DYFI

সিঙ্গুরের দায় মমতার, মানুষের রসদে হবে যৌবনের ব্রিগেড

রাজ্য

‘‘সিঙ্গুরের দায় নিতে হবে মমতা ব্যানার্জিকে। ডিনামাইট দিয়ে কারখানা তিনি ভেঙেছেন। জমি চিহ্নিত না করেই তাতে ধান ছড়িয়েছেন, ভেড়ি করেছেন। বাংলার যুবকদের ভবিষ্যৎ শেষ করেছেন। এই দায় তার। রাজ্য জুড়ে ইনসাফ যাত্রা দাবি তুলবে শিল্পায়নের, কর্মসংস্থানের।’’ মঙ্গলবারের সাংবাদিক সম্মেলনে একথা বললেন ডিওয়াইএফআই রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জি।
আগামী ৩ নভেম্বর সংগঠনের ৪৪ তম প্রতিষ্ঠা দিবসের দিন কোচবিহার থেকে শুরু হচ্ছে ইনসাফ যাত্রা। কাজ এবং শিক্ষা সহ সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের সমস্যাকে সামনে রেখে এই ইনসাফ যাত্রা। এদিন মীনাক্ষী মুখার্জি বলেন, ‘‘মমতা ব্যানার্জি ঘটা করে সিঙ্গুরের চাষিদের জমি ফিরিয়ে দিলেন, কিন্তু সেই জমির চরিত্র কি? তার কোন উত্তর নেই। টাটাদের কারখানা হলে রাজ্যের বেকার ছেলে মেয়েরা চাকরি পেতেন। একটা শিল্পকে কেন্দ্র করে রাজ্য জুড়ে আরও অনেক শিল্প তৈরি হতো, সেই সব তিনি শেষ করে দিয়েছেন। ট্রেনিং নেওয়া ছেলে মেয়ে গুলো আজ একটা সাধারণ চাকরি করছে। ভালো ভালো ছেলে মেয়েরা রাজ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে। তাই এর দায় তো ওনাকেই নিতে হবে।’’ তার সংযোজন, ‘‘আমরা একটা কথা বলতে পারি যে, আমরা চাই সিঙ্গুরে কারখানা হোক আর ওই জমিতেই কারখানা হোক।’’ 


দু’মাস গোটা রাজ্য ঘুরে ৭ জানুয়ারি ব্রিগেড সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হবে এই কর্মসূচি। সেই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে ডিওয়াইএফআই কর্মীরা। চলছে বৈঠকি সভা থেকে ছোট বড় কর্মী সভা। সাংবাদিক সম্মেলনে মীনাক্ষী মুখার্জি বলেন, সোমবার কোচবিহারের সীতাইয়ে ডিওয়াইএফআইয়ের প্রচার সভায় হামলা চালায় তৃণমূলের দুষ্কৃতী বাহিনী আক্রান্ত হয় স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। 


কোচবিহারের ঘটনার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের রাজ্যের কয়েকটি জেলায় শাসক দলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে আক্রান্ত হতে হচ্ছে, তার মধ্যে অন্যতম কোচবিহার। তবে ডিওয়াইএফআই একটা কথা স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চায় যে ভয় দেখিয়ে ইনসাফ যাত্রাকে আটকে রাখা যাবে না।’’ তার কথায় তৃণমূলের হামলার বিরুদ্ধে স্থানীয় মানুষজন এবং ডিওয়াইএফআই কর্মীরা পাল্টা প্রতিরোধ তৈরি করে। যার জেরে পিছু হটতে হয় শাসক দলের বাহিনীকে।


নেতৃত্বের কথায় যৌবনের স্পর্ধাকে কোন ভাবেই আটকে রাখা যাবে না। শারদৎসবের সময় আন্দোলনরত চাকরি প্রার্থীদের সাথে গিয়ে দেখা করেন ডিওয়াইএফআই নেতৃবৃন্দ। এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে তাদের কাছে যখন জানতে চাওয়া হয় যে তাদের ডাকা ব্রিগেড সমাবেশে চাকরি প্রার্থীরা থাকবেন কি না সেই প্রশ্নের উত্তরে মীনাক্ষী মুখার্জি বলেন, ‘‘শুধু চাকরি প্রার্থীরা নন, ভিন রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকরাও থাকবেন আমাদের সমাবেশে। সমাজের সব অংশের মানুষকে আমরা বলছি ব্রিগেড সমাবেশে আসার জন্য।’’
তৃণমূল এবং বিজেপিকে আক্রমণ করে যুব নেতৃত্ব বলে, ‘‘তৃণমূল গোটা রাজ্য থেকে লুঠ করছে। ভুয়ো চালকল, কোম্পানি বানিয়ে টাকা লুঠ করছে। আর অন্যদিকে কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন আইনশীথিল করে আদানি আম্বানিদের সাহায্য করছে নিজেদের সম্পত্তি বাড়াতে।’’ উল্লেখ্য রাজ্যে তৃণমূল শাসনে একাধিক চাকরি ক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতি সামনে এসেছে। সেই প্রসঙ্গ টেনে মীনাক্ষী বলেন, ‘‘একটা কোন দপ্তরে স্থায়ী নিয়োগ হয়নি এই সরকারের আমলে। সব জায়গায় চুক্তি ভিত্তিক কর্মী দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। ডিওয়াইএফআই ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের বর্তমান সময় পর্যন্ত একাধিক আরটিআই করেছে। সরকার তার কোন উত্তর দেয়নি। আইনী অজুহাত দেখিয়ে তারা এড়িয়ে গিয়েছে। ইনসাফ যাত্রা এর উত্তর চাইবে।’’ 


লুঠের টাকায় নয়। ইনসাফ যাত্রা এবং ৭ জানুয়ারির ব্রিগেড হবে মানুষের দেওয়া অর্থের সাহায্যে। মঙ্গলবার ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য দপ্তর দীনেশ মজুমদার ভবনে সংবাদিক সম্মেলনে একথা বলেন রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জি। তিনি জানিয়েছেন গোটা রাজ্যে যেই চার হাজার ইউনিট রয়েছে তাদের পক্ষ থেকে এলাকার বাড়ি একটি কৌট দিয়ে আসা হবে। একমাস পর তা আবার ফেরত নেওয়া হবে। যুব নেতৃত্বের কথায়, মানুষের জন্য লড়াই হবে মানুষের দেওয়া রসদের ওপর ভিত্তি করেই।

Comments :0

Login to leave a comment