১৭ দফা দাবিকে সামনে রেখে ফের একবার লং মার্চে সামিল হলেন মহারাষ্ট্রের কৃষকরা। সারা ভারত কৃষক সভার নেতৃত্বে সোমবার নাশিক থেকে শুরু হয়েছে ১০ হাজার কৃষকের মিছিল। মিছিল এগোবে মুম্বই অবধি। সেখানে সাধারণ মানুষ এবং সরকারের সামনে মহারাষ্ট্রের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের কৃষকদের দুর্দশার কথা তুলে ধরা হবে।
কৃষকসভা জানিয়েছে, এই লং মার্চের মূল দাবি, মহারাষ্ট্র সরকারকে পেঁয়াজের দামে সহায়ক মূল্য দিতে হবে।  একইসঙ্গে তুলো, সোয়াবিন, তুর ডাল, দুধ এবং হিরদা’র মতো খাদ্য পণ্যেও সহায়ক মূল্যের দাবি জানিয়েছেন কৃষকরা। প্রসঙ্গত, মহারাষ্ট্রের কৃষকরা পেঁয়াজের জন্য কুইন্টাল পিছু ২ হাজার টাকা সহায়ক মূল্য ঘোষণার দাবি জানাচ্ছে।
সহায়ক মূল্যের পাশাপাশি কৃষি ঋণ মুকুবের দাবিও জোরালো ভাবে তুলে ধরছে কৃষকসভা। একইসঙ্গে বিদ্যুৎ বিল মুকুব এবং দিনে কমপক্ষে ১২ ঘন্টা নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগের দাবিও জানিয়েছেন কৃষকরা। মহারাষ্ট্রের কৃষকরা অনিয়মিত বৃষ্টিপাত সহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে নিয়মিত ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। সেই প্রশ্নেও ক্ষতিপূরণের দাবি জানাচ্ছেন কৃষকরা।
                        
                        
এর পাশাপাশি জমির অধিকারের প্রশ্নেও কৃষকদের সংগঠিত করতে পেরেছে কৃষকসভা। কৃষকসভা নেতৃবৃন্দের বক্তব্য, মহারাষ্ট্রে বিপুল পরিমাণ কৃষিজমি বিভিন্ন মন্দির কর্তৃপক্ষ কিংবা ওয়াকফ বোর্ডের নামে নথিভুক্ত। বংশ পরম্পরায় চাষ করলেও সেই জমিতে কৃষকের কোনও অধিকার নেই। এই অসাম্যের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করেছে কৃষকসভা। লংমার্চ থেকে দাবি উঠেছে, মধ্যসত্ত্ব ভোগীদের উৎখাত করে জমির আইনি অধিকার তুলে দিতে হবে কৃষকদের হাতে। 
এছাড়াও জমি অধিগ্রহণে কেরালা ফর্মুলায় ক্ষতিপূরণ, কৃষকদের মাসে ৪ হাজার টাকা পেনশন, সরকারি কর্মচারীদের জন্য পুরনো পেনশন স্কিম পুনরায় চালু করা, সরকারি শূন্যপদ পূরণের মতো বিষয়গুলিকেও ১৭ দফা দাবির অন্তর্ভুক্ত করেছেন কৃষকরা। 
কৃষকসভা জানিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যা থেকেই নাসিক শহরের উপকন্ঠে কৃষকরা জমায়েত করতে শুরু করেন। সোমবার সকালে নাসিকের ডিন্ডোরি চৌক থেকে লং মার্চ শুরু হয়। মিছিল থেকে রাস্তায় পেঁয়াজ, আলু, বেগুনের মতো সবজী ফেলে বিক্ষোভ দেখান কৃষকরা।
                        
                        
এই লংমার্চের নেতৃত্ব দিচ্ছেন কৃষক সভার সর্বভারতীয় সভাপতি অশোক ধাওয়ালে, মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন সিপিআই(এম) বিধায়ক জেপি গাভিট, উমেশ দেশমুখ, উদয় নারকার, অজয় বুরান্ডে, সুভাষ চৌধুরী, মারিয়ম ধাওয়ালে প্রমুখ।
লং মার্চ শুরু হতেই নড়েচড়ে বসেছে মহারাষ্ট্রের বিজেপি জোট সরকার। রবিবার রাতেই কৃষকসভার প্রতিনিধিদের সঙ্গে একপ্রস্থ বৈঠকে বসেন মহারাষ্ট্র মন্ত্রীসভার বর্ষীয়ান সদস্য দাদা গাভিট। মঙ্গলবার বেলা ৩টের সময় রাজ্য বিধানসভায় কৃষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করবেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে এবং উপ-মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডনবিশ। সোমবার মহারাষ্ট্র সরকারের তরফে পেঁয়াজের জন্য কুইন্টাল প্রতি ৩০০ টাকা সহায়ক মূল্যেরও ঘোষণা করা হয়েছে। যদিও কৃষক নেতৃত্বের স্পষ্ট দাবি, সরকারের তরফ থেকে গ্রহনযোগ্য প্রস্তাব না মেলা অবধি এই লং মার্চ চলবে।
                        
                        
                                        
                                    
                                
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
Comments :0