ভোট লুট, গননায় ব্যাপক কারচুপির বিরুদ্ধে গ্রাম বাংলার মানুষের ক্ষোভ আছড়ে পড়লো বর্ধমান শহরে। পুলিশ, প্রশাসন, তৃণমূলের গুন্ডারা এক ছাতার তলায় মানুষের রায়কে যেভাবে পদদলিত করেছে তাতে গ্রাম ক্ষুব্ধ, অপমানিত। তার বিরুদ্ধেই সোমবার ছিল পূর্ব বর্ধমান জেলার বামফ্রন্টের উদ্যোগে জেলা শাসকের কাছে ডেপুটেশন। ডি এম মানুষের জনরোষের আঁচ অনুভব করেই ভয় পেয়ে পালিয়ে যায়। হাজার হাজার প্রতিবাদী মানুষ এদিন বলেছেন, এত চুরি, লুট, কারচুপিতে ডি এম’র লজ্জা হলো। নবান্নের নির্দেশে তাঁর নেতৃত্বেই অবাধে ভোট লুট ও গননায় ডাকাতি হয়েছে এমনই অভিযোগ ছিল প্রতিবাদী মানুষের। সেই মানুষের ক্ষোভ আঁচ করেই জেলাশাসক পালিয়ে গেছে। এদিন পূর্ব বর্ধমান জেলা বামফ্রন্টের ডাকে বর্ধমান স্টেশন থেকে দুপুরে মিছিল শুরু হয়। শ্রাবনের যেমন তীব্র গরম তার চেয়ে গ্রামবাংলার মানুষের মেজাজ ছিল ভোট লুট ও গননায় কারচুপির বিরুদ্ধে আরো চড়া।
এদিন লাল ঝান্ডার এই মিছিলের আওয়াজ ছিল লুটের পঞ্চায়েত বাতিল করে জনগনের পঞ্চায়েত গঠন করতে হবে। লুটের ভোটের উপযুক্ত তদন্ত করে ভোট বাতিল করতে হবে, পুনরগননা ও দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়ে রাজপথ এদিন কাঁপিয়েছেন গ্রামের মানুষ। নিজেদের অপরাধ অনুমান করে পুলিশ ও প্রশাসন এদিন ভয়ে সিঁটিয়ে ছিল। বহু পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পুলিশ আশঙ্কা করেছিল গ্রামবাংলার প্রতিবাদী মানুষ তাঁদের প্রতি যে অন্যায় হয়েছে তার প্রতিশোধ নেবেন। কিন্তু এদিন পার্টি নেতা অমল হালদার বলে দেন আজ আমাদের এই কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হবে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে আইন অমান্য করবো যখন তখন পুলিশ কোন প্ররোচনা দিলে আমরা তৈরি হয়েই আসবো। জেলা শাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা অবশ্য পালিয়ে মুখই রক্ষা করলেও তাঁর দপ্তর ঘিরে ছিল কয়েকশো পুলিশ। স্টেশন থেকে পুলিশের বিশাল বাহিনী মিছিলকে অনুসরন করে। বর্ধমান শহরের মানুষ রাস্তার দুধারে দাঁড়িয়ে মিছিলকে স্বাগত জানিয়েছেন। মিছিল গোটা জিটিরোড জুড়েই জনপ্লাবনের রূপ নেয়। কার্জনগেট চত্বরে মিছিল যখন প্রবেশ করে তখনো চৌরাস্তার চারদিকেই মানুষের শুধু মাথা আর মাথা। কার্যত ভোট লুট ও গননায় কারচুপির বিরুদ্ধে মানুষের এই প্রতিবাদে গোটা শহর অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। সেখানে বক্তব্য রাখেন সিপিআই(এম)’র রাজ্য কমিটির সদস্য অমল হালদার, জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক সৈয়দ হোসেন, সিপিআই নেতা নন্দ কিশোর শর্মা, ফরোয়ার্ডব্লক নেতা ফজলুল হক, আর এস পি নেতা স্বপন মালিক ও মাক্সবাদী ফরোয়ার্ডব্লক নেতা শওকত আলি।
Comments :0