শুরু হচ্ছে সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়নের সর্বভারতীয় সম্মেলন। বুধবার হাওড়ার শরৎ সদনে শুরু হয়ে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে সম্মেলন। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন সম্মেলনে।
১৭ ফেব্রুয়ারি সম্মেলনের প্রকাশ সমাবেশ হবে হাওড়ায়। বক্তব্য রাখবেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী এবং সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো সদস্য পিনারাই বিজয়ন। বক্তব্য রাখবেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক এবং পলিট ব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিমও।
নয়া উদারবাদের তিন দশকের কিছু বেশি সময়ে কৃষির ওপর আক্রমণ মারাত্মক। সবচেয়ে আক্রান্ত প্রান্তিকতম অংশ খেতমজুররা। কাজের খোঁজে তাঁদেরই যেতে হয় বাইরে। একশো দিনের কাজে বরাদ্দ কমায় বিপদ আরও বেড়েছে। পশ্চিমবঙ্গে তো এক বছর ধরে রেগায় কাজ নেই, মজুরি নেই। আবাস যোজনায় নাম বাদ গিয়েছে গ্রামের গরিবের। এবারের কেন্দ্রীয় বাজেটে রেগায় বরাদ্দ কমানো হয়েছে। কমানো হয়েছে কৃষির বিভিন্ন ক্ষেত্রে বরাদ্দ। সারে ভরতুকি কমে গিয়েছে। জীবনজীবিকায় আক্রমণের বিভিন্ন দিক এবং প্রতিরোধের অভিজ্ঞতা জানাবেন প্রতিনিধিরা।
মোদি সরকার প্রতি বছর ধাপে ধাপে রেগার বরাদ্দ ছাঁটাই করে চলেছে। চলতি বছরের সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ ছিল ৮৯৪০০ কোটি টাকা। আগামী বছরের জন্য বাজেটে বরাদ্দ করা হয়েছে ৬০০০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ চলতি বছরের অনুমিত খরচের তুলনায় এবার ৩৩ শতাংশ কম বরাদ্দ। গ্রামীণ জনজীবনে বিপদ বাড়বে, জানিয়েছে খেতমজুর ইউনিয়ন।
সংগঠন বলেছে, জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান নিশ্চয়তা আইন অনুযায়ী ১০০ দিনের নিশ্চয়তার বদলে জবকার্ড প্রতি সর্বোচ্চ ৫-৭ দিন কাজ পাওয়া সম্ভব। বরাদ্দের ৫ শতাংশ প্রশাসনিক ব্যয় এবং ৬০ শতাংশ মাল, মসলা বা নির্মাণ সামগ্রী কেনার খরচ বাদে মজুরি দেওয়ার জন্য থাকবে ২১০০০ কোটি টাকা। দেশে সক্রিয় জবকার্ড আছে ১৫ কোটি। এরা সকলেই কাজের দাবি করলে সারা বছরে এদের জবকার্ড প্রতি ১৪০০ টাকার বেশি জুটবে না। আইনি নিশ্চয়তা ১০০ দিনের যদিও আর্থিক সংস্থান ৭ দিনের।
সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়নের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক অমিয় পাত্র বলেন, ‘ভারতে কৃষির কাজ কমে গেছে। কারণ নানা ভাবে কৃষকের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে বিজেপি সরকার। কৃষক তার চাষ করা ফসলের দাম পাচ্ছে না। বাড়ছে রাসায়নিক সারের দাম, ফলে কৃষি কাজে আগ্রহও কমছে সাধারণ মানুষের। চক্রান্ত করে কৃষক খেতমজুরদের শোষণ চালাচ্ছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার’।
সর্বভারতীয় সম্মেলনের আগে চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে এখন শরৎ সদনে।
Comments :0