সাংসদদের ইডি দপ্তর অভিমুখে মিছিল আটকানোর কড়া নিন্দা করল সিপিআই(এম)। আদানি গোষ্ঠীর বেনিয়মের লেনদেনের পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবিতে মিছিল করে রওনা হয়েছিলেন বিরোধী ১৬ দলের সাংসদরা। বুধবার সংসদভবনের সামনে বিজয়চকে সেই মিছিল আটকে দেয় দিল্লি পুলিশ।
এদিন টুইট করে মিছিল আটকানোর কড়া নিন্দা করেছে সিপিআই(এম)। পার্টি সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেছেন, দিনের আলোয় হত্যা করা হচ্ছে গণতন্ত্রকে।
বুধবারও সংসদের দুই কক্ষেই আদানি কেলেঙ্কারিতে তদন্তের দাবি তুলেছে কংগ্রেস, সিপিআই(এম), আরজেডি’র মতো বিরোধী দলগুলির সাংসদরা। এদিন সকালেই রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খারগের কক্ষে হয় বৈঠক। তারপর ইডি দপ্তর অভিমুখে মিছিল করে রওনা হন সাংসদরা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণে থাকা দিল্লি পুলিশের বিশাল বাহিনী ঘিরে ফেলে গোটা এলাকা। সংসদ ভবনের অদূরে বিজয় চকেই আটকে দেওয়া হয় মিছিল। পুলিশ জানায়, ১৪৪ ধারা অমান্য করে মিছিল করা যাবে না।
ইয়েচুরি বলেছেন, ‘‘দিল্লি পুলিশের আচরণ নিন্দনীয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীন এই বাহিনী ইডি দপ্তরে সাংসদদের পর্যন্ত যেতে দিতে নারাজ। বিজেপি এবং মোদী সরকার নানাভাবে সংসদে এই দাবি তুলতে বাধা দিচ্ছে।’’
বুধবারও আদানি তদন্তের দাবি বাধা দিতে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর মন্তব্য নিয়ে গোলমাল পাকায় বিজেপি। লন্ডনে তাঁর বক্তব্যে দেশের অপমান হয়েছে বলে এদিনও অভিযোগ করেন সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী। বিরোধীরা বলেছেন, সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী নিজেই আলোচনা ভণ্ডুল করতে নেমে পড়ায় স্পষ্ট বিজেপি এবং সরকারপক্ষ আলোচনা চাইছে না।’’
ইয়েচুরি বলেছেন, ‘‘সংসদে আলোচনা এবং সংসদীয় কাজে বাধা দিচ্ছে বিজেপি এবং নরেন্দ্র মোদীর সরকার। আসলে সংসদের কাছে জবাবদিহি দেওয়ার দায়বদ্ধতা এড়াতে মরিয়া সরকারপক্ষ।’’
ইডি’র দায়িত্ব আর্থিক লেনদেনে বেনিয়মের তদন্ত করা। বিদেশে অবৈধ লেনদেনে তদন্ত করতে পারে এই কেন্দ্রীয় বিভাগ। হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট, যা নিয়ে তোলপাড় হয়েছে, আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে এমনই অবৈধ লেনদেনের অভিযোগ তোলা হয়েছে। করছাড়ের অর্থনীতি মরিশাসের ঠিকানায় থাকা সংস্থার নামে ভারতে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ তোলা হয়েছে। হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টে অভিযোগ, এমন অবৈধ লেনদেন, হিসেবে কারচুপি করে শেয়ার দাম ফুলিয়ে দেখাচ্ছে আদানি গোষ্ঠী। ৮০ শতাংশ পড়তে পারে দাম।
রিপোর্টে প্রকাশের পর প্রায় আশি শতাংশ পড়েও যায় গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থার শেয়ারের দাম। যেখানে জড়িয়ে রয়েছে এলআইসি বা স্টে ব্যাঙ্কের মতো কোটি কোটি ভারতীয়ের ভরসা রাষ্ট্রায়ত্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এরপরও ইডি বা সেবি চুপ কেন সেই প্রশ্ন প্রথমেই তুলেছে সিপিআই(এম)।
এদিন সকালে খারগের কক্ষে বৈঠকে কংগ্রেসের সঙ্গে অংশ নেন সিপিআই(এম), সিপিআই ডিএমকে, জনতা দল (ইউ), আরজেডি, সমাজবাদী পার্টি, আম আদমি পার্টি, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা, ন্যাশনাল কনফারেন্সের মতো ১৬ দলের সংসদীয় নেতৃবৃন্দ। তারপর হয় মিছিল।
কিন্তু এদিনও গোটা প্রক্রিয়ায় অনুপস্থিত ছিল তৃণমূল কংগ্রেস। বিচ্ছিন্ন হয়ে গান্ধীমূর্তির সামনে অবস্থানে বসতে দেখা যায় তৃণমূল সাংসদদের। সিপিআই(এম) মনে করিয়েছে যে একের পর এক দুর্নীতি যত প্রকাশ হয়ে পড়ছে। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরোধিতায় যৌথ কর্মসূচি থেকে দূরে থাকছে তৃণমূল। বারবারই এই ভূমিকায় দেখা গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসকে।
Comments :0