Teacher Assaulted

তৃণমূল সমর্থক না হওয়ায় শিক্ষককে হেনস্থা

জেলা

Teacher Assaulted


তৃণমূলের সমর্থক না হওয়ায় শিক্ষককে বিদ্যালয় থেকে 'ঘাড় ধাক্কা' দিয়ে বের করে দেওয়ার অভিযোগ। অভিযোগের তির ওই বিদ্যালয়েরই পরিচালন সমিতির সদস্য, প্রধান শিক্ষক-সহ বহিরাগত কিছু তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে। নির্যাতিত শিক্ষকের নাম ভবেশ কর। প্রতিবাদে দুই দিন থেকে স্কুল গেটের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভে দেখান ওই শিক্ষক। শুক্রবার ওই শিক্ষকের সাথে বিক্ষোভে শামিল হন বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একটি অংশ এবং ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকরা। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়ার সোনাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত টাটু সিংহ স্মৃতি হাই স্কুলে। নির্যাতিত ওই শিক্ষক ভবেশ কর সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক। তাঁর বাড়ি চোপড়া ব্লকের সোনাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চাওলিগছ এলাকায়। জানা গেছে, ২০২১ সালে তিনি টাটু সিংহ স্মৃতি হাই স্কুলে শিক্ষক পদে যোগ দেন। এর আগে তিনি মালদায় কর্মরত ছিলেন। নির্যাতিত ওই শিক্ষকের অভিযোগ, তিনি তৃণমূলকে সমর্থন করেন না। গত বুধবার তাঁকে প্রধান শিক্ষক প্রণব কুমার বাড়ুই সহ পরিচালন সমিতির কিছু সদস্য এবং বহিরাগত কিছু তৃণমূল কর্মীরা রীতিমতো ঘাড় ধাক্কা দিয়ে স্কুল থেকে বের করে দেন। অথচ তাঁকে কোনও সাসপেনশন লেটার দেওয়া হয়নি বলেই অভিযোগ তাঁর। তারই প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার থেকে স্কুল গেটের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভে বসেন তিনি। তাঁর অনুমান যে তিনি রাজ্যের শাসকদলের সমর্থক নন বলেই তৃণমূলের নির্দেশে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। ২০২১ সালে চোপড়ায় এক নাবালিকার মৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় হয়েছিল গোটা জেলা। ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করে মৃত নাবালিকার পরিবার। দোষীদের শাস্তির দাবিতে দফায় দফায় বিক্ষোভে নামে স্থানীয় বাসিন্দারা। সেই ঘটনায় পথ অবরোধ ও সরকারি সম্পত্তি ভাংচুরের অভিযোগে ভবেশ করকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরবর্তী সময়ে তাঁর সাজা ঘোষণা হয়। চলতি বছরে ২৭দিন জেল হেফাজতে থাকার পর ৭ আগস্ট ছাড়া পান তিনি। তারপর আবার স্কুলের কাজে যোগ দেন। যদিও কাজে যোগ দেওয়ার পরও তাঁকে রেজিস্টারে সই করতে দেওয়া হচ্ছিল না বলে অভিযোগ ভবেশ বাবুর।


বৃহস্পতিবার শিক্ষক ও অভিভাবকরা বসলেও শুক্রবার সকাল থেকেই বিদ্যালয়ের পরিস্থিতিছিল থমথমে। বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা এদিন ক্লাস না করে বিদ্যালয়ে গেটে ও মাঠের ভিতরে দফায় দফায় বিক্ষোভ সামিল হয়। তাদের অভিযোগ, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাজনৈতিক দলের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ভবেশ স্যারকে বিদ্যালয় থেকে সরানোর চেষ্টা করছেন। আমরা ভবেশ স্যারকে বিদ্যালয়ে যথাযোগ্য সম্মান দিয়ে শ্রেণিকক্ষে চাই। তারা প্রধান শিক্ষককে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। এদিকে বিদ্যালয়ের অপর শিক্ষকগণও বিক্ষোভের সামিল ছিলেন। সহকর্মী ও ছাত্রছাত্রীদের পাশে পেয়ে আপ্লুত ভবেশ বাবু।
পরিস্থিতির চাপে পড়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রণব কুমার বারুই ছাত্রদের ছাত্রীদের সাথে কথা বলেন এবং সেখানে তিনি স্বীকার করে নেন ভবেশবাবুর বিরুদ্ধে কিছু লোক লেগে আছে। তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ভবেশ বাবু নিয়ম  মেনেই বিদ্যালয়ে যোগ দেবেন। কেন তাঁকে তৃণমূল নেতাদের উপস্থিতিতে অপদস্ত করা হলো সেই প্রশ্নে তিনি বলেন বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির লোকেরা ছিলেন। তবে বাইরের কে ছিল তা জানা নেই।

Comments :0

Login to leave a comment