TMC leader Shantanu Banerjee

দোলের দিন জলপাইগুড়ি’র তৃণমূল নেতার অতিথি শান্তনু ব্যানার্জি’!

জেলা

TMC leader Shantanu Banerjee



শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগ দুর্নীতিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি গত ১০মার্চ শুক্রবার গ্রেপ্তার করে নিয়োগ দুর্নীতি চক্রের পান্ডা হুগলী জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ, তৃণমূল নেতা শান্তনু ব্যানার্জিকে। টাকার বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার রাজ্যজুড়ে গত এক দশক ধরে প্রতারণা চক্রের পান্ডা এই দাপুটে তৃণমূল নেতা। শাসক দলের অন্দরে নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত এই ব্যক্তি আবার তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জির ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। নিয়োগ কাণ্ডে ধৃত যুব তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক কুন্তল ঘোষের সঙ্গেও দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠতা। কুন্তল ঘোষ ও ধৃত তাপস মণ্ডলের জেরাতেও সামনে এসেছিল এই তৃণমূল নেতার নাম। শান্তনুর সঙ্গে এবার জলপাইগুড়ির যোগের তত্ত্ব উঠে আসছে।
স্থানীয়রা জানাচ্ছেন যেদিন শান্তুনু গ্রেপ্তার হয় ঠিক তার তিনদিন আগে অর্থাৎ দোলের দিন জলপাইগুড়িতে 'আত্মগোপন' করেছিলেন শান্তনু। জলপাইগুড়ির তৃণমূল যুব নেতা সন্দীপ সান্যালের বাড়িতে তাকে দেখা গিয়েছিল। তাদের বক্তব্য যে ব্যক্তিকে শান্তনু বলে তাঁরা সন্দেহ করছিলেন, তাঁকে দোলের সময়েও দেখা গিয়েছিল সন্দীপ সান্যালের বাড়িতে। তাদের আরো দাবি দুর্গাপুজোর সময়েও ওই ব্যক্তিকে দেখা গিয়েছিল তৃণমূল যুব নেতার বাড়িতে। জলপাইগুড়ির মানুষের মনে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে তাহলে কি জলপাইগুড়িতে 'আত্মগোপন' করেছিলেন শান্তনু? এই নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে কি তাহলে জড়িত জলপাইগুড়ির তৃণমূল নেতা? এই নিয়ে জলপাইগুড়ি শহরে নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেপ্তার শান্তনু ব্যানার্জিকে নিয়ে চর্চা চলছে রাজনৈতিক মহলেও। জলপাইগুড়ি পৌরসভার ১০ নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত পুলিশ লাইন সংলগ্ন রিজিওনাল ফরেনসিক ল্যাবরেটরি এলাকায় বাড়ি তৃণমূল নেতা সন্দীপ সান্যালের। জানা গেছে তিনি তৃণমূলের জলপাইগুড়ির ১০ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি। তাঁর বাড়িতেই নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেপ্তার শান্তনু বন্ধ্যো নাকি সন্দীপ সান্যালের বাড়িতে এসে থেকে গিয়েছেন।


নিয়োগ দুর্নীতিতে এখনও পর্যন্ত গত জুলাই মাস থেকে মোট ২২জন গ্রেপ্তার। ইডি ও সিবিআই— দুই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাতে। গত ২২জুলাই গভীর রাতে নাকতলার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জিকে। সেই শুরু, তারপর নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত যত এগিয়েছে ততই সামনে এসেছে শাসক তৃণমূলের যোগ। গোটা দুর্নীতিতে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে শাসক তৃণমূল। জলপাড়গুড়ির মানুষের বক্তব্য, তাঁরা শান্তনু ব্যানার্জির গ্রেপ্তারির খবর সংবাদমাধ্যম থেকে জেনে অবাক হয়ে গিয়েছেন। তৃণমূল নেতা সন্দীপ সান্যালের বাড়ির ব্যালকনিতে যাঁকে তাঁরা মাঝে মধ্যেই দেখেছেন, সেই ব্যক্তির সঙ্গে শান্তনুর চেহারার অনেক মিল রয়েছে। সেই সময় তাঁরা বিষয়টি বুঝতে পারেননি। সংবাদমাধ্যমে শান্তনুর ছবি দেখে তাঁরা বলছেন, এলাকার তৃণমূল নেতার বাড়ির ব্যালকনিতে যাঁকে তাঁরা দেখতেন, তিনিই শান্তনু ব্যানার্জি। তাঁকে দোল এবং দুর্গাপুজোর সময়ে সন্দীপ সান্যালের বাড়িতে দেখা গিয়েছিল। সন্দীপ সান্যাল জলপাইগুড়ি তৃণমূলের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি। পার্থ সান্যাল নামেই এলাকায় পরিচিত। উত্তর বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কমার্সে স্নাতক। আইকোর সংস্থার কাজে যুক্ত ছিলেন। পেশায় ঠিকাদার। ২০১৩ সালে তৃণমূলের তৎকালীন জেলা সভাপতি চন্দন ভৌমিকের হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দেন। জেলা সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ সন্দীপ সান্যাল। জলপাইগুড়ির মানুষের বক্তব্য ‘‘নিয়োগ দুর্নীতির জাল রাজ্য জুড়ে ছড়িয়ে আছে। তাদের আশঙ্কা জলপাইগুড়ি জেলাতেও নিয়োগ দুর্নিতির জাল বিস্তার করেছে’’।
 

Comments :0

Login to leave a comment