উত্তরের জেলাগুলোতে চরম বৈষম্যের জায়গায় রোজগার না থাকায় উত্তরকন্যা দপ্তরের কাজ কি? ১০০ দিনের কাজের কাজের টাকা আটকে আছে কেন? মিডডে মিলে কেন কাটছাঁট সহ একাধিক দাবিতে আগামী ১৩ এপ্রিল উত্তরকন্যা অভিযানে সামিল হবে রাজ্যের যুবরা। সোমবার দুপুরে ডিওয়াইএফ আই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির পক্ষ থেকে অনিল বিশ্বাস ভবনে এক সাংবাদিক বৈঠকে এই খবর জানান যুব সংগঠনের রাজ্য সম্পাদিকা মীনাক্ষী মুখার্জি। তিনি বলেন, সোস্যাল মিডিয়া এবং সংগঠনের প্রচার কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে উত্তরকন্যা অভিযানকে ঘিরে ব্যাপক প্রচারাভিযান চলছে। ১৩ এপ্রিল উত্তরকন্যা অভিযানে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যুবরা যোগদান করবেন। এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে উত্তরকন্যা অভিযানের থিম সং’র উদ্বোধন করেন তিনি। সাংবাদিক বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ধ্রুবজ্যোতি সাহা, রাজ্য কোষাধ্যক্ষ অপূর্ব প্রামানিক, সংগঠনের কলকাতা জেলা সভাপতি বিকাশ ঝাঁ, সংগঠনের দার্জিলিঙ জেলা সভাপতি শচীন খাতি প্রমুখ।
এদিন যুব সম্পাদিকা মীনাক্ষী মুখার্জি বলেন, নির্বাচনের আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতির কি হলো? দার্জিলিঙ মেল, উত্তরবঙ্গ, পদাতিক, সরাইঘাট, তিস্তাতোর্ষার বেশীরভাগ কামড়াই রোগী ভর্তি। প্রতিটি জেলাতে মাল্টি সুপারস্পেশালিটি হাসপাতাল গড়ে দেবার প্রতিশ্রতিরই বা কি হলো? ঘুঘুডাঙ্গাতে অধিগৃহীত জমি ফুড প্রসেসিং কারখানা কবে হবে? হলদিবাড়ি হয়ে বাংলাদেশের ভেতর হয়ে রেললাইন চলে যাবে শিয়ালদা। পাঁচ ঘন্টায় পৌঁছে যাওয়া যাবে কবে থেকে? দার্জিলিঙ জেলার বাগডোগরার আন্তর্জাতিক মানের এয়ারলাইন্স, কোচবিহারের চকচকাতে জুটপার্কের কি হলো? এইরকম অবস্থায় আমরা প্রতিদিন রাস্তায় নেমে লড়াই করছি। সরকার চুরি দুর্নীতিতে ব্যস্ত। সাধারণ মানুষ বেকার যুবদের কথা শোনার মতো সময় নেই। তাই উত্তরকন্যাতে আমরা আমাদের কথা জানাতে যাব। ডেপুটেশন দেব। মানুষ কিছু সমাধান দিচ্ছে প্রতিদিন। সেই সমাধান সাধারণ মানুষের বাহক হিসেবে উত্তরকন্যায় পৌঁছে দেবে ডিওয়াইএফআই।
মুখার্জি বলেন, নববর্ষের একদিন আগে চড়া রোদ মাথায় নিয়ে মিছিল করে অভিযান হবে। সংগঠনের কোন আত্মপ্রচারের জন্য এই অভিযান নয়, এই সময়কালে এই অভিযান করতে আমরা বাধ্য হয়েছি। গোটা দেশ ও রাজ্যের সাধারণ মানুষ দুটি রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে জয়ী করেছিলো। মানুষ এই দুই সরকারের ওপর এখন আর ভরসা করতে পারছে না। রাজ্যে বিরোধীদের কোন ভূমিকাই নেই। স্কুলে লক্ষ লক্ষ ছেলেমেয়েরা এনরোলমেন্ট করেও পরীক্ষায় বসছে না। ৮হাজার ৮০০ টা স্কুল মার্জ করে দেবার জন্য প্রথম ধাপের তালিকা তৈরী হয়ে গিয়েছে। ভবিষ্যতে এই সমস্ত স্কুল থাকবে কি থাকবে না রাজ্যবাসী চরম শঙ্কায় রয়েছে। মিড ডে মিলের টাকা কাটছাঁট করা হয়েছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে চরম দুর্নীতি। রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী জেলে। বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী চাকরিকে দলবাজিতে পরিনত করার জন্য প্রকাশ্যে কথা বলছে। রাজ্যের এমএলএ মানিক ভট্টাচার্য সস্ত্রীক জেলে। এরা ঘটনাচক্রে প্রত্যেকেই তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতা। বাকি তৃণমূলী নেতারাও কেউ গোরু, মাটি, বালি, কয়লা চুরির দায়ে অভিযুক্ত। গোটা রাজ্যে মাফিয়া রাজ চলছে। খুন করে দিচ্ছে। গ্রেপ্তার হচ্ছে না। দলবদলের পালা চলছে। এক্ষেত্রে ইডি সিবিআই—র নেতিবাচক ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এইরকম অবস্থাতে ১০০ দিনের কাজের টাকা লুট হয়ে গেছে। দিল্লির সরকার ১০০দিনের কাজের টাকা কাটলমেন্ট করেছে। দুর্নীতি করেছে বলে বেআইনীভাবে ১০০ দিনের কাজের টাকা এইরাজ্যে আটকে রেখেছে। দিচ্ছে না। ভুয়ো জবকার্ডের ভিত্তিতে আবাস যোজনার ঘর কোচবিহার থেকে শুরু করে বিষ্ণুপুর পর্যন্ত প্রতিটি জায়গায় যারা পেয়েছে তারাও শাসকদলের সাথে যুক্ত। সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি হচ্ছে। বাকুড়ার সরকার অপদার্থতার চরম সীমা লঙ্ঘন করে সিভিক ভলান্টিয়ারদের বিনা ক্রাইটেরিয়াতে রিক্রুট করে তাদের স্কুলে পড়াতে বাধ্য করছে।
এদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, কোন মানুষেরই ব্যক্তি স্বাধীনতা ও মানবাধিকারের স্বীকৃতি নেই। সরকার দুর্নীতির পান্ডা হয়ে গেলে মানবাধিকার পায়ের বুটের নীচে চাপা দিয়ে রাখতে চায়। পশ্চিমবঙ্গে এর বাইরে কিচ্ছু হচ্ছে না। এই দেশের ও রাজ্যের ভবিষ্যৎকে গভীর অন্ধকারের দিকে নিয়ে যেতে চাইছে। তাই বিভাজনের রাজনীতি হচ্ছে। প্রতিদিন ভাগ করে দাও। দাঙ্গা হচ্ছে নতুন করে পশ্চিমবঙ্গে।
Comments :0