মামলা লড়তে লড়তে ঘটি-বাটি বিক্রি হয়ে যায়। তাঁদের বাড়ির লোক না জানেন সংবিধান না জানেন মৌলিক অধিকার। এই মানুষের কথা কেউ ভাবছে না। তাঁদের জন্য ভাবুন। শনিবার দিল্লিতে ‘সংবিধান দিবস’ পালন অনুষ্ঠানে সরাসরি এ কথা বলেছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। মঞ্চে অন্যদের সঙ্গে সেই সময়ে আসীন দেশের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়।
মুর্মু বলেছেন, ‘‘থাপ্পর মারার দায়ে বছরের পর বছর জেল খাটতে হয়, এমন মানুষও আছেন। তাঁদের কথা ভাবুন। সংবিধানে কী বলা রয়েছে ওঁরা জানেন না, মৌলিক অধিকার কী। সংবিধানের প্রস্তাবনায় কী বলা রয়েছে। সংবিধান দিবসে ওঁদের কথা ভাবুন। সামান্য অভিযোগের জেরে জেলে আটকে থাকতে হয় বছরের পর বছর।’’ তিনি বলেছেন, ‘‘আরও বেশি জেল বানানোর কথা হচ্ছে। এ কেমন বিকাশ!’’
কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের মেয়াদে বিচারাধীন বন্দির সংখ্যা লাফিয়ে বেড়েছে। জাতীয় অপরাধ নথিভুক্তি ব্যুরোর তথ্য, ২০২১-এ দেশে বন্দী ৫ লক্ষ ৫৪ হাজারের কিছু বেশি। বন্দিদের ৭৭.১ শতাংশ বিচারাধীন। যাদের অপরাধ প্রমাণ হয়নি কিন্তু জেলে রয়েছেন, বিচার চলছে। আইন কমিশনের একটি হিসেবে দেখা গিয়েছে ১৯৭৫ সালে, জরুরি অবস্থার সময়ে বিচারাধীন বন্দির হার ছিল ৫৭.৬ শতাংশ। বন্দিদের মধ্যে জনসংখ্যার অনুপাতে বেশি সংখ্যালঘু, তফসিলি জাতি, আদিবাসীরা।
ওডিশায় দীর্ঘদিন বিধায়ক ছিলেন মুর্মু। আদিবাসী প্রধান এলাকা থেকেই নির্বাচিত হতেন। সেই প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেছেন, ‘‘আমাদের এলাকায় মানুষ তিনজনকে ভগমান মানেন- গুরু, ডাক্তার আর উকিল। গুরু উপদেশ দেন, ডাক্তার জীবন দেন আর উকিল ন্যায় বিচার পাইয়ে দেন।’’ তারপরই তিনি বলেন, ‘‘বহু মানুষ জেলে রয়েছেন যাঁদের পরিবারের ছাড়িয়ে আনার ক্ষমতা নেই। মামলা লড়তে লড়তে ঘটি-বাটি বিক্রি হয়ে যায়। অথচ বহু মানুষ অন্যের জীবন শেষ করে দিয়ে দিব্যি বাইরে ঘোরে।
গুজরাটে ভোটের আগে মুক্তি মিলেছে বিলকিস বানো হত্যাকাণ্ডে জড়িত অপরাধীদের। প্রভাবশালী এই অপরাধীরা রাজ্যে ফেরার পর ফুলমালা, মিষ্টি দিয়ে বরণ করতে দেখা গিয়েছে বিজেপি’কে। অপরাধীদের প্রশংসা করে নির্বাচনে প্রার্থীপদও মিলেছে বিজেপি নেতা চন্দ্রসিন রাউলজীর। আবার গুজরাটে আদিবাসী প্রধান এলাকায় তুলনায় অস্বস্তিতে রয়েছে বিজেপি।
Comments :0