহিলারাই বেশি কাজ করেন। তাঁদের কাজের জগতে সঙ্কট হলে মহিলা সমিতি অবশ্যই আন্দোলন করবে।’’

Comments :0

Login to leave a comment