Mouni baba PM Modi

দীর্ঘ ভাষণে আদানি নিয়ে মুখে কুলুপ মোদীর

জাতীয়

প্রশ্ন ছিল সরাসরি। আদানির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কী। সারা দেশেও মুখ্য আলোচনা সেটিই। অথচ দেশের সংসদে সেই প্রশ্নটিতেই নীরব থাকলেন প্রধানমন্ত্রী। নির্দিষ্ট জবাব এড়িয়ে কংগ্রেসের মেয়াদে দুর্নীতিকে হাতিয়ার করার চেষ্টা চালালেন। 

 

রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ সূচক আলোচনায় বুধবার লোকসভায় বক্তব্য রাখেন নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী সরাসরি প্রশ্ন ছুঁড়েছিলেন যে গৌতম আদানির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কী, দেশকে জানান প্রধানমন্ত্রী। এদিন সংখ্যার জোরে বিজেপি উলটে রাহুলের বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস জমা দেন। মোদীর দল এখনও দাবি করছে, আদানির সঙ্গে দল এবং প্রধানমন্ত্রীর সম্পর্কে ‘প্রমাণ’ মেলেনি।

আদানি নিয়ে সোমবারও সরগরম সংসদ। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন আদানি প্রসঙ্গে বললেও একদমই মুখ খোলেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বুধবার রাজ্যসভার অধিবেশনে যথারীতি বিরোধীদের আক্রমনের নিশানা ছিল আদানি। কিভাবে আদানির সম্পত্তি এতো রাতারাতি বৃদ্ধি পেল প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খারগে। তিনি বলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী ঘনিষ্ঠ শিল্পপতির কোন যাদুবলে সম্পত্তি মাত্র আড়াই বছরে প্রায় ২৩ গুণ বৃদ্ধি পেল?


পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি বলেন ‘২০১৪’এ যার সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ৫০ হাজার কোটি টাকা, ২০১৯’এ তারা বেড়ে হয় ১লক্ষ কোটি টাকা। সেই সম্পত্তিই হঠাৎই কিভাবে ১২ লক্ষ কোটি টাকা হল?’ 
মঙ্গলবারই সংসদে দাড়িয়ে আদানি প্রসঙ্গে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করেন রাহুল গান্ধী। বুধবার সেই আদানি প্রসঙ্গেই প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ শানালেন বিরোধী সাংসদ মল্লিকার্জুণ খারগে। আদানি প্রসঙ্গে মুখ না খোলায় প্রধানমন্ত্রীকে ‘মৌনিবাবা’ বলেও কটাক্ষ করেন তিনি। 

 

মোদী গোটা ভাষণে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন তাঁর প্রধামন্ত্রিত্বের মেয়াদেই দেশ নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির স্লোগান দিয়ে গরমিল আড়ালের চেষ্টা করলেন। সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার বড়াই করলেন যুক্তি এড়াতে। মোদী বললেন, ‘‘কোটি কোটি মানুষের আস্থাই আমার বর্ম। মিথ্যা, অভিযোগ বা কুৎসা কোনও ক্ষতি করতে পারবে না।’’ তিনি বলেছেন, ‘‘কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ’র দশ বছর আসলে দেশের লোকসানের দশ বছর।’‘ বিমানবন্দরের বরাত একের পর এক আদানি গোষ্ঠীকে কেন, প্রশ্ন তুলছেন মানুষ। মোদীর জবাব, ‘‘(কংগ্রেসের) সত্তর বছরে ৭০টি বিমানবন্দর হলে তাঁর ৯ বছরেই ৭০টি বিমানবন্দর হয়েছে।’’ 

 

বিরোধীদের উদ্দেশ্যে তাঁর ব্যঙ্গ, ‘‘ইডি’কে ধন্যবাদ জানানো উচিত আপনাদের। এই সংস্থার জন্য আপনারা এক জায়গায় এসেছেন।’’ কংগ্রেস সাংসদরা পালটা বলেছেন, ইউপিএ’র দশ বছরে বৃদ্ধির গড় তাঁর প্রধানমন্ত্রিত্বে ছুঁতে পারেননি মোদী।’’ ব্যাপক অংশেরই ক্ষোভ কেবল অর্থনীতির কিছু সূচক দেখিয়ে নির্বিচার লুটের পুঁজিকে সমর্থন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এদিন আবার বিরোধীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘যাঁর যেমন রুচি, তেমন আক্রমণ করেছে।’

 

এই প্রসঙ্গে সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী বা মমতা ব্যানার্জিরদের রুচি, সংস্কৃতি নিয়ে প্রশ্ন না তোলাই উচিত। সহযোগীরা যখন দেশজুড়ে ঘৃণাভাষণে চরম উসকানি দেন, প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসে চুপ করে থাকেন মোদী।’

Comments :0

Login to leave a comment