বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বের শুরুতেই সংঘাত তীব্র হলো সংসদে। লোকসভার পর রাজ্যসভাতেও কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর ভাষণ নিয়ে হইচই পাকিয়েছে সরকারপক্ষ। স্থগিত হয়ে যায় রাজ্যসভার অধিবেশনও।
এদিন অধিবেশন শুরুর আগে রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা এবং কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খারগের কক্ষে বৈঠকে বসে বিরোধী ১৬টি দল। খারগের ডাকা বৈঠকে অংশ নেয় সিপিআই(এম), সিপিআই, আরএসপি, ন্যাশনাল কনফারেন্স, আরজেডি, জেডি(ইউ), শিবসেনার উদ্ধব থ্যাকারে গোষ্ঠী, এনসিপি, মুসলিম লিগ। এমনকি কংগ্রেসের সঙ্গে বিরোধ সত্ত্বেও বৈঠকে অংশ নেয় আম আদমি পার্টি।
কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস ছিল না। বৈঠকের পর সংসদ চত্বর থেকে বিজয় চক পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিলও করেন বিরোধী সাংসদরা। যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনও হয়। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের কাউকে দেখা যায়নি।
বিরোধীরা ঠিক করেছেন আদানির শেয়ার পতন এবং সরকারের, বিশেষ করে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হবে সংসদে। খারগে বলেছেন, ‘‘কেবল আদানিই নয়। মূল্যবৃদ্ধি, বেকারি, রাজ্যে রাজ্যে বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা পাঠানোর মতো বিষয়গুলিও তোলা হবে সংসদে।’’
সিপিআই(এম) সাংসদ এলামরাম করিম এবং বামপন্থী সাংসদরা অন্য দলগুলির সঙ্গে কথা বলছেন ত্রিপুরা পরিস্থিতি নিয়েও। ত্রিপুরায় ফল ঘোষণার পর বিজেপি’র হিংসার চেহারা সংসদে হাজির করবেন বামপন্থীরা। অন্য দলগুলিরও সমর্থন চেয়েছেন।
বিরোধীদের ক্ষোভ, প্রশ্ন এড়াতেই এদিন রাহুল গান্ধীর ভাষণ নিয়ে গোলমাল পাকাতে তৎপর হয় সরকারপক্ষ। বিজেপি সাংসদ এবং কেন্দ্রের মন্ত্রীরা নেতৃত্ব দিয়েছেন। লোকসভায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং লন্ডনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর বক্তৃতার জন্য ক্ষমা চাওয়ার দাবি তোলেন। এরপর রাজ্যসভার নেতা এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযুষ গোয়েল সে দাবি তোলেন রাজ্যসভায়।
খারগে বলেছেন, ‘‘লন্ডনে বক্তৃতার বিষয় সংসদের আলোচনায় আসবে কেন। তার ওপর রাহুল গান্ধীর বক্তৃতাকে নিজেদের মতো করে পেশ করছেন গোয়েলের মতো মন্ত্রীরা। রাজ্যসভার সদস্যই নন রাহুল। তা’হলে চেয়ারম্যান জগদীপ ধনকর কোন বিধিতে রাহুল গান্ধীর বক্তব্যের বিরুদ্ধে ক্ষমা চাওয়ার দাবি তোলার অনুমতি দিলেন রাজ্যসভায়?’’
খারগের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী এবং বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদী বারবার বিদেশের মাটিতে বলেছেন সত্তর বছরে দেশে কিছু হয়নি। ভারতোয়রা নিজেদের পরিচয়ের জন্য লজ্জায় দিন কাটাতেন বিদেশে। এখন ভারতীয়রা গর্ব করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে সব কিছু লজ্জার ছিল?’’
বিরোধীরা সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, দেশে গণতন্ত্র হত্যাই তো করা হচ্ছে। সংসদীয় গণতন্ত্রকে খর্ব করা হচ্ছে। সে কথা বললেই দেশদ্রোহী বলে দিচ্ছে বিজেপি এবং তাদের সরকার। আর যারা সংসদীয় গণতন্ত্রকে হত্যা করছে তারা হয়ে উঠল দেশপ্রমিক!
কংগ্রেসের বিপক্ষে বিভিন্ন সময়ে সরব হলেও সাংবাদিক সম্মেলনে দেখা গিয়েছে তেলেঙ্গানার ভারত রাষ্ট্র সমিতির সদস্যসদের। পরে আদানি কেলেঙ্কারির তদন্ত নিয়ে বিক্ষোভও দেখিয়েছেন তাঁরা। তৃণমূল থাকেনি কোনও কিছুতেই।
Comments :0