Prakash karat

ত্রিপুরার ভোট দেশের গণতন্ত্র রক্ষার লড়াই: কারাত

জাতীয়

Prakash karat

রাহুল সিনহা: আগরতলা

ত্রিপুরায় এবারের নির্বাচন কোনও সাধারণ নির্বাচন নয়। এখানে গত ৫ বছর ধরে গণতন্ত্রকে  হত্যা করা হয়েছে,  জনতার গণতান্ত্রিক অধিকারের ওপর বর্বর হামলা হয়েছে, বিরোধী দলগুলিকে কাজ করতে দেওয়া হয়নি। সেই প্রেক্ষাপটেই হচ্ছে এই নির্বাচন।  ১৬ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন স্থির করবে ত্রিপুরায় গণতন্ত্র বেঁচে থাকবে কি না।  এখানে সংবিধান প্রদত্ত জনগণের মৌলিক অধিকারগুলির অস্তিত্ব থাকবে কি না, তাও এই নির্বাচনেই স্থির হবে। এই নির্বাচন তাই শুধু ত্রিপুরার নয়, এটা দেশের সংবিধান ও গণতন্ত্র রক্ষার নির্বাচন।

শনিবার বড়জলা কেন্দ্রের বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস সমর্থিত সিপিআই(এম) প্রার্থী সুদীপ সরকারের সমর্থনে এক নির্বাচনী জনসভায় এ কথা বলেছেন সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো সদস্য প্রকাশ কারাত। 
প্রকাশ কারাত বলেন, ডাবল ইঞ্জিন সরকার আসলে ডাবল শোষণের সরকার। কেন্দ্রের মোদী সরকার একদিকে সংবিধান ও গণতন্ত্রের ওপর আক্রমণ করছে অন্যদিকে দেশের বৃহৎ পুঁজিপতিদের স্বার্থে  কাজ করছে। আর রাজ্যের বিজেপি সরকার ত্রিপুরায় গণতন্ত্রের ওপর হামলা চালাচ্ছে, লুটপাট করছে, হিংসা এবং আতঙ্ক ছড়িয়েছে। গত ৫ বছর আপনারা এই ডাবল শোষণের শিকার।

আদানি কাণ্ডের প্রসঙ্গ তুলে কারাত বলেন, আদানির সম্পত্তি গত এক সপ্তাহে ১১ লাখ কোটি থেকে কমে ৫ লাখ কোটি হয়ে গেছে। এ নিয়ে মোদীর মুখে তালা। লোকসভায় রাহুল গান্ধী আদানি এবং মোদীর সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন।  তার জবাবে মোদী লোকসভা এবং রাজ্যসভায় ৮০ মিনিট ধরে বক্তৃতা দিয়েছেন।  কিন্তু আদানির নামও উচ্চারণ করছেন না। ২০১৪-তে আদানির সম্পত্তি ছিল ৫০ হাজার কোটি টাকা।  মোদীর ৮ বছরে তা বেড়ে ১১ লক্ষ কোটি টাকা হয়েছে। এটাই বিজেপি এবং মোদী সরকারের আসল চেহারা। আরএসএসের সাম্প্রদায়িক রাজনীতি আর বৃহৎ পুঁজিপতিদের সঙ্গে বিজেপি’র  আঁতাতের নাম বিজেপি সরকার। ত্রিপুরায় গণতন্ত্র রক্ষার লড়াই ভারতের গণতন্ত্র রক্ষার লড়াই থেকে আলাদা নয়। সংবিধান, গণতন্ত্র,সমস্ত সাংবিধানিক সংস্থার ওপর হামলা করে এদের অকেজো করে এক স্বৈরশাসন কায়েম করতে চাইছে। তারই তীব্র চেহারা আমরা ত্রিপুরায় দেখছি। 
কারাত বলেন,  আজ রাজ্যের জাতি উপজাতি সব অংশের মানুষ সাহসের সাথে প্রচারে অংশ নিচ্ছেন। এর থেকে স্পষ্ট তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যাই ঘটুক,আমরা আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকারকে রক্ষা করবোই। ভোট দেবার সাংবিধানিক, মৌলিক অধিকার কেড়ে নিতে দেবো না। কারাত বলেন, আমি প্রত্যয়ী, আপনারা সবাই একসাথে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে যাবেন। বিজেপি কোটি কোটি টাকা ছড়াবে। কিন্তু আমি নিশ্চিত ওরা যত কোটি টাকাই খরচ করুক, যত ষড়যন্ত্রই করুক, ত্রিপুরার জনগণের ঐক্যবদ্ধ শক্তির সামনে ওদের সব চক্রান্ত ব্যর্থ হবে। এই নির্বাচনে ওরা হারবে।


এদিন বক্সনগরে নির্বাচনী সমাবেশে সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম বলেন, মোদীর মতো মিথ্যাচারী প্রধানমন্ত্রী ভারত কখনও দেখেনি। সংসদে আদানি নিয়ে প্রশ্ন উঠলে তার কোনও উত্তর নেই, রাহুল গান্ধীর পদবি নিয়ে প্রশ্ন তুললেন। এরাই দেশপ্রেমের নতুন পাঠ দিচ্ছে। এক অংশের মানুষকে অন্যদের বিরুদ্ধে লড়িয়ে দিতে চাইছে। বৈচিত্রের ভারতে বিরোধ বাধাতে চাইছে। এনআরসি, এনপিআর-এর নামে বাংলাভাষী উচ্ছেদ চলছে। আসামে হচ্ছে, কর্ণাটকে- নয়ডায় হয়েছে। বুলডোজার দিয়ে মানুষের ঘর ভাঙছে, যে ঘর বানাতে একটা মানুষের সারা জীবন চলে যায়। দাঙ্গাবাজরা আগুন লাগানোর খেলা খেলছে। এদেরই সাঙ্গোপাঙ্গরা ত্রিপুরায় মানুষের ওপরে আক্রমণ নামিয়ে এনেছে। পালটা মানুষের ঐক্যও তৈরি হয়েছে।

 

Comments :0

Login to leave a comment