আবাস যোজনার সমীক্ষার তালিকা প্রকাশ্যে আসার পরে প্রতিদিনই অশান্তি, ক্ষোভ বিক্ষোভ অব্যাহত রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায়। মঙ্গলবার তালিকায় কারচুপির অভিযোগে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন জলপাইগুড়ি করলা ভ্যালি চা বাগানের শ্রমিকরা। শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়েছে সিআইটিইউ। ওদিকে জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বেলাকোবা অঞ্চলের ডাঙ্গাপাড়া এলাকায় বিক্ষোভ তুঙ্গে ওঠে এদিন। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার তালিকায় নাম না থাকায় এলাকাবাসীরা ক্ষিপ্ত হয়ে পথ অবরোধ করেন, প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ দেখান। এদিন একই ঘটনা ঘটেছে পুরুলিয়ায়। ‘ঘর চাই’-এই প্ল্যাকার্ড নিয়ে মঙ্গলবার পুরুলিয়ার আরশা ব্লকের ঝুঁঝকা মোড় এলাকায় পথ অবরোধ করেন আবাস যোজনার তালিকা থেকে বঞ্চিত গ্রামবাসীরা। আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন প্রধানত মহিলারা।
এলাকাবাসীর বক্তব্য যারা দিন আনে দিন খায় বাড়িঘর ভাঙ্গা অবস্থায় পড়ে রয়েছে তাদের আবাস যোজনা নাম নেই কিন্তু এলাকার যাদের পাকা ঘরবাড়ি এমনকি চাকরিও রয়েছে তাদের ঘরের লিস্টে নাম রয়েছে। তাদের দাবি স্বচ্ছ ভাবে সার্ভে করে যারা প্রকৃত ঘর পাওয়ার যোগ্য তাদের ঘর দেওয়া হোক। এদিন বেলা ১২টা নাগাদ জলপাইগুড়ি জেলার অরবিন্দ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার করলা ভ্যালি চা বাগানের শ্রমিকেরা ঘরের লিস্টে নাম না থাকায় জলপাইগুড়ি বিডিও অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায়। ঘরের লিস্টে চা শ্রমিকদের নাম যুক্ত করার দাবিতে ডেপুটেশন দেন। এ বিষয় চা বাগান শ্রমিক পবন ভূমিজ বলেন আমরা ২৩০ টাকা মজুরিতে বাগানে কাজ করি। এই টাকায় আমাদের দিন চলে না। আগে বাগান কর্তৃপক্ষ বাড়ি ঘরের দায়িত্ব নিতেন। বাগানে পঞ্চায়েত ঢোকার পর থেকে ধীরে ধীরে সে দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছে বাগান মালিক। তিনি বলেন, আমাদের বাড়িঘর নেই বললেই চলে। কি করে বাচ্চাদের পড়াবো? কি করে নিজেরা চলবো? সরকার থেকে ঘর আসার পর জানতে পারছি সমস্ত বড়লোকদের নামে রয়েছে ঘর, আমাদের নামে কোন ঘর নেই। আমরা জলপাইগুড়ি সদর বিধানসভার অন্তর্গত ১৭/২৫ বুথের বাসিন্দা, আমাদের বাগানে ৩০০ শ্রমিকের বসবাস। প্রত্যেকের বাড়ি কাঁচা। কারো বাড়িতে খড়ের ছাউনি, কারো কারো টিনের ঘর রয়েছে। অনেকের বর্ষাকালে চালে প্লাস্টিক টাঙিয়ে থাকে, ঘর সারাবার পয়সা নেই। তাদের মধ্যে মাত্র ২টি বাড়ির মালিকের নাম আছে ঘর প্রাপকদের লিস্টে। বারবার গ্রাম পঞ্চায়েতে বলে কাজ হয়নি, তাই আজ বাধ্য হয়ে আজ জলপাইগুড়ি সদর ব্লক এর বিডিও অফিসে বিডিওর কাছে এসেছি আমরা।
ডেপুটেশনে শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ায় সিআইডি ইউ, চা শ্রমিকদের সাথে বিডিওর সাথে দেখা করেন শ্রমিক নেতা কৃষ্ণ সেন শুভাশিস সরকার সহ অন্যান্য সি আই টি ইউ নেতৃবৃন্দ। সদর বিডিও দেবাশীষ মন্ডল বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে শোনেন এবং শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ও চা শ্রমিকদের জানান কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে যে সার্ভে বর্তমানে চলছে তাতে নাম যুক্ত করার কোন কথা বলা নেই। শ্রমিকদের দাবি ন্যায্য অবশ্যই আবাস যোজনার ঘর প্রাপকদের লিস্টে তাদের নাম থাকা উচিত ছিল।
Comments :0