Jhansi Hospital Fire

ঝাঁসি মেডিক্যাল কলেজে আগুনে পুড়ে মৃত্যু ১০ সদ্যোজাতর

জাতীয়

আগুনে ঝলসে মৃত্যু হল ১০ শিশুর। শুক্রবার রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসি মহারানি লক্ষ্মীবাঈ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। ঘটনায় গুরুতর আহত আরও ১৬ টি সদ্যোজাত৷ বর্তমানে তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। শুক্রবার রাত পৌনে এগারোটা নাগাদ মহারানী লক্ষ্মী বাই মেডিকেল কলেজের এনআইসিইউ ইউনিটে আগুন লাগে। ওই ওয়ার্ডে প্রায় ৫৪টি শিশু ভর্তি ছিল। দমকলের অনুমান, শর্টসার্কিট থেকেই আগুন লেগেছে৷ চিকিৎসক নার্স ও স্বাস্থ কর্মীরা ওই ওয়ার্ডের জানলা ভেঙে ৩৯টি শিশুকে উদ্ধার করেছেন। 
শনিবার ঝাঁসির জেলা শাসক অবিনাশ কুমার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘‘শুক্রবার রাত ১০ টা ৪৫ মিনিট নাগাদ মহারানী লক্ষ্মী বাই মেডিকেল কলেজের নিওনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে আগুনের সূত্রপাত হয়। তাঁর বক্তব্য  প্রাথমিকভাবে শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে বলে জানা গেছে। তবে কীভাবে আগুন লাগল, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকলের একাধিক ইঞ্জিন। প্রাথমিক দৃষ্টিতে ১০ টি শিশুর মৃত্যুর তথ্য রয়েছে। তিনি বলেছেন, উত্তরপ্রদেশ সরকার ঘোষণা করেছে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় উচ্চপর্যায় তদন্ত করা হবে। এই ঘটনায় মৃত শিশুর পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা ও আহতদের ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সাহায্য় দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেছে উত্তর প্রদেশ সরকার। মৃত শিশুদের আত্মীয়স্বজনদের জন্য ২ লক্ষ  টাকা ঘোষণা করেছে প্রধান মন্ত্রীর দপ্তর। 
এদিন সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় ওই রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী ব্রিজেশ পাঠক বলেছেন, ‘‘আগুনলাগার কারণগুলি বাস্তবসম্মতভাবে বের করা হবে। কী কারণে এবং কীভাবে ঘটনাটি ঘটেছে, কার গাফিলতি ছিল। এসব বিষয় সামনে আনা হবে এবং আগুন লাগার  ঘটনায় কেউ দায়ী থাকলে তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ জন্য সরকারের তরফে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট আসার পরই আমরা এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব। সরকার নিহত ও আহত শিশুদের পরিবারের পাশে রয়েছ। সকল আহতদের উন্নত চিকিৎসা প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’ 
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। 
সামাজিক মাধ্যমে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে লিখেছেন, “উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসির মেডিকেল কলেজে দুর্ঘটনায় শিশুদের মৃত্যুর খবর অত্যন্ত বেদনাদায়ক। এই হৃদয়বিদারক দুর্ঘটনায় নিহত সকল শিশুর পরিবারের প্রতি আমাদের গভীর সমবেদনা। আমরা দাবি করি যে সরকার এই দুর্ঘটনার কারণগুলি তদন্ত করবে এবং যারাই এই ধরনের অবহেলার জন্য দোষী তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে’’। 
কংগ্রেস নেতা অজয় রাই উত্তরপ্রদেশ সরকারের সমালোচনা করে বলেছেন, “এই অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনাটি আমাকে গভীরভাবে ব্যথিত করেছে। এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নবজাতকদের জন্য আমি সমবেদনা জানাই। এটি একটি গভীর বেদনাদায়ক এবং হৃদয় বিদারক পরিস্থিতি, বিশেষ করে সেখানে থাকা নিষ্পাপ শিশুদের জন্য। এই সরকার দায়িত্ব নিতে এবং জনগণের চাহিদা পূরণে ব্যর্থ।’’ 
এই অগ্নিকান্ডের ঘটনা প্রসঙ্গে কানপুর জোনের এডিজি অলোক সিং জানিয়েছেন, ‘‘বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে এই আগুন লাগে। মৃত শিশুরা সেই সময় ইনকিউবেটরে ছিল। ঘটনার সময় ৫৪ জন শিশু সেই ওয়ার্ডে ভর্তি ছিল। ৭টি মৃতদেহ শনাক্ত করা হয়েছে। ৩টি দেহ এখনও শনাক্ত করা যায়নি।’’

Comments :0

Login to leave a comment