TRINAMOOL DELHI

দিল্লিতে তৃণমূল, দায় ঠেলাঠেলির নাটক

জাতীয় রাজ্য

TRINAMOOL DELHI ছবি টুইটার থেকে।

স্পষ্ট বোঝাপড়া। আর সেই বোঝাপড়ার চিত্রনাট্যেই দিনভর সংবাদ মাধ্যম আলো করে থাকার চেষ্টা চালালো তৃণমূল। আড়ালে রইলেন রাজ্যের কয়েক কোটি গ্রামীণ জনতা, যাঁদের ১০০ দিনের কাজের টাকা এবং প্রধানমন্ত্রী আবাসের বরাদ্দ আটকে রয়েছে তৃণমূল এবং বিজেপির বোঝাপড়ায়। 

সোমবার, ২ অক্টোবর থেকে দিল্লির রাজঘাটে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ চালুর দাবিতে ধর্ণায় বসার কথা ঘোষণা করেছিল তৃণমূল। ধর্ণা ৩ অক্টোবর অবধি চলার কথা। নেতৃত্বে সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জি।  কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ করলেও, দিল্লির বিমানে চড়ার আগে অভিষেককে সংবাদমাধ্যমের সামনে বলতে শোনা যায়, ‘‘দুর্নীতি হলেও হয়ে থাকতে পারে।’’ দুর্নীতি মেনে নিলেও, ‘ভাইপোসাংসদের দাবি ছিল, দুর্নীতি আটকানোর দায় কেন্দ্রের। কয়েকজনেরদুর্নীতির জন্য গোটা গ্রাম বাংলাকে শাস্তি দেওয়া যায় না। 

প্রশ্ন হলো, গরিব মানুষকে বঞ্চিত করে তৃণমূল কর্মীরা অন্যায় ভাবে প্রকল্পের সুবিধা নিলেও, টাকা নয়ছয় করলে রাজ্যের সরকারই ব্যবস্থা নেবে না কেন? কেন্দ্রের তরফে বিভিন্ন সরকারি পর্যবেক্ষক পাঠালেও অপরাধীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা বিজেপি সরকার নেয়নি।

সোমবার রাজঘাটে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে আন্দোলনশুরু করে তৃণমূল। অভিষেক সদলবলে ধর্ণায় বসার কিছু পরেই শুরু হয় দিল্লি পুলিশের তৎপরতা। পুলিশি নিপীড়নের প্রতিবাদে মাঝপথে সাংবাদিক সম্মেলন থামিয়ে দিতেও দেখা গিয়েছে অভিষেককে। 

কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিং পরে বলেছেন, ‘‘বিপুল দুর্নীতির তদন্তের দায়িত্ব সিবিআইকে দেওয়ার সময় এসে গিয়েছে। ২৫ লক্ষ ভুয়ো জব কার্ড তৈরি হয়েছে।’’ আবার অভিষেক দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ‘‘তৃণমূল আপনার মাটিতে দাঁড়িয়ে আপনাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে যাচ্ছে।’’ গিরিরাজের বক্তব্য প্রসঙ্গে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘তদন্ত হতে পারে তবে আদালতের পর্যবেক্ষণে হবে। 

সিপিআই(এম) এবং বামপন্থীরা স্পষ্ট করেই বলছেন যে তৃণমূলের অপরাধে গরিব মানুষকে শাস্তি দিচ্ছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় আইন অনুযায়ী ১০০ দিনের কাজের টাকা বকেয়া রাখতে পারে না কেন্দ্র। কিন্তু দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দেড় বছরের বেশি সময় ধরে বাংলার প্রাপ্য টাকা বকেয়া রেখেছে কেন্দ্র। দুর্নীতির অভিযোগ তুললেও, ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি কেন্দ্রীয় সরকারকে। গিরিরাজ এতদিন কী করছিলেন সেই প্রশ্নও তুলেছেন তাঁরা। বামপন্থীরা মনে করিয়েছেন যে নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআই বা ইডি’র তদন্তে ঢিলেমি ধরা পড়ে গিয়েছে আদালতেও।  

রাজ্যে গ্রাম জাগাও চোর তাড়াওকর্মসূচি নিয়েছিল সিপিআই(এম)। বহু জায়গায় আবাস যোজনা এবং একশো দিনের বকেয়ার দাবিতে আন্দোলবে শামিল হয়েছেন গরিব মানুষ। তার পর কেন্দ্রীয় দল পাঠানো শুরু করে বিজেপি। কাজের কাজ হয়নি। তৃণমূল কেন্দ্রের বকেয়ার দাবি তুলছে। বাংলার মানুষ বঞ্চিতই রয়েছে। এখন খেতমজুর আন্দোলনে সারা রাজ্যে একশো দিনের কাজের দাবিতে ৪-ক ফর্ম ভরার আন্দোলনে নেমেছে। গ্রামে জমে রয়েছে ক্ষোভ। তারই মধ্যে বঞ্চনার দায় ঠেলাঠেলি নাটকের মঞ্চ হয়ে রইল এদিনের দিল্লি। 

Comments :0

Login to leave a comment