সাত্যকি রায়
দেশের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন তার ইন্টারিম বাজেট বক্তৃতার শুরুতে গত দশ বছরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ভারতের অর্থনীতিতে এক ‘গভীর ইতিবাচক রূপান্তর’ ঘটেছে বলে উল্লেখ করেছেন। শুধু তাই নয় তার বক্তৃতায় তিনি একথাও উল্লেখ করেন যে তাদের সরকার গরিব মহিলা যুব এবং অন্নদাতা অর্থাৎ কৃষকদের প্রতি গভীর ভাবে দায়বদ্ধ। একথা সহজেই অনুমেয় যে এবছর যেহেতু নির্বাচন এপ্রিল-মে মাসে হতে চলেছে তাই স্বাভাবিকভাবেই সরকার পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করেনি এবং সে কারণেই কোনও গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত সিদ্ধান্ত সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা সম্ভব ছিল না। নির্বাচিত নতুন সরকার জুন-জুলাই মাসে আবার পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করবে।
অর্থনীতির গভীর ইতিবাচক রূপান্তরের যে দাবি অর্থমন্ত্রী পেশ করেছেন তার সাথে বাস্তবতার বিশেষ একটা সম্পর্ক নেই। সরকারের তথ্য বিভাগ ৫ জানুয়ারি ২০২৪, ২০২৩-২৪ সালের আর্থিক অবস্থার একটি খতিয়ান প্রকাশ করেছে। প্রতিবছর সরকারের পক্ষ থেকে বিগত বছরের অর্থনীতি ও জাতীয় আয় কিভাবে চলেছে তার একটি পরিমাপ প্রকাশ করা হয় যাকে ফার্স্ট অ্যাডভান্স এস্টিমেট বলা হয়ে থাকে। পূর্ণাঙ্গ বাজেটের আগের দিন সরকার ইকনমিক সার্ভে প্রকাশ করে থাকে, যাতে বিগত বছরের উৎপাদন ও অন্যান্য প্রবণতাগুলির একটি পূর্ণাঙ্গ ছবি পাওয়া যায়। এবছর যেহেতু ইন্টারিম বাজেট ছিল তাই সরকার আর্থিক সমীক্ষা রিপোর্ট প্রকাশ করেনি। সরকারের প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী চলতি মূল্যে আমাদের দেশের জিডিপি’র পরিমাণ ২৯৬.৬ লক্ষ কোটি টাকা যা ২০২২-২৩ আর্থিক বছরে ছিল ২৭৩.১ লক্ষ কোটি টাকা। সরকারের হিসাব অনুযায়ী চলতি মূল্যে ভারতের জাতীয় আয় ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরে বৃদ্ধি পেয়েছে ৮.৯ শতাংশ হারে। অথচ ২০২২-২৩ আর্থিক বছরে চলতি মূল্যে ভারতের জাতীয় আয় বৃদ্ধি পেয়েছিল ১৬.১ শতাংশ হারে। সরকারের হিসাব অনুযায়ী প্রকৃত মূল্যে ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরে জাতীয় আয় বৃদ্ধির হার ৭.৩ শতাংশ। চলতি মূল্যে ৮.৯ শতাংশ বৃদ্ধির হার, প্রকৃত মূল্যে ৭.৩ শতাংশ হতে পারে তখনই যদি মুদ্রাস্ফীতির হার ১.৬ শতাংশ হয়। অথচ byeসরকারের তথ্য অনুযায়ী খুচরা মূল্যের মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল ৫.৬৯ শতাংশ যা গত চার মাসে সর্বাধিক এবং খাদ্যদ্রব্যে মুদ্রাস্ফীতির হার ৮.৭ শতাংশ। অর্থাৎ এই মুদ্রাস্ফীতির হার অনুযায়ী বর্তমান আর্থিক বছরের শেষে যে বৃদ্ধির হার আশা করা হচ্ছে তা বাস্তবায়িত হওয়া কঠিন।
দেশের অর্থনীতির চাহিদার দুটি প্রধান স্তম্ভ— একটি হলো ভোগ ব্যয় এবং অপরটি হলো বিনিয়োগ। সরকারের তথ্য অনুযায়ী বর্তমান আর্থিক বছরে ব্যক্তিগত ভোগ ব্যয় বৃদ্ধির হার ৪.৪ শতাংশ যা চলতি মূল্যে জাতীয় আয় বৃদ্ধির হার অর্থাৎ ৮.৯ শতাংশের চেয়ে অনেক কম। শুধু তাই নয় বর্তমান বছরের ভোগ ব্যয় বৃদ্ধির হার ২০২২-২৩ আর্থিক বছরের ভোগ ব্যয় বৃদ্ধির হার ৭.৫ শতাংশরেও কম। অর্থাৎ দেশের আর্থিক বৃদ্ধি যে হারে ঘটছে বলে মনে করা হচ্ছে মানুষের গড় ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধির হার তার চাইতে অনেক কম। চাহিদার অপর গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো বিনিয়োগ। এ কথা ঠিক যে আমাদের দেশে গ্রস ফিক্সড ক্যাপিটাল ফর্মেশন বা বিনিয়োগ বৃদ্ধির হার বর্তমান আর্থিক বছরে ১০.৩ শতাংশ। এর মূল কারণ অবশ্য সরকারের মূলধনী খাতে গত তিন বছর ধরে খরচ বৃদ্ধি। এই খরচ মূলত রাস্তা নির্মাণ ও পরিকাঠামো নির্মাণে বিনিয়োগ করা হয়েছে। এর ফলস্বরূপ বর্তমান আর্থিক বছরে আমাদের দেশের নির্মাণ শিল্পে বৃদ্ধির হার ১০.৭ শতাংশ হয়েছে। কিন্তু স্থায়ী আর্থিক বিনিয়োগ মূলত নির্ভর করে ব্যক্তিগত কর্পোরেট সংস্থার বিনিয়োগের উপরে। সরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেলেও কর্পোরেট ক্ষেত্রের বিনিয়োগ বৃদ্ধির হার এখনও যথেষ্ট শ্লথ। বর্তমান আর্থিক বছরের শেষ দুই কোয়ার্টারের হিসাব দেখলে দেখা যাবে যে ব্যক্তিগত সংস্থার ঘোষিত প্রকল্পের সংখ্যা আগের বছরগুলির গড় কোয়ার্টার পিছু ঘোষিত প্রকল্পের সংখ্যার তুলনায় প্রায় অর্ধেক হয়ে গেছে। ব্যক্তিগত পুঁজিপতিরা তাদের লাভের পরিমাণ গত কয়েক বছরে অনেকটা বাড়িয়ে নিতে পারলেও তারা নতুন প্রকল্পে বিনিয়োগে ইচ্ছুক নয়। ফাইন্যান্সিয়াল সেক্টরে লাভের হার বেশি হওয়ার কারণে উৎপাদন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ কমেছে। বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থাগুলি বিপুল পরিমাণ লাভ করলেও তাদের মোট আয় বৃদ্ধির হার কমে আসছে। এর প্রধান কারণ দুটি। প্রথমত দেশে উৎপাদন ক্ষেত্রে উৎপাদন ক্ষমতা ব্যবহারের গড় হার কমে হয়েছে ৭৩.৬ শতাংশ। অর্থাৎ যে উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে তারই একটা বড় অংশ অব্যবহৃত থেকে যাচ্ছে। বাজারে চাহিদার অভাব থাকার কারণে উৎপাদন ক্ষমতা পূর্ণ মাত্রায় ব্যবহৃত হচ্ছে না। এমত অবস্থায় পুঁজিপতিরা নতুন উৎপাদন ক্ষমতা তৈরির জন্য বিনিয়োগে উৎসাহী নয়। দ্বিতীয়ত, মুদ্রাস্ফীতি রোধ করার উদ্দেশ্যে বারবার ব্যাংকের রেপো রেট বৃদ্ধি করার ফলে ব্যাংক ঋণের জন্য সুদের হার বেড়েছে এবং এর ফলস্বরূপ বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ব্যাংকে সুদের হার বাড়ার ফলে অন্যদিকে ইএমআই এর খরচ বেড়েছে যার ফলে ক্রেডিট নির্ভর ভোগব্যয়ও আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। এইসবের সম্মিলিত ফলস্বরূপ অর্থনীতিতে যে চাহিদার সঙ্কট তৈরি হয়েছে তাকে মোকাবিলা করাই ভারতের অর্থনীতির প্রধান চ্যালেঞ্জ। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধির হার কম হওয়া, উৎপাদন ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত লাভের সম্ভাবনা দেখতে না পাওয়ার কারণে নতুন প্রকল্পে বিনিয়োগে পুঁজিপতিদের নিরুৎসাহ-এই সবই বর্তমান ভারতের কর্মহীনতার সঙ্কটকে গভীর করে তুলেছে। মনে রাখা দরকার যে, বিকশিত ভারতের আখ্যান যখন তুলে ধরা হচ্ছে তখন আমাদের দেশে বেকারির হার গড়ে ৬.৬ শতাংশ যা আমাদের অতীতের গড় বেকারির হারের তুলনায় অনেক বেশি। সিএমআই প্রদত্ত সর্বশেষ মাস ভিত্তিক কর্মসংস্থানের তথ্য অনুযায়ী ২০২৪ এর জানুয়ারি মাসে দেশের শহরাঞ্চলে বেকারির হার ছিল ৮.৮৬ শতাংশ এবং গ্রামাঞ্চলে ৫.৩৮ শতাংশ। দেশের যুব ও মহিলাদের জন্য সরকারের নাকি বিশেষ নজর রয়েছে। ২৫ থেকে ২৯ বছরের যুবদের মধ্যে বেকারির হার ১১.৩ শতাংশ এবং শহরাঞ্চলে মহিলাদের মধ্যে বেকারির হার ১৯.৩৬ শতাংশ। দেশে এতটাই বিকশিত যে জানুয়ারি ২০২৪এর তথ্য অনুযায়ী দেশের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর যুবদের মধ্যে বেকারির হার ১৫.৩৮ শতাংশ! বৈষম্যের হার যে ক্রমবর্ধমান তা সহজেই একটি তথ্যের মধ্যে দিয়ে বোঝা যায়। দেশের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির হার ৬.৪ শতাংশ অথচ মাথাপিছু ভোগ ব্যয় বৃদ্ধির হার ৩.৫শতাংশ। যেহেতু আয়ের বেশিরভাগটাই বড় লোকেদের আয়ত্তে চলে যাচ্ছে তাই মাথাপিছু ভোগব্যয় বৃদ্ধির হার মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির তুলনায় অনেক কমে আসছে। এই প্রবণতাগুলি গণনার মধ্যে রাখলে আর্থিক বৃদ্ধির যে সম্ভাবনার কথা সরকারি তথ্যে অনুমান করা হয়ছে তা শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়িত করা সম্ভব হবে কিনা সে প্রশ্নে সন্দেহের অবকাশ থেকে যায়। মনে রাখা দরকার প্রতি আর্থিক বছরের শেষভাগে সরকার জাতীয় আয় বৃদ্ধির যে এস্টিমেট দিয়ে থাকে তা প্রথাগতভাবে প্রায় পাঁচ ছয় বার রিভিশন হয়ে প্রকৃত বৃদ্ধির হারে পৌঁছানো হয়। ২০১৮-১৯, ২০১৯-২০ ও ২০২১-২২ এই সব বছরগুলিতে সরকার বছরের শেষে যে বৃদ্ধির হারের এস্টিমেট রেখেছিল বৃদ্ধির হার শেষ পর্যন্ত তার চাইতে কম হয়েছিল। ফলে চলতি বছরে সরকারের প্রদত্ত বৃদ্ধির হারের তথ্য শেষ পর্যন্ত প্রশ্নাতীতভাবে কার্যকরী হবে এরকম ভাবার কোনও কারণ নেই।
সরকার এবছরের বাজেট পেশ করার সময় চলতি আর্থিক বছরের যে হিসাব নিকাশ পেশ করেছে তাতে দেখা যাচ্ছে যে সরকার গত বছরে বাজেট পেশ করার সময় মোট যে রেভিনিউ আদায় হবে বলে ধরেছিল তার থেকে আর্থিক বছরের শেষে অর্থ আদায় বেশি হবে প্রায় ৬৭.৪ হাজার কোটি টাকা। অথচ সরকার আর্থিক ঘাটতি কমানোর জন্য সরকারি ব্যয় গত বছরের বাজেটে যা বলেছিল তার থেকে ৫২ হাজার কোটি টাকা কম ব্যয় করেছে। অর্থাৎ জাতীয় আয়ের সাপেক্ষে আমাদের দেশের মোট ব্যয় গত আর্থিক বছরের তুলনায় চলতি আর্থিক বছরে কমে যাবে। অন্যভাবে বললে দেখা যাবে সরকারের আয় গত আর্থিক বছরের তুলনায় প্রায় ১৩.৩ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেলেও ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে ৭.০৯ শতাংশ হারে। বাজেট বরাদ্দের সাপেক্ষে সরকারের মোট খরচ কমিয়ে আনার আসল উদ্দেশ্য ছিল আর্থিক ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে রাখা। সেই লক্ষ্যে সরকার বর্তমান আর্থিক বছরের শুরুতে বাজেটে বিভিন্ন খাতে যে বরাদ্দ করেছিল তা বছরের শেষে রিভাইসড এস্টিমেট দেখলে দেখা যাবে অনেক ক্ষেত্রেই ব্যয় তার চাইতে কমান হয়েছে। সরকার চলতি আর্থিক বছরের বাজেটে মূলধনী খাতে ব্যয় করার জন্য যে বরাদ্দ করেছিল রিভাইসড এস্টিমেটে দেখা যাবে আসলে ব্যয় কমেছে ৫০.৭ হাজার কোটি টাকা। অন্যদিকে ২০২২-২৩ আর্থিক বছরের প্রকৃত ব্যয়ের তুলনায় ২০২৩-২৪ সালে রিভাইসড এস্টিমেটে সারে ভর্তুকির পরিমাণ কমেছে ৬২ হাজার কোটি টাকা, খাদ্যে ভর্তুকি কমেছে ৬০.৫ হাজার কোটি টাকা। চলতি বছরের বাজেট বরাদ্দের তুলনায় শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যয়ের পরিমাণ রিভাইসড এস্টিমেট অনুযায়ী ৭৫৩৯ কোটি টাকা কম। একইভাবে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বাজেটে বরাদ্দ পরিমাণের তুলনায় চলতি বছরে ব্যয় হবে ৯৭৩৫ কোটি টাকা কম। সরকার অন্নদাতাদের কথা বক্তৃতায় উল্লেখ করলেও কৃষি ক্ষেত্রে বাজেটে বরাদ্দের তুলনায় চলতি আর্থিক বছরের শেষে ব্যয়ের পরিমাণ কমবে ৩৬৮১ কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরে কৃষি ও কৃষি সম্পর্কিত ক্ষেত্রে মূল্য সংযোজনের হার হবে ২ শতাংশ, আগের তিন বছরের গড় ধরলে কৃষি ক্ষেত্রে মূল্য সংযোজন এর গড় ছিল ৪ শতাংশ। আমাদের দেশের ৬৫ ভাগ মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল এবং আমাদের দেশে কৃষিতে উৎপাদনশীলতা চীনের কৃষি উৎপাদনশীলতার এক তৃতীয়াংশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি উৎপাদনশীলতার তুলনায় এক শতাংশ। কৃষিতে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির প্রক্রিয়া অনেকাংশে নির্ভর করে সরকারি বিনিয়োগের উপরে যা উদারীকরণের তিন দশক ধরে ক্রমাগত কমে এসেছে।
আগামী বছরের অর্থাৎ ২০২৪-২৫ আর্থিক বছরের বাজেট বরাদ্দ লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে এমএনরেগা প্রকল্পে বরাদ্দের পরিমাণ ২০২২-২৩ আর্থিক বছরের প্রকৃত ব্যয়ের তুলনায় কমেছে ৪৮০৬ কোটি টাকা। প্রধানমন্ত্রী আয়ুষ্মান ভারত যোজনা চলতি আর্থিক বছরে যে বরাদ্দ করা হয়েছিল তার রিভাইসড এস্টিমেটে প্রায় অর্ধেক হয়ে যায় এবং আগামী বছরের বাজেট বরাদ্দ এবছরের বরাদ্দর চেয়ে কম রাখা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনাতেও গত বছরের বাজেটে যে বরাদ্দ করা হয়েছিল রিভাইসড এস্টিমেটে ব্যয়ের পরিমাণ তার চেয়ে ২৫.৫ হাজার কোটি টাকা কম। অর্থাৎ বর্তমান আর্থিক বছরে সরকারের আয় বৃদ্ধি পেলেও গরিব মানুষের জীবন জীবিকার সঙ্গে যুক্ত সমস্ত বরাদ্দ ও প্রকল্পে ছাঁটাই করা হয়েছে জিডিপি’র সাপেক্ষে আর্থিক ঘাটতি কমিয়ে আনার স্বার্থে। বিদেশি বিনিয়োগকারী ও রেটিং এজেন্সিগুলিকে খুশি করার জন্য বর্তমান সরকার এতটাই দায়বদ্ধ যে নির্বাচনের বছরেও গরিব ও মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য বরাদ্দগুলিকে ছাঁটাই করতে তারা বিন্দুমাত্র কুণ্ঠা বোধ করেনি।
এবারের ইন্টারিম বাজেট দেখলে বোঝা যায় যে ক্ষমতাসীন সরকার নির্বাচনের বছরেও মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ ছাঁটাই করার সাহস দেখাতে পারছে। এর প্রধান কারণ হলো তারা মনে করছে মানুষের নির্বাচনী মতামতকে অর্থনৈতিক সমস্যা ও চাওয়া পাওয়া থেকে বিচ্ছিন্ন করার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। ভারতীয় জনতা পার্টি সম্ভবত মনে করছে যে বাজেট ও তার অভিঘাত এবং ক্রমবর্ধমান বৈষম্য ও বেকারির সমস্যা থেকে সহজেই মানুষের দৃষ্টি ধর্মীয় মেরুকরণ ও সে সম্পর্কিত পরিচয়ের সংহতি দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া সম্ভব। শাসক দল সরকারি নীতি নির্ধারণ ও সে সম্পর্কিত জনসমর্থন আদায়ের প্রক্রিয়াকে সাধারণ মানুষের জীবন জীবিকা থেকে বিযুক্ত করার এতটা সাহস দেখাতে পারছে এটা নিঃসন্দেহে দেশের গণতন্ত্রের পক্ষে গভীর বিপদের ইঙ্গিত।
Budget Analysis
জনস্বার্থের উপর আঘাত অব্যাহত গণতন্ত্রের গভীর বিপদের ইঙ্গিত
×
Comments :0