Md Salim

জনতার সম্মিলিত স্বরকে ভয় পেয়েছে শাসকদল: স্মরণসভায় সেলিম

রাজ্য জেলা

আর জি করের চিকিৎসকের ধর্ষণ খুনের প্রতিবাদে নাগরিক সমাজ, নতুন প্রজন্ম সোচ্চারে রাস্তায় নেমেছে। আতঙ্কিত শাসকরা এখন বামপন্থাকে দেখতে পাচ্ছে। প্রশ্ন তুলেছে, আজাদির স্লোগান কেন উঠেছে? আজাদি মানে তো স্বাধীনতা। ১৩ বছর ধরে অনেক ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে। মানুষ এই পরিমন্ডল থেকে বেরিয়ে এসে স্বাধীনতার স্বাদ পেতে চাইছেন। স্বাধীনতার কথায় এত ভয় কীসের?
শুক্রবার বিরাটির সুভাষ ময়দানে একথা বলেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। এদিন কমরেড সীতারাম ইয়েচুরি ও কমরেড বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের স্মরণসভায় স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে একথা বলেন তিনি। 
সেলিম বলেন, ব্রিটিশ পুলিশ কবি নজরুল ইসলামকে দেশদ্রোহী বলে কারাগারে রেখেছিল। কবি জেলের সব বন্দিদের নিয়ে গান করতেন ‘কারার ওই লৌহ কপাট, ভেঙে ফেল কর রে লোপাট’। এতে জেলার ভয় পেয়েছিলেন এই ভেবে যে এই গানের মধ্যে দিয়ে সব অরাজনৈতিক বন্দিকে রাজনীতির আঙিনায় টেনে আনা হচ্ছে। তেমনি আর জি কর কান্ডের নাগরিক সমাজ রাস্তায় নেমে আওয়াজ তুলেছে ‘জাস্টিস ফর আর জি কর’। মানুষের এই সম্মিলিত আওয়াজকেই ভয় পেয়েছে শাসকদল। 
সিপিআই(এম) উত্তর ২৪ পরগনা জেলার আহ্বানে এদিনের স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে সভাপতি ছিলেন সিপিআই(এম) উত্তর ২৪ পরগান জেলা সম্পাদক মৃণাল চক্রবর্তী। বক্তব্য রাখেন পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী। এদিনের সভায় শোক প্রস্তাব পাঠ করেন পার্টির রাজ্য সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য পলাশ দাশ। শুরুতে কমরেড সীতারাম ইয়েচুরি ও কমরেড বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রতিকৃতিতে মালা দেন পার্টির নেতৃবৃন্দ সহ সাধারণ নাগরিকরা।
মহম্মদ সেলিম বলেন, ৫ সপ্তাহের মধ্যে দুই সিপিআই(এম) নেতার সবদেহ বহন করেছি। এঁরা আমার দাদা, বন্ধু, শিক্ষক,গুরু, উৎসাহদাতা এমনকি কঠোর সমালোচকও ছিলেন।  যাঁরা মানুষকে ভালোবাসেন, রাজ্য ও দেশকে ভালোবাসেন, যাঁরা জাতপাত নির্বিশেষে মানুষের মেলবন্ধন দেখতে চান। যাঁরা সমাজকে প্রগতির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে চান তাঁদের কাছে সময়টা যন্ত্রণার। প্রয়াত নেতাদের জীবন দর্শন সাম্যের পক্ষে। সেই সাম্য শুধু নারী পুরুষের নয়। এমন এক সমাজের স্বপ্ন তাঁরা দেখেছিলেন যে সমাজে জাতপাত, ধর্ম, সমাজিক অবস্থান ভেদাভেদের বার্তা বহন করে না। 
এদিন সুজন চক্রবর্তী বলেন, কমরেড সীতারাম ইয়েচুরির জীবনাবসানের খবর পাওয়ার পর জলপাইগুড়ির পার্টি অফিসের কর্মী অঝোরে কেঁদেছিলেন। কারণ সীতারাম ইয়েচুরি তাঁর বন্ধু ছিলেন। এইরকম বহু রিকশাচালক, চায়ের দোকানের কর্মচারীও সীতারাম ইয়েচুরির বন্ধু ছিলেন। তিনি মানুষের সঙ্গে মিশতেন। দিল্লির কৃষক আন্দোলনের সময় কৃষক নেতা হান্নান মোল্লা বলেছিলেন, আন্দোলনে সকলের সঙ্গে সমন্বয় তৈরি করতে সীতারাম ইয়েচুরির অবদান ভোলার নয়। সংসদে তাঁর বক্তৃতা ইতিহাস হয়ে আছে। জাতপাত বিভাজনের কোন গল্প তাঁর জীবনে ছিল না। দেশের রাজনীতিতে তাঁর আদর্শগত অবস্থান মানুষ মনে রাখবেন। তিনি সংসদে বারে বারে তাঁর বক্তৃতায় আর এস এস-র তত্ত্বকে খন্ডন করেছেন। দেশের মানুষের কাছে স্পষ্ট করেছেন আর এস এস বিপদ কে। 
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের স্মৃতিচারণে চক্রবর্তী বলেন, যুব সমাজকে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন, শিক্ষিত বেকার যুবক- যুবতীরা যাতে রাজ্যের বাইরে যেতে না হয় তার প্রচেষ্টা করে ছিলেন।  বই মেলাকে উৎসবে পরিণত করেছিলেন।সুস্থ সংস্কৃতির প্রসারে গড়ে তুলে ছিলেন নন্দন সহ রাজ্য জুড়ে অসংখ্য রবীন্দ্রভবন। ভবিষ্যত বাংলাকে তৈরি করতে চেয়েছিলেন।

Comments :0

Login to leave a comment