Potato Farmers

কেজি-তে আলু পঞ্চাশ পয়সা! ব্যবস্থার দাবিতে জলপাইগুড়িতে বিক্ষোভ কৃষকসভার

জেলা

বিক্ষোভ, স্মারকলিপি প্রধান সারা ভারত কৃষক সভার।

জলপাইগুড়ি জেলা জুড়ে বিভিন্ন হিমঘরে মজুত হয়ে পড়ে রয়েছে প্রায় চার লক্ষ বস্তা আলু। দীর্ঘদিন খোলা বারান্দায় পড়ে থাকার ফলে আলু ভিজে যাচ্ছে, পচন ধরার আশঙ্কা তীব্র হচ্ছে। অথচ বাজারে আলু বিক্রি করার মতো পরিস্থিতিও নেই। বর্তমানে আলুর বাজারদর নেমে এসেছে কেজি প্রতি মাত্র ৫০ পয়সায়, কোথাও কোথাও তার থেকেও কম দাম। এই দামে চাষিরা তো দূরের কথা, হিমঘর কর্তৃপক্ষও আলু বাজারে ছাড়তে আগ্রহী নয়।
জলপাইগুড়ি জেলা সাধারণত উত্তরবঙ্গের অন্যতম প্রধান আলু উৎপাদক অঞ্চল। অন্যান্য বছরে জেলায় গড়ে মোট উৎপাদন হয় প্রায় ২০–২২ লক্ষ মেট্রিক টন আলু। সাধারণত মরসুমের শুরুতে কেজি প্রতি ৮–১০ টাকা দরে আলু বিক্রি করে চাষিরা উৎপাদন খরচ তুলতে পারেন এবং পরে দাম কিছুটা বাড়লে সীমিত লাভের মুখ দেখেন। গড় হিসাবে এক বিঘা জমিতে আলু চাষ করে চাষিরা খরচ বাদ দিয়ে ১৫–২০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ পান। কিন্তু চলতি বছরে সেই চিত্র সম্পূর্ণ উল্টো।
এ বছর উৎপাদন তুলনামূলকভাবে ভালো হলেও বাজারে চাহিদা না থাকা, আন্তঃরাজ্য পরিবহণে বাধা এবং সরকারি স্তরে কোনও কার্যকর হস্তক্ষেপ না থাকার ফলে আলুর দাম তলানিতে। অনেক কৃষকই উৎপাদন খরচের দশভাগের একভাগ দামেও আলু বিক্রি করতে পারছেন না। ফলে লাভ তো দূরের কথা, ধারদেনায় জর্জরিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে সারা ভারত কৃষক সভা জলপাইগুড়ি জেলা কাউন্সিলের পক্ষ থেকে অবিলম্বে সরকারি সহায়ক মূল্যে কৃষকদের কাছ থেকে আলু কেনার দাবিতে জেলা প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু জেলা প্রশাসন এসআইআর-এর কাজে ব্যস্ত থাকার অজুহাত দেখিয়ে স্মারকলিপি নেয়নি। 
কৃষক নেতৃবৃন্দ জেলাশাসক দপ্তরে বিক্ষোভের কথা জানালে প্রশাসন বাধ্য হয়ে সদর মহকুমা শাসকের দপ্তরে স্মারকলিপি জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করে। সেই মতো সদর মহকুমা শাসকের দপ্তরে বিক্ষোভ দেখিয়ে পাঁচ দফা দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করেন কৃষক নেতৃবৃন্দ।
কৃষকসভার দাবি, কোল্ড স্টোরেজে সংরক্ষিত সমস্ত আলু কৃষকদের কাছ থেকে সরকারি সহায়ক মূল্যে কেনা, হিমঘরের ভাড়া ৫০ শতাংশ কমানো, গ্রাম পঞ্চায়েত ভিত্তিক ধান ক্রয় কেন্দ্র অবিলম্বে চালু করা, ধানের সহায়ক মূল্য কুইন্টাল প্রতি তিন হাজার টাকা নির্ধারণ এবং ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ধান বুকিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। 
স্মারকলিপি প্রদানের সময় উপস্থিত ছিলেন বর্ষীয়ান কৃষক নেতা ও প্রাক্তন সাংসদ জিতেন দাস, সারা ভারত কৃষক সভার জেলা সম্পাদক প্রাণ গোপাল ভাওয়াল, কৃষক নেতা আজম আলী আব্বাস, মুকুলেশ রায় সরকার, অশোক রায়, বিশ্বজিৎ মোহন্ত, খতিরুল ইসলাম-সহ অন্যান্য কৃষক নেতৃবৃন্দ।

Comments :0

Login to leave a comment