Borjora

বড়জোড়ায় ঝলসে যাওয়া ২ শ্রমিকের মৃত্যু

রাজ্য

মারা গেলেন দুর্ঘটনায় আহত স্পঞ্জ আয়রন কারখানার দুই শ্রমিক। মঙ্গলবার সকালে বাঁকুড়া বড়জোড়ার ঘুটগোড়িয়ার স্পঞ্জ আয়রন কারখানায় যে দুর্ঘটনায় ঘটে তাতে এই ২ শ্রমিক গুরুতর জখম হন। বুধবার সকালে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। মৃতরা হলেন রমেশ কুমার (২৬) ও মহম্মদ আজিম আলি (৩২)। এঁদের দু’জনেরই বাড়ি বিহারে। এই ঘটনায় আহত আরও যে ৪ শ্রমিক ঐ হাসপাতালে ভর্তি আছেন, তাঁদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে। ক্ষুব্ধ শ্রমিকদের অভিযোগ, এরকম দুর্ঘটনা এবং প্রাণহানি প্রায়ই ঘটে বড়জোড়ার বেশ কিছু কারখানায়। অথচ কোনও হেলদোল নেই কারখানা মালিকের। 
এই মৃত্যুর খবর বড়জোড়ায় আসার পর ফের আতঙ্ক শুরু হয়েছে বড়জোড়া এলাকার অন্যান্য কারখানাগুলিতে। কারণ বেশির কারখানাতেই শ্রমিকদের কাজের নিরাপত্তার বিষয়ে কোনও নজর দেওয়া হয় না বলে অভিযোগ। প্রতিবছরই বেশ কয়েকজন করে শ্রমিক প্রাণ হারান কারখানা দুর্ঘটনায়। তাঁদের মধ্যে আবার বেশিরভাগই ঠিকা শ্রমিক। উল্লেখ্য, যে দু’জন বুধবার মারা গেছেন তাঁরাও ছিলেন ঠিকা শ্রমিক। মঙ্গলবার বড়জোড়ার ঘুটগোড়িয়ার একটি স্পঞ্জ আয়রন কারখানায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। এই দুর্ঘটনায় ১৭ জন শ্রমিক আহত হন। তাঁদের মধ্যে ৬ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে পড়ে। দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় সে সময়ে। তাঁদের মধ্যেই ২ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে এদিন। 
জানা গেছে মঙ্গলবার সকালে ওই স্পঞ্জ আয়রন কারখানায় লোহা গলিয়ে একটি ল্যাডেলে চাপিয়ে তা যখন ছাঁচ তৈরির জায়গায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, সে সময়ে ল্যাডেলের তার ছিঁড়ে প্রায় ফুট দশেক নিচে পড়ে সেটি। শ্রমিকরা সেখানে কর্মরত ছিলেন, তাঁদের ওপর ১৬৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের সেই গলানো লোহা এসে পড়ে। এতে ৫ জন ঝলসে গিয়েছেন। বাকিরা পুড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন। এই ঠিকা শ্রমিকরা বেশিরভাগই ভিনরাজ্যের বাসিন্দা। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে সিআইটিইউ নেতৃত্ব ও কর্মীরা পৌঁছান ঘটনাস্থলে। কারখানার শ্রমিকদের বক্তব্য, কারখানার ভেতরে কোনই নিরাপত্তা নেই। শ্রমিকের আহত হওয়া বা মৃত্যু হওয়া যেন গা-সহা হয়ে গেছে কারখানা মালিকের কাছে। এর আগেও এই বড়জোড়ার বিভিন্ন কারখানার একাধিক প্রাণহানি ঘটেছে নিরাপত্তার অভাবে। কোনও হেলদোল নেই কর্তৃপক্ষের। তা যদি থাকতো তাহলে এভাবে প্রাণ যেত না শ্রমিকদের।

Comments :0

Login to leave a comment