সরকারি কর্মচারীদের মিছিল করতে দিল না সরকারই। ধর্মতলায় পুলিশ এবং র্যা ফের বিরাট বাহিনী ঘিরে ফেলল কর্মীদের। কর্মচারীরা যদিও ঘেরাটোপের মধ্যে সভা করে জানিয়ে দিয়েছেন যে ধর্মঘট হচ্ছেই ১০ মার্চ।
ধর্মঘটের সমর্থনে বৃহস্পতিবার দু’টি মিছিলের ডাক দেন সরকারি কর্মচারীরা। একটি ধর্মতলায় লেনিন মূর্তি থেকে শিয়ালদহ। অপরটি হাজরা থেকে গোলপার্ক।
ধর্মতলায় বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ মিছিল শুরুর আগেই পুরো এলাকা ঘিরে ফেলে সরকারের পাঠানো পুলিশবাহিনী। মিছিল শুরু করতে গেলে বাধা দেওয়া হয়। শুক্রবার মিছিলে সমর্থন জানিয়ে যোগ দেন সিআইটিইউ’র মতো ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ।
সরকারি কর্মচারীদের ডিএ বকেয়া রেখেছে তৃণমূল কংগ্রেস সরকার। দীর্ঘদিন মামলা করে আটকে রাখা হয়েছে ন্যায্য পাওনা। সরকার কখনও বলেছে ‘টাকা নেই’। আবার কখনও বলেছে বকেয়া নেই। আদালতে বারবার গেলেও বিচারপতিরা স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে মহার্ঘভাতা কর্মীদের অধিকার।
বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনে আবার ৩ শতাংশ ডিএ দেওয়ার ঘোষণা করা হয়। অথচ বকেয়া ৩৫ শতাংশ। কর্মচারীরা প্রত্যাখ্যান করেন এই ঘোষণা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এবং তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা এখন ডিএ’র সঙ্গে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ দ্বন্দ্ব সাজিয়ে প্রচার করছেন। এক মন্ত্রী আবার বলেছেন, ভালো না লাগলে কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরি খুঁজে নিন।
রাজ্যের বামপন্থী আন্দোলন এবং ট্রেড ইউনিয়ন তীব্র ধিক্কার জানিয়েছে সরকারের মনোভাবে। কেবল সরকারি কর্মচারী নন, এই সরকার যে একশো দিনের কাজের মজুরিও না দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে, মনে করিয়েছেন নেতৃবৃন্দ। তাঁরা মনে করিয়েছেন, যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের কাজও দেয় না এই সরকার। বিপুল সম্পদ, ঘরে ঘরে লুকানো নগদের পাহাড় আর দুর্নীতির রাজনীতি একদিকে। আরেকদিকে সব অংশের শ্রমিক কর্মচারীদের বঞ্চনা চালাচ্ছে তৃণমূক, বলেছেন তাঁরা।
সরকারি কর্মচারী, শিক্ষক সহ কোষাগার থেকে বেতন বা ভাতা প্রাপ্ত সব অংশ জোট বেঁধেছে আন্দোলনে। কেবল ডিএ নয়, সরকারি শূন্যপদে নিয়োগ, অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ী করার দাবিতেও চলছে আন্দোলন।
এদিন পুলিশবাহিনীর সামনেই আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ জানিয়ে দিয়েছেন ১০ মার্চ ধর্মঘট হবেই। দফায় দফায় হয়েছে কর্মবিরতি। কেবল সরকারি কর্মী নন, সব অংশের মানুষের থেকে মিলেছে বিপুল সাড়া। সেই জন্যই ভয় পেয়েছে সরকার।
প্রায় দু’বছর নিয়োগের দাবিতে ধর্মতলার রাস্তায় অবস্থানে রয়েছেন চাকরির পরীক্ষায় সফল শিক্ষক পদপ্রার্থীরা। তাঁদের যৌথ মঞ্চও সংহতি জানিয়ে থেকেছেন সরকারি কর্মচারীদের পাশে। লড়াইয়ের স্পষ্ট বার্তা ঠেকিয়ে রাখতে পারেনি পুলিশি ব্যূহ-বেষ্টনী।
Comments :0