OECD REPORT

যুদ্ধ কারণ নয়, অতি মুনাফার
লোভে বাড়ানো হচ্ছে দাম:
রিপোর্ট ওইসিডি’র

আন্তর্জাতিক

রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতকে বিশ্ব অর্থনীতির শ্লথতার জন্য কতটা দায়ী করা যাবে? ইউরোপ এবং আমেরিকার দেশগুলির গোষ্ঠী ওইসিডি’র টাটকা রিপোর্ট প্রকাশের পর উঠছে সেই প্রশ্ন। অতি মুনাফার তাড়নাকে সম্ভাব্য কারণ হিসেবে দেখতে বাধ্য হচ্ছে শিল্পোন্নত দেশগুলির মধ্যে সমন্বয়ের এই গোষ্ঠী। 

রিপোর্ট জানাচ্ছে, জ্বালানির দাম যুদ্ধের আগের স্তরে ফিরে এসেছে। ২০২২’র গোড়ায় সামরিক সংঘাতে জড়ায় এই দুই দেশ। তবু বিশ্বের আর্থিক বৃদ্ধির হার ২.৭ শতাংশ ছাড়াবে না চলতি অর্থবর্ষে। ডিসেম্বরে যদিও ওইসিডি’র অনুমান ছিল আরও খারাপ, ২.২ শতাংশে দাঁড়াবে বিশ্বের অর্থনৈতিক উন্নয়নের হার। 

অর্থনীতিবিদরা মনে করাচ্ছেন যে বিশ্ব ব্যাঙ্কের তুলনায় অন্তত খানিকটা বাড়তি আশাবাদী ওইসিডি। বিশ্বব্যাঙ্কের সাম্প্রতিক অনুমান চলতি অর্থবর্ষের শেষে বিশ্বে বৃদ্ধির হার দাঁড়াবে ২.১ শতাংশ। করোনা পরিস্থিতির আগে, ২০১৪-২০১৯ পর্যন্ত গড় বার্ষিক বৃদ্ধির হার ছিল ৩.৪ শতাংশ। বস্তুত ২০০৮’এ সঙ্কটের পর থেকে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি বিশ্ব অর্থনীতি।  

৩৮ দেশের অর্থনৈতিক সমন্বয়ের গোষ্ঠী ‘অর্গানাইজেশন ফর ইকনমিক কোঅপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’, সংক্ষেপে ওইসিডি, প্রতিবেদনে জানাচ্ছে যে চলতি অর্থবর্ষের শেষে মূল্যবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে ৫.২ শতাংশ। গত অর্থবর্ষের শেষে বিশ্বে মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল ৭.৮ শতাংশ। 

রিপোর্ট বলছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আগের সময়ে জ্বালানির দামের স্তর যা ছিল এখন প্রায় তাই। অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর কিছু লক্ষণও দেখা যাচ্ছে। জ্বালানি এবং খাদ্য বাদ দিয়ে মূল্যবৃদ্ধি হিসেব করলে দেখা যাচ্ছে তা চড়া। তার কারণ জ্বালানির জন্য নয়, অতিরিক্ত মুনাফার জন্য উৎপাদকরা দাম বাড়াচ্ছে।

রিপোর্টে সংযোজন, মজুরি বাড়ানোর জন্য দাবিদাওয়ার কারণও জিনিসের দাম বাড়াচ্ছে। ওইসিডি’র এই বিশ্লেষণ যদিও আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠনের ব্যাখ্যার সঙ্গে মিলছে না। কারণ তাদের রিপোর্টে বারবারই বলা হচ্ছে অসুরক্ষিত এবং কম মজুরিতে কাজ করতে বাধ্য হওয়া শ্রমজীবীর সংখ্যা সমানে বাড়ছে। আয়স্তর কম থাকায় ঘাটতি হচ্ছে চাহিদায়। অর্থনীতিবিদদের অনেকেই বলছেন, চাহিদার ঘাটতি হচ্ছে মুনাফা সুরক্ষিত রাখার নীতিতে। বিশ্বজুড়ে কাটছে না সঙ্কট।

রিপোর্ট জানাচ্ছে, কোভিড নিষেধাজ্ঞা চীন তুলে নেওয়ায় বিশ্ব অর্থনীতিতে গতি সঞ্চারিত হয়েছে। গত বছরের শেষে কোভিড নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার সিদ্ধান্ত নেয় চীন। অনেকেই মনে করাচ্ছেন যে তখন পশ্চিমের দেশগুলিই চীনবিরোধী প্রচারে সক্রিয় ছিল।

Comments :0

Login to leave a comment