Kolkata's vistiwalas

জল কেনার লোক কমছে, গ্রামে ফিরছেন তসদুকরা

কলকাতা

Kolkatas vistiwalas

ঘড়িতে তখন বাজে বেলা ৩:৩০। মধ্য কলকাতার ঘিঞ্জি গলির ভিতরের ছোট্ট ভাড়া ঘরে চরম ব্যস্ততা। চামড়ার ঝোলা ভরে জল নিতে হবে, বিক্রির জন্য। ওই ফেরি করাই জীবিকা তাঁদের, শহরের পরিচিত ভিস্তিওয়ালাদের। 

 


পেশা বহু পুরনো। এখনও টিঁকে আছে কেবল কলকাতার মধ্য এবং উত্তরের কিছু এলাকায়। রিপন স্ট্রিটে বাসা মহম্মদ তসদুকদের। আগে এক ঘরে থাকতেন আটজন। এখন থাকেন পাঁচজন। ওই ঘরের মধ্যেই থাকা খাওয়া। ছাগলের চামড়া দিয়ে তৈরি ব্যাগে জল ভরে সেই জল বাড়ি বাড়ি তাঁরা দিতেন। কিন্তু এখন এভাবে জল নেওয়ার চাহিদা কমেছে। লোকে জল খাচ্ছেন না তা নয়। বহু বাড়িতে বা অন্তত মহল্লায় রয়েছে জলের লাইন। কারও বাড়িতে রয়েছে পরিশোধনের নিজস্ব যন্ত্রও। চাহিদা কমেছে ভিস্তিওয়ালাদের। নিজেদের গ্রামে ফিরে গিয়ে রাজমিস্ত্রী বা জোগাড়ের কাজ করছেন অনেকে। 


মহম্মদ তসদুকের গ্রাম বিহারের কাঠিয়ায়। কলকাতায় এসেছিলেন ১৯৭৬-এ। তিনি বলেন, ‘‘অল্প বয়সে যখন এই শহরে এসেছিলাম তখন ভালোই রোজগার ছিল। কিন্তু এখন আর সেই রোজগার নেই। যা আয় হয় তার থেকে বাড়িতে কিছু পাঠানো সম্ভব হয় না।’’ মধ্য কলকাতার একটি ছোট্ট ঘরে থাকেন মহম্মদ তসদুক ও তাঁর সঙ্গীরা। মাচা করে আরও কয়েকজন থাকতেন, যাঁরা এই ভিস্তি পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এখন আর নেই। চাহিদা কমায় কলকাতা ছেড়ে নিজেদের গ্রামে ফিরতে হয়েছে তাঁদের। সেখানেই ছোট খাটো কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন।


ছাগলের চামড়া দিয়ে তৈরি ঝোলার ওজন চার থেকে পাঁচ কেজি। তার মধ্যে জল ধরে  ৪০ কেজি। সেই ব্যাগ কাঁধে করে ঘুরে ঘুরে জল দেন ভিস্তিওয়ালারা। মহম্মদ তসদুক ও তাঁর সঙ্গীরা তাই এখন চিন্তায় রয়েছেন আর কতদিন এই কাজ তার চালাতে পারবেন। তাঁদের কেউ কেউ গ্রামে ফেরার পথে। তাঁদের জন্য নেই কোনও রেশন।       
 

ছবিগুলি তুলেছেন অমিত কর।

Comments :0

Login to leave a comment