Mass Signature

তৃণমূলের বিরুদ্ধে গণস্বাক্ষর অভিযান শিলিগুড়িতে

জেলা

Mass Signature

কোথায় গেলো তৃণমূলের ১০০ দিনের বকেয়া মজুরি মিটিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি? গ্রামীণ এলাকার চারটি ব্লকের রাস্তাঘাট, কালভার্ট বেহাল কেন? মহকুমা পরিষদ এলাকায় ত্রিস্তর নির্বাচনের আগে তৃণমূলীদের মিথ্যে প্রতিশ্রুতিগুলির উত্তর চাইছেন গ্রামাঞ্চলের মানুষ। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদে তৃণমূলীদের বোর্ড গঠনের নয়মাস অতিক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু একটি প্রতিশ্রুতিও এই সময়কালে বাস্তবায়িত হয়নি। বর্তমান বোর্ডের কাছে গ্রামীন মানুষের জিজ্ঞাসা গরীবের স্বার্থবাহী গ্রামীন সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের কি হলো? তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সীমাহীন ব্যর্থতা ও অপদার্থতার বিরুদ্ধে জোট বাঁধছেন গ্রামের মানুষ। প্রতিবাদে সিপিআই(এম) দার্জিলিঙ জেলা কমিটির আহ্বানে মহকুমার গ্রামাঞ্চলের প্রতিটি এলাকায় গণ স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযানে সামিল হলেন গ্রাম এলাকার অসংখ্য সাধারণ মানুষ।


বুধবার থেকে শিলিগুড়ি মহকুমার ২২টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় একযোগে শুরু হলো গণস্বাক্ষর, জনসংযোগ ও গণ অর্থ সংগ্রহ অভিযান। গ্রামীন ও চা বাগান এলাকার যুবক যুবতীদের কর্মসংস্থানের দাবি সহ ১২দফা দাবিতে এদিন সিপিআই(এম)’র গণস্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান শিলিগুড়ি মহকুমার গ্রামীন এলাকার বসতবাড়ি, বাজারঘাট সহ সর্বত্র ব্যাপক সাড়া ফেলে। সিপিআই(এম) নেতৃত্বকে কাছে পেয়ে গ্রামের মানুষ এগিয়ে এসে দাবিপত্রে স্বাক্ষর করেছেন। সাধ্যমতো অর্থ সাহায্য করেছেন। ভয়কে উপেক্ষা করে নিজেদের দাবিদাওয়া নিয়ে আলোচনাও করেছেন। এদিন সকালে নকশালবাড়ি বাজারে গনস্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযানের সূচনা করেন সিপিআই(এম) দার্জিলিঙ জেলা সম্পাদক সমন পাঠক। উপস্থিত ছিলেন গৌতম ঘোষ, ঝরেন রায়, রাজু সরকার, বিকাশ চক্রবর্তী মহম্মদ ইসলাম, রাধাগোবিন্দ ঘোষ প্রমুখ। 


কর্মসূচিকে ঘিরে গ্রামীণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহের সৃষ্টি হয়। গ্রামবাসীরাই পায়ে পায়ে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে এগিয়ে দিয়েছে গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে উপস্থিত সিপিআই(এম) নেতৃবৃন্দকে। এরপর সিপিআই(এম) নেতৃবৃন্দ গণ স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযানে পরবর্তী গন্তব্য খড়িবাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যান। কর্মসূচি চলাকালীন তৃণমূলের জবরদখলের নোংরা খেলা শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ এলাকার গ্রামীণ মানুষের মুখে মুখে ঘুরেছে। এলাকার ১০০ দিনের কাজ কাস্টোডিয়ামে পিরিয়ডের সময় থেকেই বন্ধ রয়েছে। কিন্তু বর্তমান তৃণমূল কংগ্রেস বোর্ড ক্ষমতায় আসার পর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও ১০০ দিনের কাজ চালু করা তো দূরের কথা, শ্রমিকদের বকেয়া মজুরিও এখন পর্যন্ত মেটাতে পারেনি। গ্রামবাসীরাই জানালেন, গ্রামীন এলাকার জমি জায়গা নিয়ে দালাল চক্রের ফাটকাবাজি চলছে। আদিবাসীদের জমি আত্মসাৎ করছে ওরা। বর্গা জমি থেকে বর্গাদার উচ্ছেদ করা এবং বিএলএলআরও দপ্তরের একাংশ কর্মীর মদতে জমির জাল পরচাও তৈরী হয়ে যাচ্ছে। 


নকশালবাড়ি, খড়িবাড়ি ছাড়াও এদিন বাগডোগরা, বিধাননগর, ফাঁসিদেওয়া, আঠারোখাই সহ মহকুমার বিস্তীর্ন এলাকায় এই কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামী ১৫মার্চ পর্যন্ত এই কর্মসূচী চলবে। এক লক্ষ মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়া হবে উদ্যোগকে। এদিনের কর্মসূচীতে বিভিন্ন জায়গায় নেতৃত্ব দিয়েছেন তাপস সরকার, শীতল দত্ত, ভবেন্দু আচার্য্য, বাদল সরকার, নীহার বিশ্বাস, আবু মান্নান, ধরনী সিনহা, বিদ্যুৎ জয়সওয়াল প্রমুখ। 


গণস্বাক্ষর, জনসংযোগ ও গণঅর্থ সংগ্রহ অভিযানের ১২দফা দাবির মধ্যে রয়েছে চার ব্লকের বেহাল রাস্তাঘাট সংষ্কার, পয়ঃপ্রনালী আবর্জনামুক্ত করা, বাগডোগরা শ্মশানঘাটে অসমাপ্ত বৈদ্যুতিক চুল্লি নির্মান, এশিয়ান হাইওয়ে ২ বিহার বর্ডার থেকে মেডিকেল হয়ে নৌকাঘাট পর্যন্ত জাতীয় সড়কে পথবাতির ব্যবস্থা, ফ্লাইওভারগুলিতে আলোর ব্যবস্থা, রাঙাপানি রেলগেটে ফ্লাইওভার ও ধযু জোতে নির্মান, গ্রামীন নদীগুলিকে কেন্দ্র করে কালোবাজারি বন্ধ করা, রাতের অন্ধকারে ডাম্পারের দৌরাত্ম্য বন্ধ, চা শ্রমিক পরিবারগুলিকে তাদের জমির বিধিবদ্ধভাবে পাট্টা দেওয়া, বন্যপ্রানী আক্রমনের হাত থেকে কৃষিক্ষেত্রকে বাঁচাতে বনদপ্তরের উদ্যোগ গ্রহন, কৃষিতে সহায়ক মূল্য চালু, মহকুমা জুড়ে ভেঙে পড়া কৃষি সেচ ব্যবস্থা ও কৃষি নালাগুলির সংষ্কার করা, তপশিলী জাতি ও উপজাতি শংসাপত্র পেতে হয়রানি বন্ধ, গ্রামাঞ্চলের ছাত্রছাত্রীদের উচ্চশিক্ষার জন্য বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তরবঙ্গ ক্যাম্পাস প্রকল্পের বাস্তবায়ন ইত্যাদি।
 

Comments :0

Login to leave a comment