TRAM PROTEST TU

ট্রাম বন্ধ করে ডিপো বিক্রির প্রতিবাদে মিছিলের ডাক শ্রমিকদের

কলকাতা

শনিবার বালিগঞ্জে তোলা ছবি।

ট্রাম পরিষেবা বাঁচানো ও ট্রাম ডিপোর জমি বিক্রির বিরুদ্ধে পথে নামতে চলেছে সব কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন। ৩০ সেপ্টেম্বর দুপুর ১ টায় রাজাবাজার ট্রাম ডিপোর সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল করবেন ট্রাম শ্রমিক এবং কর্মীরা। সব মানুষকে এই আন্দোলনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন।
শনিবার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন সিআইটিইউ পশ্চিমবঙ্গ কমিটির সম্পাদক অনাদি সাহু এবং সভাপতি সুভাষ মুখার্জি।
শনিবার ধর্মতলা ট্রামডিপোর ছবি। প্রায় এক ঘন্টা মধ্যে কোনও যাত্রীবাহী ট্রাম নেই। ট্রামকর্মীরা জানাচ্ছেন, ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য ভাড়ায় ট্রাম খাটানো হচ্ছে। অন্যদিকে যাত্রীদের জন্য পরিষেবা নেই।
রাজ্য সরকার কলকাতায় ট্রাম বন্ধ করে দেওয়ার সুপারিশ জানিয়েছে। এর আগে কলকাতার রাস্তায় সব রুটে ট্রাম চালানোর দাবিতে হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা হয়। সেই মামলা এখনও বিচারাধীন। সেই পরিস্থিতিতে রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী জানিয়েছেন, আমরা ধর্মতলা থেকে ময়দান অবধি হেরিটেজ আকারে একটি সুসজ্জিত ট্রাম চালাবো। হাইকোর্ট যে মামলা হয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট আমাদের থেকে জানতে চেয়েছে সরকারি সিদ্ধান্ত কী। আমাদের সিদ্ধান্ত যথা সময়ে কোর্টকে জানিয়ে দেব। তিনি বলেন যে বাকি রুটে ট্রাম চলবে না। 
আপাতত হাইকোর্টে রায়ের উপর নির্ভর করছে ট্রামের ভবিষ্যৎ। তবে ট্রাম ডিপোর বিপুল জমি রিয়েল এস্টেটের জন্য বিক্রির প্রতিবাদও উঠছে সর্বত্র। সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের অভিযোগ, ট্রাম ডিপোর জমি বিক্রির জন্যই এই সক্রিয়তা সরকার। গণপরিবহণের সব ক্ষেত্রে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারি পরিষেবা তুলে দিতে চাইছে। সবটাই বেসরকারি হাতে দিতে চাইছে। তার বিরুদ্ধে লড়াই চলবে।
সিপিআই(এম)’র ফেসবুক পেজে একটি তালিকাও প্রকাশ করা হয়েছে। বলা হয়েছে টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপোর ২৪৪.৫ কাঠা জমি ১৮১ কোটি টাকায় বিক্রি করা হয়েছে বেলানি গোষ্ঠীকে। গ্যালিফ স্ট্রিটের ১৪.৯৫ কাঠা জমি বিক্রি করা হয়েছে ৬.৫১ কোটি টাকায় গোয়েঙ্কা গোষ্ঠীকে। এই গোষ্ঠীকেই বিক্রি করা হয়েছে খিদিরপুরে ২১.৮৮ কাঠা এবং কালীঘাট ট্রামডিপোর ১২.৩৩ কাঠা জমি। খিদিরপুরে ১৩.২১ কোটি এবং কালীঘাটে ৪.০১ কোটি টাকায় বিক্রি হয়েছে জমি। বেলগাছিয়া ট্রাম ডিপোর ৫২ কাঠা এবং শ্যামবাজার ট্রাম ডিপোর ৩১ কাঠা জমি নিলাম হবে।  
এক ট্রাম কর্মী বলেন, "রাজ্য সরকারের কলকাতার সাতটি ট্রাম ডিপো বিক্রি করে দিয়েছে, সেটা সত্যি। ট্রাম ডিপোর বেশি ভাগ অংশটাই বিক্রি হয়ে গেছে। কিন্তু এই মামলাটি হাইকোর্টে বিচারাধীন। আমরা ধর্মতলা থেকে শ্যামবাজার ও ধর্মতলা থেকে গড়িয়াহাট এই দুটি রুটে ট্রাম এখনও চালাচ্ছি।’’ 
এক যাত্রী বলেন, "ট্রামের সাথে আমাদের অনেক স্মৃতি জড়িত। ট্রাম বন্ধ করে দিলে পরবর্তী প্রজন্ম ট্রামের সম্পর্কে কিছুই জানবে না। আমি চাইব সরকার বিকল্প উপায়ে ট্রাম চালানোর ব্যবস্থা করুক।" 
ট্রাম বন্ধ করার কথা বলার পরেই কলকাতা ট্রাম ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশনের তরফে শ্যামবাজার ট্রাম ডিপোর সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি করে। তাঁদের তরফে বলা হয়, ট্রাম শহরের হেরিটেজ, কোনও ভাবেই বন্ধ করা যাবে না। আমার এরপর থেকে শহরের বিভিন্ন ট্রাম ডিপোর সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি করবো। দরকার পরলে আরোও বড় আন্দোলনে পথেও আমার হাটব।

Comments :0

Login to leave a comment