আসামে বাল্য বিবাহ রুখতে গত ২৩ জানুয়ারি বিশেষ অভিযানের ডাক দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার। আর তা নিয়েই ফের শুরু হল এক সামাজিক অস্থিরতা। ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১৪-১৮ বছরের নিচে মেয়েদের বিয়ে করায় ইতিমধ্যে প্রায় ২০০০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আসাম পুলিশ। এদের অধিকাংশই বিবাহিত, ফলে মাথায় হাত পড়েছে পরিবারগুলোর। সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শনিবার রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাল বহু মহিলা। এদের প্রত্যেকের স্বামীকেই পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। অধিকাংশ পরিবারেই হয়তো উপার্জন করেন শুধু একজন আর তাকেই জেলে নিয়ে যাওয়ায় কার্যত ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন সেই সব মহিলারা। এদের মধ্যে অধিকাংশ মহিলাদেরই সন্তান আছে আর নইলে অন্তঃসত্বা। আন্দোলনকারী মহিলারা জানালেন তারা কি করবেন বা কোথায় যাবেন কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না। তাঁদের সন্তানের ভবিষ্যতই বা কি হবে তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন।
আন্দোলনকারী মহিলাদের আরও দাবি শুধু পুরষ কেন কেন বাল্য বিবাহে তো মেয়েরাও জড়িত আছে তাহলে মহিলাদেরও ধরা হোক। বাল্যবিবাহ মামলায় ৩ ফেব্রুয়ারি থেক ধরপাকর অভিযান শুরু করেছে আসাম পুলিশ, চলবে টানা ছয়দিন। শুক্রবার পর্যন্ত ১৮০০ জন গ্রেপ্তার হলেও প্রায় ৮,০০০ জনে বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে অভিযোগ জমা পড়েছে। ৫১ জন পুরোহিত ও কাজিকেও গ্রেপ্তার করেছে বলে খবর।
বাল্য বিবাহ একটি সামাজিক ব্যাধি কিন্তু যে উপায়ে বিজেপি সরকার এই সমস্যার মোকাবিলা করতে চাইছে তা সঠিক নয় বলে শুক্রবারই গণশক্তি ডিজিটালকে জানিয়েছিলেন আসামের সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক সুপ্রকাশ তালুকদার। তিনি বলেছিলেন ‘ইতিমধ্যে যারা বিয়ে করে ফেলেছে তাদের ধরে নিয়ে যাওয়ায় একটা সামজিক অস্থিরতা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে বাড়ির পুরুষরাই যেহেতু রোজগেরে ফলে পরিবারগুলো একটা দারুন সমস্যার মুখে পড়বে। সন্তান নিয়ে মায়েরা কোথায় যাবেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে এমনকি শিশুগুলোর ভবিষ্যতও নিয়েও প্রশ্ন উঠবে। তিনি বলেছিলেন সরকার বরং আর কেউ যেন বাল্য বিবাহ না করে বা না দেন সেই দিকে জোর দিক। বিবাহিতদের ধরে সমস্যার খুব একটা সমাধান হবে না, উল্টে সামাজিক অস্থিরতা বাড়বে।’
Comments :0