কেরালায় একশো দিনের কাজ চলছে গ্রামাঞ্চলে। শহরাঞ্চলেও চলছে। কেরালায় খেতমজুরদের দৈনিক মজুরি ৮৫০ টাকা। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের ফন্দি রুখেছে কেরালার বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সরকার। বাংলায় পারছে না তৃণমূল। মাথা থেকে পা পর্যন্ত দুর্নীতিতে মুড়ে থাকা তৃণমূলের পক্ষে সম্ভবও নয়। কৃষক, শ্রমিকদের সঙ্গে একজোটে লড়বেন খেতমজুররা।
শুক্রবার ফরাক্কায় সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়নের রাজ্য দ্বিতীয় সম্মেলনে এই লক্ষ্য জানিয়েছেন নেতৃবৃন্দ। এদিন মুর্শিদাবাদের ফরাক্কায় হয়েছে খেতমজুর সমাবেশ। নেতৃবৃন্দ বলেছেন, খেতমজুরদের জীবিকার লড়াইয়ের সঙ্গে সরাসরি জড়িত পঞ্চায়েত নির্বাচনের সংগ্রাম। লুটেরাদের হটিয়ে জনতার হাতে ফেরাতে হবে পঞ্চায়েত।
বক্তব্য রেখেছেন সংগঠনের সর্বভারতীয় সভাপতি এ বিজয়রাঘবন, সাধারণ সম্পাদক বি বেঙ্কট, রাজ্য সম্পাদক অমিয় পাত্র। সভাপতিত্ব করেছেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি তুষার ঘোষ। প্রতিনিধি এবং খেতমজুর আন্দোলনের কর্মীদের স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য রেখেছেন সিপিআই(এম) মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক জামির মোল্লা।
বিজয়রাঘবন কেরালার তুলনা টেনে বলেছেন, ‘‘শোষণের পক্ষের শক্তি বিজেপি। মুসলিম-হিন্দু বলে ভাঙতে চাইছে গরিব মানুষকে। মজুরির জন্য জীবনের জন্য লড়াই করতে হলে, দাবি আদায় করতে হলে বিভাজনের রাজনীতি সম্পর্কেও স্পষ্ট ধারণা থাকা জরুরি। নজর করলেই দেখা যাবে এই বিজেপি-আরএসএস কেন্দ্রের তাদের সরকারকে রেখে দেশকে আসলে ভাঙতে চাইছে অমিরে আর গরিবে।’’
হাওড়ায় হবে সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়নের সর্বভারতীয় সম্মেলন। ১৭ ফেব্রুয়ারি হাওড়া ময়দানে হবে সমাবেশ। প্রধান বক্তা কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন।
বেঙ্কট বলেছেন, ‘‘বছরে ২০০ দিন কাজ চাই। চাই দিনে ৬০০ টাকা মজুরি। চাই রেশনে খাদ্যশস্য। গ্রামের গরিব মানুষকে নিয়ে এই দাবিতে চলবে লড়াই। এই পশ্চিমবঙ্গ সারা দেশের কাছে নজির ছিল। জ্যোতি বসুর নেতৃত্বে হয়েছিল ভূমিসংস্কার, পঞ্চায়েত। সেই পশ্চিমবঙ্গেই একশো দিনের কাজ আটকে গিয়েছে এখানে তৃণমূলের দুর্নীতির জেরে। বিজেপি-তৃণমূল, দু’পক্ষই গরিবকে বঞ্চনা করছে।’’
অমিয় পাত্র বলেছেন, ‘‘বিজেপি দুর্নীতির জন্য কারও বিরুদ্ধে এফআইআর করেনি। শাস্তি দিচ্ছে গরিব মানুষকে, তাঁদের মজুরি বন্ধ রেখে। পঞ্চায়েতে চুরি হলে সবচেয়ে সঙ্কটে পড়েন গ্রামের গরিব, গ্রামের খেতমজুররা। রাজ্যের সরকার চায় বলে চুরি হয়। রাজ্যে যখন বামফ্রন্ট সরকার ছিল, নজরদারি ছিল বলে এভাবে চুরি হতো না।’’
পঞ্চায়েত নির্বাচন প্রসঙ্গে পাত্র বলেন, ‘‘২০১৮ আর ২০২৩ এক নয়। তৃণমূল তা টের পাবে। অনলাইনে সব কাজ হলে মনোনয়ন কেন জমা করা যাবে না। এই দাবি উঠবে বাংলায়। আর বিজেপি’কে জায়গা দেওয়ার প্রশ্ন নেই। ত্রিপুরায় এ রাজ্যের তৃণমূলের মতোই লুট আর নিপীড়ন চালাচ্ছে বিজেপি।’’
জামির মোল্লা ব্যাখ্যা করেছেন কেন হিন্দু বা মুসলিমের আলাদা করে উন্নয়ন হয় না। তিনি বলেছেন, ‘‘যেভাবে শিক্ষকের অভাবে স্কুল বন্ধ হচ্ছে ঠিক একই কারণে বন্ধ হচ্ছে মাদ্রাসাও। নমাজ পড়লে বা ইপাতর পার্টি দিয়ে সংখ্যালঘুদের উন্নয়ন হয় না। কাজ, মজুরির জন্য ব্যবস্থা নিতে হয় সরকারকে। তৃণমূল সরকার তা করে না।’’ তিনি বলেন, ‘‘লুটের পঞ্চায়েত থেকে জনগণের পঞ্চায়েত গড়ার লড়াই সবার, সব অংশেরই।’’
Comments :0