রস আইল্যান্ডকে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু দ্বীপ নাম দিয়েছিলেন ২০১৮’তে। এবার আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের অনামী ২১টি দ্বীপের নাম ‘পরমবীর চক্র’ বিজয়ী সেনাদের নামে রাখলেন প্রধানমন্ত্রী।
সোমবার দিল্লি থেকে ভিডিও কনফারেন্সে সুভাষচন্দ্রের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা করেন নরেন্দ্র মোদী। সুভাষচন্দ্রের নাম রাখা দ্বীপে তাঁর স্মৃতিস্মারকের নমুনা প্রকাশও করেন প্রধানমন্ত্রী।
২৩ জানুয়ারি, সুভাষচন্দ্রের জন্মদিন ‘পরাক্রম দিবস’ বলে ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। সুভাষচন্দ্র প্রতিষ্ঠিত দল ফরওয়ার্ড ব্লক এবং বামপন্থীরা এই দিনটি ‘দেশপ্রেম দিবস’ হিসেবে ঘোষণা এবং পালনের দাবি জানিয়ে আসছেন।
সুভাষচন্দ্রের দর্শন এবং রাজনীতিবোধের উত্তরাধিকার দাবি করছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ, আরএসএস। সঙ্ঘের রাজনৈতিক শাখা বিজেপি’র সরকারও সেই অভিমুখে সক্রিয়। তবে কংগ্রেস নেতা হিসেবে ধর্মনিরপেক্ষতার প্রশ্নে সুভাষচন্দ্রের আপসহীন ভাবধারা বা পরে আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠনে তার প্রয়োগ বারবার অস্বস্তিতে ফেলছে আরএসএস এবং বিজেপি’কে।
মোদী দীর্ঘ ভাষণে ফের বলেছেন, ‘‘স্বাধীনতার পর নেতাজীকে যোগ্য সম্মান দেওয়া হয়নি। গত কয়েক বছর (প্রধানমন্ত্রীত্বে তাঁর মেয়াদে) এ কাজ শুরু হয়েছে। দিল্লিতে কর্তব্য পথে বসানো হয়েছে হলোগ্রাম।’’
স্বাধীনতার লড়াই এবং আজাদ হিন্দ ফৌজ, দু’য়ের ইতিহাসেই আন্দামান জড়িয়ে। স্বাধীনতা সংগ্রামীদের কঠোরতম সাজা দেওয়ার সেলুলার জেল আন্দামানেই। সেই তথ্য উল্লেখ মোদী। তিনি বলেছেন, ‘‘এখনও সেলুলার জেলের কুঠুরি থেকে অপ্রতিরোধ্য আবেগ আর যন্ত্রণার গুঞ্জন শোনা যায়।’’
কিন্তু সেলুলার জেলে বন্দি কারও নামে কোনও দ্বীপ নয় কেন?
মোদী বলেছেন, ‘‘পরমবীর চক্র প্রাপক সেনাদের নামে দ্বীপের নাম রাখার অর্থ সেনাবাহিনীর আত্মত্যাগের অমর কাহিনীকে স্মরণ। সাহস এবং বীরত্বের বার্তা দেওয়া।’’
রস আইল্যান্ডের পাশাপাশি ২০১৮’তে নীল এবং হ্যাভলকের দ্বীপের নাম বদলে শহীদ দ্বীপ এবং স্বরাজ দ্বীপ করার ঘোষণা করে কেন্দ্র। সুভাষচন্দ্রই এই নাম দিয়েছিলেন এদিন তা মেনে নিয়েছেন মোদী। তবে তাঁর এই অনুষ্ঠান ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ভুলতে পারবে না, সে দাবিও করেছেন প্রধানমন্ত্রী। মোদী বলেছেন, ‘‘আজাদির অমৃত কাল পর্বে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এই দিনটি মনে রাখবে।’’
সেলুলার জেল বরাবর আরএসএস’র কাঁটা। এ জেলেই বন্দি ছিলেন বীর সাভারকর। সঙ্ঘ যাঁকে ‘ভারতরত্ন’ দিতে চায়। মুক্তির জন্য ব্রিটিশ সরকারের কাছে মুচলেকা দিয়েছিলেন তিনি। ব্রিটিশের ভয়াবহ নিপীড়নের জন, কুখ্যাত এই জেলের একাধিক বন্দি পরে কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগও দিয়েছেন।
Comments :0