প্রতীম দে
পুলিশ অনুমতি না দিলেও যে মিছিল হবে, সমাবেশও হবে, জানিয়ে দিয়েছিলেন বামফ্রন্ট নেতৃবৃন্দ। বৃহস্পতিবার, ৩১ আগস্ট, বাধার তালিকায় যোগ হয়েছে তুমুল বৃষ্টি। কিন্তু সব বাধা উড়িয়ে মিছিল করে ধর্মতলায় যাচ্ছেন বামফ্রন্টের কর্মীরা। ১৯৫৯ সালের খাদ্য আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে সমাবেশ শুরু হচ্ছে ধর্মতলায়।
এ বছর ১৯৪৩’র দুর্ভিক্ষের ৮০ বছরও। খাদ্যের বাজারে কর্পোরেটের দাপট আর রেশন ব্যবস্থাকে পঙ্গু করার সময়ে স্মরণ করা হচ্ছে ব্রিটিশ ভারতে সেই বিপর্যয়কেও। উৎপাদন নয়, খাদ্যের জোহান ব্যবস্থাকে ভেঙে ফেলে ব্রিটিশ শাসন। আর স্বাধীনতার পর, ১৯৫৯ সালের তীব্র সঙ্কটের জন্যও দায়ী লাগামহীন কালোবাজারি, মজুতদারি আর সরকারি উপেক্ষা।
বৃহস্পতিবার সকালে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে খাদ্য আন্দোলনের শহীদদের স্মৃতিতে মাল্যদান করেন বামফ্রন্ট নেতৃবৃন্দ। কলকাতার চার জায়গা থেকে চারটি মিছিল আসছে ধর্মতলায়। জেলাগুলিতেও শহীদ স্মরণে নানা অনুষ্ঠান হবে।
সিপিআই(এম)’র রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম জানিয়ে দিয়েছেন, ‘আমরা পুলিশের অনুমতির তোয়াক্কা করি না। ধর্মতলায় সমাবেশ হবেই। তৃণমূল রাস্তা আটকে নাচগান কার্নিভাল করতে পারে, আর মানুষের দুর্দশার কথা বলতে মানুষের জমায়েত করতে অনুমতি লাগবে!’ কলকাতা জেলা বামফ্রন্টের আহবায়ক কল্লোল মজুমদার জানিয়েছেন, সরকারি অনুমতি না এলেও বামফ্রন্টের সমাবেশ হবে। কলকাতার চারদিক থেকে চারটি মিছিল এসে জমায়েত করবে ধর্মতলায় দুপুর ২টোয়।
বামফ্রন্টের পরিকল্পনা অনুসারে বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টায় হাওড়া স্টেশন, শিয়ালদহ স্টেশন, সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার এবং বিড়লা প্ল্যানেটোরিয়ামের সামনে থেকে মোট চারটি মিছিল বের হবে এবং এগুলি ধর্মতলায় এসে পৌঁছলে দুপুর দুটোয় জনসভার কাজ শুরু হচ্ছে।
স্বাধীনতার পরে ১৯৫৯ সালের ৩১ আগস্ট কলকাতার বুকে বিরাট সমাবেশ হয় খাদ্য আন্দোলনে। সেদিন কলকাতার রাস্তায় মিছিলের উপরে ঝাঁপিয়ে পুলিশ নির্মম লাঠি চালায়। অন্তত পক্ষে ৮০ জনের মৃত্যু হয় সেদিন পুলিশের নির্মমতায়। এই কারণে বামফ্রন্ট ৩১ আগস্ট দিনটি প্রথমে খাদ্য আন্দোলনের শহীদ দিবস হিসাবে পালন করতো, এবং তারপরে গণআন্দোলনের শহীদ দিবস হিসাবে পালন করে থাকে।
Comments :0