DRAMA MRITASHOUCH

‘মৃতাশৌচ’: মঞ্চে জীবন্ত সামাজিক নিপীড়নের খতিয়ান

বিশেষ বিভাগ

প্রান্তিক এবং সামাজিক ভাবে নিপীড়ত অংশের যন্ত্রণা উঠে এল থিয়েটারের মঞ্চে। রাসবিহারীর নাট্যদল সাংকেতিকের ‘মৃতাশৌচ’ নাটকের মধ্যে দিয়ে ফুটে উঠল একটি প্রেক্ষাপট। থিয়েটারকে বলা হয় সমাজের আয়না। সেই আয়নাতেই অনবদ্য এক বার্তা।  
গত রবিবার তপন থিয়েটারে মঞ্চস্থ হয় এই নাটকটি। রাজস্থানের কালবেলিয়া জনগোষ্ঠীর দুই মহিলার জীবনের নানা মুহূর্ত ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই নাটকের মধ্য দিয়ে। কতটা কঠিন এবং কঠিন সময়কে সঙ্গী করে অতিবাহিত হয় তাঁদের জীবনযাত্রা, তার উদাহরণ এই নাটক। চারপাশের অর্থনৈতিক এবং সামাজিক পরিকাঠামোর মধ্যে দাঁড়িয়ে, দুই নির্যাতিতা মহিলার অস্তিত্ব সংকটের কথা বোঝাতে চেয়েছেন নির্দেশক। তাঁদের জীবনযন্ত্রণা এবং লড়াইয়ের গল্প উঠে এসেছে গোটা নাটকটির মধ্য দিয়ে। 
শশী গুহর নির্দেশনায় শিল্পীরা অসাধারণ একটি উপস্থাপনা তুলে ধরেছেন দর্শকদের সামনে। আলবেয়ার ক্যামুর ‘লা মালাতুন্ডে’ (The Misunderstanding)-এর অবলম্বনে প্রযোজিত এই নাটকটির মূল চরিত্রগুলির মধ্যে মাসা চরিত্রে অভিনয় করেছেন প্রিয়াঙ্কা গুহ। এছাড়াও মাতঙ্গীর চরিত্রে রত্না চক্রবর্তী, দিগ্বিজয়ের চরিত্রে সুমিত কুমার রায়, মাধুরীর চরিত্রে চিত্রাঙ্গদা সমাজদ্বার এবং বৃদ্ধের চরিত্রে অভিনয় করেছেন সৌমেন হালদার।
নির্দেশক শশী গুহ জানিয়েছেন, "এটি একটি সামাজিক বিদ্রোহ ও সংঘর্ষের নাটক। Existence equals to crisis, এই সংকট আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য সঙ্গী। বিশেষ করে প্রান্তিক এবং অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া সমাজে একটি বড় সমস্যা। আর তাই স্বাভাবিকভাবেই মানুষ নিজের মতো করে তার মোকাবিলা করে।" 
তিনি আরও বলেন, "আমাদের এই লড়াইটা পারিপার্শ্বিক এবং আর্থসামাজিক অবস্থানের ওপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল। নাটকটি রাজস্থানের পটভূমিতে নির্মিত। এক অনগ্রসর যাযাবর সম্প্রদায়ের কথা বলতে চেয়েছি আমরা। একটি পরিবারের জীবনকে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়েছে নাটকটি। উচ্চবর্ণের সমাজ দ্বারা লাঞ্ছিত এবং বহিষ্কৃত একটি পরিবার। বেঁচে থাকার লড়াই তাদের বাধ্য করে এক নির্মম অস্তিত্বের সম্মুখীন হতে।" 
দর্শকদের তরফ থেকেও ইতিবাচক বার্তাই এসে পৌঁছেছে নাট্যদলের সংগঠকদের কাছে।

Comments :0

Login to leave a comment