Md Salim

তৃণমূল-বিজেপি যোগ আছে বলেই ইডি অফিসাররা মার খেয়েও অসহায়

রাজ্য

মার খেয়েও ইডি’র অফিসাররা অসহায় হলে, দুষ্কৃতীরা অবাধে ঘুরে বেড়ালে রাজ্যের প্রতিবাদী এবং সাধারণ মানুষের কী হবে? বৃহস্পতিবার সিপিআই(এম)’র রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এই প্রশ্ন তুলে বলেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে, বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে যোগসাজস না থাকলে মার খেয়ে ইডি’র অফিসারদের এমন অসহায় দশা হতো না। বিজেপি এবং তৃণমূল যে একলাইনেই চলছে, সেটা স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। 
সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতার বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে তাঁর অনুগামী দুষ্কৃতী বাহিনীর হাতে আক্রান্ত হন ইডি’র অফিসাররা। পুলিশ দুষ্কৃতীদের এখনও পর্যন্ত ধরেনি, উলটে আক্রান্ত ইডি অফিসারদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে। এই প্রসঙ্গেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সেলিম ইডি’র অসহায় অবস্থার কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, ইডি সিবিআই কেউ তৃণমূলের কোনও দুর্নীতির বিরুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্ত তদন্ত করেনি, কোনও ব্যবস্থাও নেয়নি। আদালতের গুঁতোয় তারা যখন তদন্ত করতে নেমেছে, তখন একদিকে রাজ্য সরকার তদন্ত আটকানোর চেষ্টা করছে, অন্যদিকে কেন্দ্রীয় সরকার তদন্তে পিছুটান দিচ্ছে। তদন্তের নামে তৃণমূল-বিজেপি’র মেরুকরণ সাজানো হচ্ছে, কিন্তু দুষ্কৃতী ও দুর্নীতির মাথাদের ধরা হচ্ছে না। শীতলকুচিতেও তদন্ত করে কাউকে শাস্তি দেওয়া হয়নি, এখানেও হচ্ছে না। 
আক্রান্ত ইডি অফিসারদের বিরুদ্ধেই মামলা দেওয়া সম্পর্কে সেলিম বলেছেন, এরাজ্যের পুলিশ এটাই করে। নারদকাণ্ডে যারা ঘুষ নিয়েছিল, লোকসভার অধ্যক্ষও তাদের শাস্তি দেয়নি, কলকাতা পুলিশও তাদের ধরেনি। উলটে কলকাতা পুলিশ স্টিং অপারেশন চালানো সাংবাদিক স্যামুয়েল ম্যাথুকে হেনস্তা করেছে। 
সেলিম বলেন, শুধু সন্দেশখালি নয়, রাজ্যের নানা জায়গায় দুষ্কৃতীদের মুক্তাঞ্চল তৈরি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই একাজে পথ দেখিয়েছিলেন ক্ষমতায় বসেই ভবানীপুর থানা থেকে দুষ্কৃতী ছাড়িয়ে এনে। বগটুইতে তিনি নিজেই বলেছিলেন, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি না ডাকায় ঘর জ্বালানো হলেও পুলিশ যায়নি। দলুয়াখাকির ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী একটি কথাও বলেননি। এই সব দুষ্কৃতীরা শুভেন্দু এবং অভিষেকের যৌথ বাহিনী।
তৃণমূলে নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব প্রসঙ্গে প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছেন, এই তো বামপন্থী যুবরা ব্রিগেডে সমাবেশ করল। বিমান বসু, সূর্য মিশ্ররাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। নীতির জন্য রাজনীতি করলে এসব দ্বন্দ্ব হয় না। আর তৃণমূলের মতো নীতিহীন রাজনীতি করলে দলে নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব হয়, পরিবারেও হয়। মমতা ব্যানার্জি নিজে নবীন না কি প্রবীণ, কেউ বলতে পারবেন?
‘এক দেশ এক ভোট’ বিজেপি’র এই প্রচার সম্পর্কে মহম্মদ সেলিম বলেছেন, পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনের সঙ্গে কলকাতার মানিকতলা বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন করা হলো না কেন? বিজেপি এবং তৃণমূল চাইছে না বলে। এই বৈচিত্রময় দেশে এক কর ব্যবস্থা নেই, এক রেশন ব্যবস্থা নেই, সেখানে এক নির্বাচন বলাটা আসলে ভাঁওতা। মানুষ যখনই কাজ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সড়ক, বিদ্যুৎ, পরিবহণ ইত্যাদির দাবি তোলেন, তখনই এরকম ভাঁওতাগুলো দক্ষিণপন্থীরা সামনে আনে। মানুষের দাবি পূরণের জন্যই সিপিআই(এম) সামাজিক অর্থনৈতিক রাজনৈতিক সাম্য চাইছে। মমতা ব্যানার্জি কখনও জেলা ভাগ দেখান, কখনো রাজ্য সঙ্গীত দেখান। আর মোদী কখনও কাশ্মীর দেখিয়ে, কখনও ‘এক দেশ, এক ভোট’ স্লোগান দিয়ে মানুষের নজর ঘোরান। দক্ষিণপন্থীদের সঙ্গে বামপন্থীদের ব্যাটললাইন ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে।

Comments :0

Login to leave a comment