ধর্ষিতা যুবতী এবং তাঁর মা দেখতে চাইছেন যুবতীর বাবা এবং ভাইয়ের দেহ। ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পরও যুক্ত সকলকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। ভয়াবহ অবস্থা মণিপুরে একের পর ত্রাণ শিবিরে। মহিলারা সবচেয়ে বিপন্ন। এখনই হস্তক্ষেপের আবেদন জানিয়েছে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে সবিস্তারে পরিস্থিতি জানালেন সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির নেতৃবৃন্দ।
শুক্রবার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেন মহিলা সমিতির নেত্রী বৃন্দা কারাত, মরিয়ম ধাওলে এবং পিকে শ্রীমতী। মহিলা সমিতি এর আগে সরাসরি কথা বলেছে মণিপুরের রাজ্যপাল অনুসূয়া উইকেইয়ের সঙ্গেও। কথা বলেছেন ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেওয়া মহিলাদের সঙ্গে। সেই অভিজ্ঞতা লিখিতভাবে সবিস্তারে জানিয়েছেন মহিলা নেতৃবৃন্দ।
শুক্রবারই মণিপুরে গিয়েছেন সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিও। তিনি জানিয়েছেন, মণিপুরের মানুষকে সংহতির বার্তা দিতে গিয়েছে প্রতিনিধিদল।
মহিলা সমিতি রাষ্ট্রপতিকে বলেছে, ‘‘মণিপুরে ৩৫০টি ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় ৫৫ হাজার মানুষ। গত তিন মাস এখানেই রয়েছে, বাড়ি কবে ফিরেন কেউ জানেন না। জানেন না জীবিকার কী হবে। শিশুরা রয়েছে, রয়েছেন গর্ভবতী নারীরা। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকতে হচ্ছে তাঁদের। মহিলাদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা নেই। অস্থায়ী কাঠামোয় ত্রাণ শিবিরের ব্যবস্থা করেছে মণিপুর সরকার। তিন মাস ধরে ডাল এবং ভাতের বাইরে কিছু মিলছে না। শিশুদের স্কুল নেই। বৃষ্টির সময় অবস্থা আরও সঙ্গিন হচ্ছে।’’
স্মারকলিপিতে রাষ্ট্রপতিকে মহিলা নেত্রীরা বলেছেন, ‘‘আক্রান্তদের বিচারের ব্যবস্থা করুন। অপরাধীদের শস্তির ব্যবস্থা করুন। পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু হোক। মাথাপিছু ১০ কেজি করে রেশন দেওয়া জরুরি। চিকিৎসক পাঠানো জরুরি ত্রাণ শিবিরে। শিশুদের স্কুলে পাঠানো জরুরি। বিপুল কর্মহানি হয়েছে। কাজ নেই। তাঁদের নগদে অর্থ পাঠানো দরকার।’’
মহিলা নেত্রীদের অনুরোধ, আপনি রাষ্ট্রপতি। সরকারকে নির্দেশ দিন দ্রুত ব্যবস্থা নিতে।
মণিপুরে আদিবাসী কুকিরাই সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত মেইতেই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সঙ্ঘর্ষে। পাহাড়ি এলাকায় কুকিদের এবং উপত্যকায় মেইতেইদের বেশিরভাগের বাস। দুই এলাকার মধ্যে নিরাপত্তার বেড়া তৈরি করতে হচ্ছে বাহিনীকে। মণিপুর বিধানসভার ১০ কুকি বিধায়ক পাহাড়ি এলাকার পাঁচটি জেলার জন্য আলাদা প্রশাসনিক ব্যবস্থা চেয়ে চিঠি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। এই বিধায়কদের ৭ জন আবার রাজ্যের সরকারে আসীন বিজেপি’র। তাঁরা আলাদা মুখ্যসচিব, পুলিশের আলাদা ডিজি পদমর্যাদার সমকক্ষ আধিকারিকের পদ তৈরি করার দাবি তুলছেন তাঁরা।
শুক্রবার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং এড়িয়ে গিয়েছেন। তিনি কেবল বলেছেন, সকলেরই কথা বলার অধিকার আছে। কিন্তু কুকি বিধায়কদের এই চিঠিকে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি অনাস্থা বলেই মনে করছে বড় অংশ।
Comments :0