নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের তদন্তে এবার বিকাশ ভবনে পা দিল সিবিআই। বিকাশ ভবনে শিক্ষামন্ত্রীর অফিসের কম্পিউটার খতিয়ে দেখেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারিকরা, শিক্ষা মন্ত্রীর দপ্তরের একাধিক নথিও খতিয়ে দেখেন তাঁরা। নিয়োগ কাণ্ডে বিকাশ ভবনে সিবিআই হানার এই খবরে রীতিমত চাঞ্চল্য ছড়ায় শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে।
বিকাশ ভবনের ছয়তলায় এদিন দীর্ঘক্ষণ সময় কাটান সিবিআই আধিকারিকরা। এই ছয় তলাতেই শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু বসেন। তাঁর ঘরের উলটোদিকেই তাঁর অফিস রুমের একাধিক কম্পিউটার রীতিমত খতিয়ে দেখেন, সেখান থেকে বিভিন্ন নথিও সংগ্রহ করেন গোয়েন্দা আধিকারিকরা। একাধিক ফাইলও দীর্ঘক্ষণ ঘাঁটেন। বিকাশ ভবনে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের স্টোররুমেও যান সিবিআই আধিকারিকরা। সেখানে বিভিন্ন নথি ঘেঁটে দেখার পরে ওই স্টোর রুম সিল করে দিয়ে যান সিবিআই আধিকারিকরা।
গ্রুপ-সি থেকে গ্রুপ-ডি, এসএসসি নিয়োগ কাণ্ডের একের পর এক দুর্নীতির ছবি সামনে এসেছে। নবম দশম নিয়োগ দুর্নীতির ভয়াবহ ছবি প্রায় প্রতিদিনই সামনে আসছে। নবম-দশমে ৯৫২জন চাকরিপ্রার্থীর ওএমআর শিট আদালতের নির্দেশ ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। শুন্য পেয়ে, খালি খাতা জমা দিয়েও রীতিমত পাশ করে চাকরি করছেন, এমন অভিযোগ ভূরি ভূরি। গ্রুপ-ডি’ তেও ১০০ জ পরীক্ষার্থীর ওএমআর শিট প্রকাশ করেছে কমিশন। সেখানে দেখা গেছে শুন্য পাওয়া পরীক্ষার্থীদের সকলে আশ্চর্যজনকভাবে ৪৩ নম্বর করে পেয়েছে, ৫০ জনের নাম প্যানেলেও উঠেছে। রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী থেকে কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি সকলেই আপাতত জেলে।
এই অবস্থায় রাজ্যের বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর অফিস ঘরে তল্লাশি, কম্পিউটার থেকে নথি বের করা, একাধিক ফাইল থেকে নথি সংগ্রহ করতে সিবিআইয়ের তৎপরতায় আশঙ্কা ছড়িয়েছে শাসক তৃণমূলের মধ্যেও।
কিছুদিন আগেই অবৈধ প্রার্থীদের জন্য শূন্যপদ সৃষ্টি সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে শুনানিতে এসেছিল ব্রাত্য বসুর প্রসঙ্গ। এই মামলায় বিচারপতি শিক্ষা সচিব মণীশ জৈনকে তলব করেছিলেন। শুনানি চলাকালীন এজলাসে বিচারপতি তাঁকে প্রশ্ন করেছিলেন, স্কুলে চাকরির ক্ষেত্রে অযোগ্য প্রার্থীদের পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত কীভাবে হয়েছে? শিক্ষা সচিব জানান, উপযুক্ত স্তর থেকেই এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। শিক্ষা সচিব জানিয়ে দেন, এব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুই তাঁকে জানিয়েছেন, এই সিদ্ধান্ত রাজ্য মন্ত্রীসভার।
Comments :0