Left front panchayet manifesto

বিকল্প কর্মসূচি সামনে রেখে নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশ করলো বামফ্রন্ট

রাজ্য

দশম পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশ করলো বামফ্রন্ট। সাংবাদিক সম্মেলন করে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, ‘‘১৯৭৭ সালে ২১ জুলাই প্রথম বামফ্রন্ট সরকার যখন গঠন হয় তখন জ্যোতি বসু ঘোষণা করেছিলেন যে, শুধু মহাকরণ থেকে নয় গ্রাম বাংলার পঞ্চায়েত, মিউনিসিপ্যালিটির মাধ্যমে মানুষের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করে সরকার কাজ করবে।’’ বসু বলেন, ‘‘গ্রামীণ উন্নয়নের কর্মসূচি মানুষের সাথে আলোচনা করে করা হতো। গ্রাম পঞ্চায়েত গুলির সাথে পঞ্চায়েত সমিতি একসাথে আলোচনা করে প্রকল্প ঠিক করতো। জনস্বাস্থ্য হোক বা রাস্তা সব কিছু আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করা হতো। এটা ধারা ছিল। কিন্তু রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকার চলে যাওয়ার পর থেকে ধীরে ধীরে সেই ধারা নষ্ট হয়েছে, গঞ্চায়েত এখন করে খাওয়ার জায়গায় পরিণত হয়েছে।’’ 


নির্বাচনী ইস্তাহারে বামফ্রন্ট সরকার পঞ্চায়েত ব্যবস্থার উন্নতির জন্য। গ্রামীণ এলাকার উন্নতির জন্য কী কি কাজ করেছে তা তুলে ধরা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান। বিমান বসু বলেন, ‘‘গ্রামীণ উন্নয়নের জন্য বামফ্রন্ট সরকার যেই যেই কর্মসূচি গ্রহন করেছিল তা আমরা ইস্তাহারে উল্লেখ করেছি। তার সাথে মানুষের কাছে আবেদন করেছি লুঠেরা তৃণমূল এবং সাম্প্রদায়িক বিজেপিকে পরাস্ত করার জন্য।’’
বামফ্রন্ট পরিচালিত পঞ্চায়েতের বিকল্প কর্মসূচি কী হবে তা উল্লেখ করা হয়েছে রাজ্য বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে। শিক্ষা, কৃষি, কর্মসংস্থান, সামাজিক সুরক্ষা সহ সাতটি বিষয়ের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যানের কথায়, ‘‘সাতটি পয়েন্টের মাধ্যমে ইস্তাহারে আমরা তুলে ধরেছি বিকল্প পঞ্চায়েত কী কী কাজ করবে। মানুষের অধিকার যাতে প্রতিষ্ঠা হয় সেই বিষয় আমরা জোর দিয়েছি।’’


তিনি বলেন, ‘‘মানুষ ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। মানুষের ঐক্য তৈরি হচ্ছে দৌরাত্ম বন্ধ করার জন্য।’’
উল্লেখ্য এবারের নির্বাচনী ইস্তেহারে পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য বিশেষ পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে বামফ্রন্ট।
এদিন বিচারপতি সিনহা উলুবেড়িয়া-১নং ব্লকের বিডিও'র বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। সেই বিষয় প্রশ্ন করা হলে বিমান বসু বলেন, ‘‘সঠিক সিদ্ধান্ত। বেমালুম বিকৃত হয়েছে। সব সরকারি আধিকারিকরা এর সাথে যুক্ত রয়েছে তা বলা উচিত হবে না। কিন্তু আধিকারিকদের একাংশ এই বিকৃতির সাথে যুক্ত।’’ 


বিডিওর বিরুদ্ধে ২ জন সিপিআই(এম) প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র বিকৃত করার অভিযোগ উঠেছে। সেই মামলায় বিডিও’র বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সিনহা। আগামী ৭ জুলাই সিবিআইকে তদন্তের রিপোর্ট আদালতে পেশ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সিনহা। সিপিআই(এম) প্রার্থী কাশ্মীরা বিবি, ওমজা বিবির মনোনয়ন পত্র বিকৃত করার অভিযোগ ওঠেছে বিডিও-র বিরুদ্ধে। নথি বিকৃত করার কারণেই স্কুটিনি পর্বে এই দুই প্রার্থীরা নাম বাদ গিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে সিপিআই(এম)’র পক্ষ থেকে।   
গতকাল দাশপুরে সিপিআই(এম) প্রার্থীকে পুলিশ জোর করে তুলে নিয়ে যায় মনোনয়ন প্রত্যাহার করার জন্য। বসু বলেন, ‘‘সরকার না বললে পুলিশ কখনও এই কাজ করতে পারে না। তৃণমূল জানে তারা যদি এই কাজ করতে যায় তাহলে মানুষের রোষের মুখে পড়তে হবে। তাই পুলিশ, সিভিক পুলিশদের এই কাজে ব্যবহার করছে শাসক দল।’’ বিমান বসু আরও বলেন, ‘‘আদালত আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য কাজ করছে। প্রশাসন কোন কিছু করছে না। এটা একটা নির্বাচিত সরকারের জন্য লজ্জার।’’


এদিন রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ ফেসবুকে লিখেছেন যে তিনি বিরোধী শূন্য পঞ্চায়েত চান। সেই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে বিমান বসু বলেন, ‘‘যেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজে বলেন বিরোধী শূন্য দেখতে চান সব কিছু সেখানে তার মন্ত্রী সভার সদস্যের মুখে এই কথা শুনলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।’’ মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘২০১৮ সালে শুভেন্দু (অধিকারী) তৃণমূলের হয়ে বলেছিল বিরোধী শূন্য পঞ্চায়েত হলে পাঁচ কোটি টাকা দেওয়া হবে। মালদা, মুর্শিদাবাদে শুভেন্দুর নেতৃত্বে একের পর এক পঞ্চায়েত বিরোধী শূন্য করা হয়।’’

Comments :0

Login to leave a comment