কর্মসূচি সম্পর্কে নিয়মমাফিক জানানো হয়েছিল আগেই। সাংবাদিক সম্মেলনের মুখে পুলিশ জানায় অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। রাজ্যের শ্রমিক এবং কৃষক নেতৃবৃন্দ জানিয়ে দেন ২৬-২৮ নভেম্বর সারা দেশের মতো কলকাতাতেও হবে কর্মসূচি। তৃণমূল সরকারকে হুঁশিয়ারি দেন, বাধা দিয়ে আটকানো যাবে না। কিছু পরেই পিছু হটে আগের নির্দেশিকা ফিরিয়ে নেয় কলকাতা পুলিশ।
রাজ্যে শ্রমজীবীর প্রতিবাদে বারবরই বাধা দিয়েছে তৃণমূল সরকারের পুলিশ। বাধা উপেক্ষা করেই হয়েছে কর্মসূচি। ৭ জানুয়ারি ডিওয়াইএফআই’র ব্রিগেড সমাবেশের অনুমতি নিয়েও সমস্যা হচ্ছে। বামপন্থীরা বলেছেন, নবান্নের ইশারায় এই বাধা তৈরি করা হচ্ছে। এই মাঠ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে সেনা। যুবরাও জানিয়েছেন যে সমাবেশ ওই দিন ব্রিগেডেই হবে।
শুক্রবার কলকাতার শ্রমিক ভবনে কৃষক এবং শ্রমিক সংগঠনগুলি সাংবাদিক সম্মেলন করে। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের জনবিরোধী পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ২৬ ও ২৭ নভেম্বর রানি রাসমণি অ্যাভেনিউতে অবস্থান। ২৮ নভেম্বর রাজভবন অভিযান। রাজ্যপালের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে স্মারকলিপি। শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির সমাবেশ ও মিছিল হবে ২৮ নভেম্বর।
সিআইটিইউ পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক অনাদি সাহু দুপুরে সাংবাদিক সম্মেলনে জানান যে কলকাতা পুলিশের জয়েন্ট কমিশনার ই-মেল পাঠিয়েছেন। বলা হয়েছে, ২৬ বা ২৭ নভেম্বরের মধ্যে কোনও একটি দিন হতে পারে অবস্থান। ২৮ তারিখ অনুমতি দেওয়া যাবে না।
সাহু জানান এই ফতোয়া মানা হচ্ছে না। পশ্চিমবঙ্গ প্রাদেশিক কৃষকসভার সভাপতি বিপ্লব মজুমদার, সংযুক্ত কিষান মোর্চার রাজ্য আহ্বায়ক কার্তিক পাল, সিআইটিইউ রাজ্য সভাপতি সুভাষ মুখার্জি এবং অন্য সংগঠনগুলির নেতৃবৃন্দও ছিলেন সাংবাদিক সম্মেলনে। তাঁর স্পষ্ট জানান, রাস্তাই পথ। আদালতে যাওয়া হবে না। রাস্তাতেই নামা হবে। দিল্লির কৃষক আন্দোলনও রাস্তাতে থেকেই দাবি আদায় করেছিল।
সংযুক্ত কিষান মোর্চা এবং কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নসমূহ গত আগস্টে দিল্লিতে কনভেনশন করে দেশজুড়ে এই কর্মসূচি নেন। কৃষক আন্দোলনের মুখে তিন কৃষি বিল ফেরাতে হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। কিন্তু ফসলের ন্যূনতম দামের আইনি নিশ্চয়তার প্রতিশ্রুতি মানা হয়নি। বিদ্যুৎ আইনে সংস্কার করে নামানো হয়েছে স্মার্ট মিটার। শ্রম আইন বদলে পাশ হয়েছে শ্রম কোড। ন্যূনতম মজুরি, কাজের সুরক্ষা বাতিলের ব্যবস্থা হয়েছে। সেই সঙ্গে অসহনীয় মূল্যবৃদ্ধি, বেকারির হার স্বাধীনতার পর টানা সর্বোচ্চ স্তরে। প্রতিবাদে নেওয়া হয়েছে এই কর্মসূচি।
সাংবাদিক সম্মেলনে শ্রমিক এবং কৃষক নেতৃত্বের অনমনীয় মনোভাবের পরই দ্বিতীয় ইমেল পাঠায় পুলিশ। নিষেধাজ্ঞা জানিয়ে আগের মেলটি অগ্রাহ্য করার অনুরোধ করা হয়। কৃষক এবং শ্রমিক নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, এর অর্থ, বাধা তুলে নিতে হলো পুলিশকে।
Comments :0