এদিন বেলা ৩টে নাগাদ সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে দশ হাজারেরও বেশি শিক্ষক মিছিল শুরু করেন। মিছিল রানী রাসমণি রোডে পৌঁছলে সভার কাজ শুরু হয়। শিক্ষক সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে উৎখাত করার লড়াই শুরু হয়ে গিয়েছে। সেই লড়াইয়ের সামনের সারিতে রয়েছেন শিক্ষকরা। প্রাক্তন ছাত্র কর্মী এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমার কর্তব্য শিক্ষকদের পাশে এসে দাঁড়ানো, তাঁদের দাবির সপক্ষে গলা মেলানো।
চক্রবর্তী এদিন মুখ্যমন্ত্রীকে সরাসরি নিশানা করে বলেন, সরকারি কর্মচারীদের নোংরা ভাষায় আক্রমণ করে চলেছেন মমতা ব্যানার্জি। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে স্বল্প হলেও কিছু সম্মান তিনি এতদিন পেতেন। কিন্তু তাঁর এই আচরণের ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে তাঁর প্রতি ঘৃণা তৈরি হয়েছে। রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তের মানুষ তাঁকে নবান্নের ১৪ তলা থেকে টেনে নামানোর বিষয়ে মনস্থির করে ফেলেছেন।
এরই সঙ্গে চক্রবর্তী বামফ্রন্ট সরকারের সময়কালে সরকারী কর্মচারীদের অবস্থা বর্ণনা করে বলেন, জ্যোতি বসু কিংবা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য শিক্ষক এবং সরকারি কর্মচারীদের তাঁদের সমকক্ষ মনে করতেন। তাঁরা সরকারি কর্মচারীদের প্রশাসনিক ব্যবস্থার মূল চালিকা শক্তি হিসেবে দেখতেন। স্বাভাবিক ভাবে ২০১১ সালের আগে অবধি সরকারি কর্মচারীদের যোগ্য সম্মান পেতে কোনও অসুবিধা হয়নি। কিন্তু মমতা ব্যানার্জি এবং তাঁর প্রশাসন সরকারি কর্মচারীদের কুকুর-বেড়াল মনে করেন। তার ফলেই তাঁদের চোর ডাকাত ইত্যাদি বিশেষণে ভূষিত করার ঔদ্ধত্য দেখাতে পারেন মমতা ব্যানার্জি।
এদিন সভা থেকে সুজন চক্রবর্তী প্রস্তাব দেন, শহীদ মিনারের সভায় গিয়ে আন্দোলনরত সরকারি কর্মচারীদের সংহতি জানানোর বিষয়ে। শিক্ষক নেতৃবৃন্দ সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেন। এরপর দশ হাজারের বেশি শিক্ষক মিছিল করে শহীদ মিনারের দিকে রওনা হন। পথে পুলিশ বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও তাতে বিশেষ কাজের কাজ হয়নি।
এদিন শিক্ষক সমাবেশ থেকে ঠিক হয়, শুক্রবার ব্যাজ পরে শিক্ষকরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ‘চোর-ডাকাত’ উপমার প্রতিবাদ জানাবেন। ব্যাজে লেখা থাকবে, আমরা শিক্ষক, আমরা সমাজ গড়ার কাজ করি। আমরা চুরি ডাকাতি করি না। শহীদ মিনারের বিক্ষোভ সমাবেশে গিয়ে আন্দোলনকারীদের দুই মঞ্চ- সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ এবং যৌথ মঞ্চ নেতৃবৃন্দের কাছ থেকে ব্যাজ পরিধান কর্মসূচির অনুমোদন সংগ্রহ করেন শিক্ষক নেতৃত্ব।
এদিনের মিছিল এবং সভায় এবিটিএ ও এবিপিটিএ’র তরফে মোহনদাস পন্ডিত, সুকুমার পাইন, ধ্রুবশেখর মন্ডল, সুদীপ্ত গুপ্ত সহ শিক্ষক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ১২ জুলাই কমিটির তরফে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন সুমিত ভট্টাচার্য।
Comments :0