Yechury on Buddhadeb Bhattacharjee

তাঁর কর্মকাণ্ড এখন আরও প্রাসঙ্গিক

উত্তর সম্পাদকীয়​

সীতারাম ইয়েচুরি

ছানি অপারেশনের পর ওটি থেকে বের হয়েই আমি দুঃসংবাদ শুনলাম যে বুদ্ধদা আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। বৌদির সঙ্গে কথা বললাম। আমি সদ্য ওটি থেকে বের হয়েছি শুনে আমাকে কলকাতায় আসার ধকল নিতে নিষেধ করলেন। যাইহোক, আমি বুদ্ধদার শেষ যাত্রায় যে অংশ নিতে পারলাম না, এই আপশোস আমার সারাজীবন থেকে যাবে।
স্বাভাবিকভাবেই, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কাজ এবং বাংলায় তাঁর অবদানের মূল্যায়ন করে ব্যাপক সংখ্যায় শোকসংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, আরও হবে। এগুলোর বেশিরভাগই লেখা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তাঁর ভূমিকাকে ঘিরে। এটাই স্বাভাবিক। তিনি জ্যোতি বসুর মতো ঐতিহ্যবাহী ব্যক্তির পদাঙ্ক অনুসরণ করেছিলেন; যিনি অনুভব করেছিলেন যে যতটা তিনি অবদান রাখতে পারছিলেন তা আর তাঁর পক্ষে আর সম্ভব হচ্ছে না, তাই স্বেচ্ছায় অবসর নিয়েছিলেন। বুদ্ধদাকে যখনই প্রশ্ন করা হতো যে জ্যোতি বসুর ছেড়ে যাওয়া পদাঙ্ক অনুসরণকে আপনি কিভাবে অনুভব করছেন? তাঁর স্বভাবসুলভ পরিহাস ও প্রজ্ঞার সঙ্গে তিনি মন্তব্য করতেন, ‘‘ছেড়ে যাওয়া ওই জুতোগুলো আমার তুলনায় অনেক বড় মাপের।’’
তাঁর এগারো বছরের মুখ্যমন্ত্রিত্বের কাল অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। কিন্তু তাঁর মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়াও আরও অনেকগুলো দিকের মধ্যে আমি অন্য দুটি দিক সম্পর্কে আলোকপাত করতে চাই। চার দশকের বেশি সময়কাল ধরে বুদ্ধদার সঙ্গে আমার সম্পর্কই এর কারণ।
বুদ্ধদা ছিলেন ষাটের দশকে বাংলার যে উজ্জ্বল তরুণ প্রজন্ম মার্কসবাদ ও বামপন্থী আন্দোলনের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিল, সেই প্রজন্মের মানুষ। ওই সময় আন্তর্জাতিক কমিউনিস্ট আন্দোলনের অভ্যন্তরে বিভিন্ন দিকগুলির মধ্যে তীব্র মতাদর্শগত সংগ্রাম চলছিল। ১৯৬৪ সালে সিপিআই (এম) গঠিত হলো এবং ব্যাপক মতাদর্শগত বিতর্ক শুরু হয়েছিল সংশোধনবাদী বিচ্যুতির বিরুদ্ধে যা সিপিআই’কে গ্রাস করেছিল। শীঘ্রই, আরেকটি অংশ, নকশালপন্থীরা, বাম হঠকারী বিচ্যুতির শিকার হলো। উগ্র মতাদর্শগত বিতর্ক চলছিল, যা অনেক ক্ষেত্রেই হিংস্র শারীরিক আক্রমণে পর্যবসিত হয়েছিল, কংগ্রেস এবং যুব কংগ্রেসের মদতে ও প্ররোচনায়। এই সমস্ত আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুই ছিল সিপিআই (এম)। বুদ্ধদা, অন্যদের সঙ্গে, এই মতাদর্শগত লড়াইয়ে ইস্পাতদৃঢ় ছিলেন এবং এই আক্রমণকে মোকাবিলা করে মার্কসবাদ-লেনিনবাদের বিপ্লবী মর্মবস্তুকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরেছিলেন। 
জরুরি অবস্থার পরবর্তী সময়ে, ১৯৭৭ সালে পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট সরকার গঠিত হয়, প্রায় একই সময়ে কেরালা ও ত্রিপুরার বাম সরকারগুলি গঠিত হলো। তখনও পর্যন্ত সোভিয়েত ইউনিয়নের কমিউনিস্ট পার্টি, কয়েকটি ব্যতিক্রম ছাড়া সামগ্রকিভাবে আন্তর্জাতিক কমিউনিস্ট আন্দোলন, সিপিআই (এম)’কে স্বীকৃতি দেয়নি। ১৯৭৭ পরবর্তী সময়ে, ভারতের সবচেয়ে অগ্রসর এবং সর্ববৃহৎ কমিউনিস্ট পার্টি হিসাবে সিপিআই (এম)’র আত্মপ্রকাশ আন্তর্জাতিক কমিউনিস্ট আন্দোলনের সামনে বিষয়টি দ্রুত পুনর্বিবেচনার প্রশ্ন তুলে ধরেছিল।   
যার ফলশ্রুতিতে, সিপিআই (এম) গঠিত হওয়ার পর প্রথমবার সোভিয়েত ইউনিয়নের কমিউনিস্ট পার্টির যুব সংগঠন, কমসোমল, ভারত থেকে ৮টি ছাত্র-যুব সংগঠনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল ডিওয়াইএফআই এবং এসএফআই সহ। বিভিন্ন রাজ্যে থাকলেও সর্বভারতীয় স্তরে তখনও ডিওয়াইএফআই গড়ে ওঠার প্রক্রিয়ায় ছিল। পশ্চিমবঙ্গ থেকে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং কেরালা থেকে ইপি জয়রাজন ছিলেন ডিওয়াইএফআই প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক।  তাই ডিওয়াইএফআই’র যুগ্ম-আহ্বায়ক হিসাবে ওঁরা দু’জন এবং এসএফআই’র সাধারণ সম্পাদক নেপালদেব ভট্টাচার্য ও যুগ্ম-সম্পাদক হিসাবে আমি, আমাদের এই চারজনের প্রতিনিধিদলের নেতা ছিলেন বুদ্ধদা। আমরা সাম্রাজ্যবাদবিরোধী এবং ভারত-সোভিয়েত মৈত্রীকে শক্তিশালী করার বিষয়ে একটি আলোচনাচক্রে অংশ নিয়েছিলাম। এই আলোচনায় সমাজতান্ত্রিক চীনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল।  
আমি মনে করেছিলাম এই প্রশ্নে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরা প্রয়োজন। বুদ্ধদার সঙ্গে আলোচনা করতে উনি সম্মত হলেন। তখন আমি একটা খসড়া নোট তৈরি করলাম, যে প্রয়োজনীয় পয়েন্টগুলি আমরা সবসময় গুরুত্ব দিতে চাই সেগুলো তুলে ধরা হলো: সংশোধনবাদী বিচ্যুতির শিকার হয়ে সোভিয়েত ইউনিয়নের কমিউনিস্ট পার্টি অনেকেগুলি ভুল করা সত্ত্বেও, সিপিআই (এম) কখনও সোভিয়েত ইউনিয়নকে অ-সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসাবে চিহ্নিত করে না। আমরা মনে করি, সমাজতান্ত্রিক কাঠামোর মধ্যেই এই ত্রুটির সংশোধন করা সম্ভব। 
ঠিক একইভাবে, চীনের কমিউনিস্ট পার্টির গুরুতর বিচ্যুতিগুলি এবং সোভিয়েত ইউনিয়নকে ‘সামাজিক সাম্রাজ্যবাদ’হিসাবে চিহ্নিত করার বিষয়টিও সিপিআই(এম) দৃঢ়ভাবে বিরোধিতা করেছে। চীনে তখন যে সমস্ত ঘটনা ঘটছিল, সেগুলির বিভিন্ন দিক সম্পর্কে আমাদের সমালোচনা ছিল, কিন্তু তা সত্ত্বেও একই নীতির ভিত্তিতে আমরা মনে করি চীন একটি সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসাবেই অবস্থান করছে। আমরা বিশ্বাস করি, চীনের কমিউনিস্ট পার্টি এই  ত্রুটিগুলো কাটিয়ে উঠতে পারবে। ইতিমধ্যেই, চীনে দেঙ জিয়াও পিঙের নেতৃত্বে সংস্কার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। 
অন্যান্য বিষয়গুলির সাথে, এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো যে আমাদের প্রতিনিধিদল এই পয়েন্টগুলি গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরবে। আমি আমার নোটটা চূড়ান্ত করে বুদ্ধদাকে দিলাম, যাতে উনি দলের নেতা হিসাবে এটি পরদিনের অধিবেশনে পাঠ করেন। উনি বললেন, ‘‘না, তুমি এটার খসড়া করেছো, তোমারই উচিত এটা পেশ করা।’’
মূল বিষয় হলো, মার্কসবাদ-লেনিনবাদের বিপ্লবী মর্মবস্তুর প্রতি আনুগত্য, যা সিপিআই (এম) যথাযথভাবে অনুসরণ করে চলেছে, তাকে পুনরায় তুলে ধরা। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে আমাদের এই বক্তব্য কমসোমলের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না, কংগ্রেস এবং সিপিআই’র প্রতিনিধিদলের কাছেও এটা গ্রহণযোগ্য ছিল না। ঘটনা এটাই যে আমরা আপসহীনভাবে আমাদের মতাদর্শগত অবস্থানের প্রতি অনুগত ছিলাম, বুদ্ধদা তাঁর সারা জীবনব্যাপী ধারাবাহিকভাবে যে বৈশিষ্ট্যের অধিকারী ছিলেন।  
দ্বিতীয়ত, বুদ্ধদা, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের প্রতি তাঁর সাবলীলতা সহ বিশ্বাস করতেন যে ভারতে শাসক শ্রেণির বিরুদ্ধে কোনও গুরুতর চ্যালেঞ্জ সংস্কৃতির ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত জোর দেওয়া ছাড়া সংগঠিত করা যাবে না। গ্রামসির ধারণা অনুসারে, জনগণের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ কায়েম রাখতে এবং তাদের শ্রেণি শাসনকে সুসংহত করতে সক্রিয় শাসক শ্রেণির মতাদর্শের আধিপত্যের প্রতি-আধিপত্যকে জোরদার করার জন্য সংস্কৃতিকে অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসাবে রাখতে হবে। গ্রামসি উল্লেখ করেছিলেন যে শাসক শ্রেণিগুলি কেবল তাদের দুর্গ থেকেই নয়, সেই দুর্গের চারপাশে মাটি দিয়ে ঘেরার মতো একটি বিশাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমেও তাদের আধিপত্য প্রয়োগ করে। এই নেটওয়ার্কগুলি প্রাথমিকভাবে মানুষের সামাজিক চেতনা, ধর্মের উপর তাদের নির্ভরতা, অন্যান্য প্রচলিত ধারণার সাহায্যে কাজ করে থাকে, একটি সাংস্কৃতিক প্রতি-আধিপত্যবাদের মাধ্যমে যার মোকাবিলা করা প্রয়োজন।
এই সাংস্কৃতিক প্রতি-আধিপত্যের দিকে বুদ্ধদা দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছিলেন এবং সংহত করতে খুবই আগ্রহী ছিলেন। সাংস্কৃতিক কর্মীদের একটি সম্ভ্রান্ত উত্তরাধিকার নিয়ে আসা বুদ্ধদা কিংবদন্তি বিপ্লবী কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ভাইপো ছিলেন, তিনি বামফ্রন্ট সরকারে তথ্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী থাকাকালীন এটি অনুসরণ করেছিলেন।
তিনি মন্ত্রী থাকাকালীন আমরা প্রায়শই মতবিনিময় করতাম, আলোচনা করতাম। একদিন, দিল্লিতে বিটলভাই প্যাটেল হাউসে আমি যে ফ্ল্যাটে থাকতাম তার বারান্দায় কথা বলার সময় তিনি দিল্লিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারে একটি কালচারাল সেন্টার খোলার বিষয়ে আলোচনা করছিলেন এবং আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, এই কাজ করার মতো যোগ্য কেউ আছে কি না। সেই সময়েই আমি উত্তরাখণ্ডের শ্রীনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করা সফদার হাসমিকে রাজি করিয়েছিলাম, পদত্যাগ করে এই ধরনের একটি কেন্দ্র চালু করতে এগিয়ে আসার জন্য। বুদ্ধদার সমর্থন ও সহযোগিতায় সফদার আরও অনেকগুলি কর্মকাণ্ডের মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য কাজ করেছিলেন, ভারতীয় চলচ্চিত্রের প্রায় বিস্মৃত প্রতিভা ঋত্বিক ঘটকের কাজকে পুনরুজ্জীবিত করেছিলেন।
শেষপর্যন্ত বুদ্ধদা মুখ্যমন্ত্রীর পদ গ্রহণ করেন যখন বাংলায় অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি পর্যায় প্রায় সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। ভূমি সংস্কার এবং অপারেশন বর্গা সাফল্যের সাথে বাস্তবায়িত হয়েছিল। এরফলে কৃষি ক্ষেত্র থেকে উৎপাদন এবং উদ্বৃত্তের অসাধারণ বৃদ্ধি পায়। এটি গ্রামবাংলার পুষ্টি ও স্বাস্থ্যের অবস্থার ব্যাপক উন্নতি ঘটায় এবং গ্রামীণ যুবকদের কৃষিজমিতে নির্ভর করার বাধ্যবাধকতা থেকে মুক্ত করে। এই যুবকদের তখন কর্মসংস্থানের প্রয়োজন ছিল, যার জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করতেই হতো। একমাত্র উপায় ছিল দ্রুত শিল্পায়ন।
কিন্তু প্রশ্ন ছিল কীভাবে এই শিল্পায়ন ঘটানো হবে– বিদেশি পুঁজি, দেশীয় একচেটিয়া পুঁজির সাহায্য নিয়ে, নাকি কৃষি ও অন্যান্য উৎপাদন ক্ষেত্রে সমবায়ের বিকাশের মাধ্যমে এবং এই ধরনের অনেক বিকল্প নিয়ে তখন আলোচনা করা হয়েছিল। সেই সময়টা ছিল দেঙ জিয়াও পিঙ-এর সংস্কারের অধীনে চীনের অর্থনীতিতে অভূতপূর্ব বৃদ্ধির একটি সময়, এবং এটা এমন একটি সময় ছিল যখন বিদেশি পুঁজি এবং দেশীয় একচেটিয়া পুঁজির বড় অংশগুলি তাদের মুনাফা সর্বাধিক করার জন্য বিনিয়োগের সুযোগ খুঁজছিল। বিভিন্ন দেশ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে অনেক প্রস্তাব আসছিল। তারপরে টাটাদের তরফ থেকে একটি গাড়ি কারখানার জন্য প্রস্তাব আসে। এটিকে শিল্পায়নের দিকে এগতে একটি বাস্তবসম্মত এবং কার্যকর পথ হিসাবে দেখা হয়েছিল।
যাইহোক, যে পরিস্থিতিতে সিঙ্গুরে এই প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল এবং নন্দীগ্রাম সহ অন্যত্র শিল্পায়নের জন্য বলপূর্বক জমি অধিগ্রহণের আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল তাতে হিংসাত্মক বিরোধিতা তৈরি হয়েছিল। বলপূর্বক অধিগ্রহণের এই আশঙ্কার বাস্তবে কোনও ভিত্তি ছিল না, কিন্তু যে কৃষক এবং গ্রামীণ জনগণ সিপিআই(এম)’র শ্রেণি ও সামাজিক ভিত্তির মেরুদণ্ড ছিল, তাঁদের মধ্যে অসন্তোষ ও তাঁদের সঙ্গে বিচ্ছিন্নতা তৈরি করেছিল।
এই ধরনের বিচ্ছিন্নতাকে তৃণমূল কংগ্রেস এবং সেইসব পুরানো জোতদাররা সম্পূর্ণভাবে ব্যবহার করেছিল, যাদের জমি ভূমি সংস্কার বা অপারেশন বর্গার মাধ্যমে নিয়ে নেওয়া হয়েছিল। তখন তারা হিংসাত্মক উপায়ে এই জমিগুলি পুনরুদ্ধার করতে চাইছিল। ঠিক এই সময়ে ভারত-মার্কিন পারমাণবিক চুক্তির ঘটনা এবং কেন্দ্রে ইউপিএ সরকার থেকে বাম দলগুলি সমর্থন প্রত্যাহার করে। এরপরে কংগ্রেস এবং তৃণমূল কংগ্রেস একটি নির্বাচনী ফ্রন্ট গঠন করে। আরএসএস থেকে মাওবাদী সংগঠন পর্যন্ত সমস্ত বাম-বিরোধী শক্তি এতে যোগ দিয়েছিল। এই মহাজোট বুদ্ধদার সরকার এবং তার অভিযানের অবসান ঘটায়।
বুদ্ধদার দৃষ্টিভঙ্গি ছিল সময়ের চাহিদা– শিল্পায়ন করা এবং বাংলার যুবসমাজ যারা তুলনামূলকভাবে শিক্ষায় এগিয়ে থাকা তাদের কর্মসংস্থানের বন্দোবস্ত করা, এটা আজ প্রমাণিত হয়েছে। সেই সুযোগ না থাকায় বর্তমানে বিভিন্ন রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যকই বাংলার।
বুদ্ধদার মুখ্যমন্ত্রিত্বের এই এগারো বছর সম্পর্কে আরও অনেক কিছু লেখা যেতে পারে এবং লেখা উচিতও। বাংলায় তিনি যে সকল বিষয় তুলে ধরেছিলেন তার প্রতিটি বিষয়ে আরও অনেক কিছু লেখা যাবে। তবে এর জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আমরা যখন বুদ্ধদাকে বিদায় জানাই এবং আমাদের লাল সেলাম দিয়ে তাঁকে অভিবাদন জানাই, তখন আমাদের অবশ্যই স্মরণে রাখতে হবে যে তিনি বাংলার জন্য, বিশেষ করে বাংলার যুবদের জন্য যে কর্মসূচি এগিয়ে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন তা তাঁর সময়ের থেকেও এখন বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে গেছে।
 

Comments :0

Login to leave a comment